আয়না২৪ প্রতিনিধি
চাঁদপুরের ডাকাতিয়া নদী থেকে উদ্ধার করা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত এমভি একরাম নামের সেই জাহাজটি অবশেষে সংরক্ষণের উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে বিআইডাব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দর।
নৌপরিবহনমন্ত্রী শাহজাহান খান এমপির নির্দেশে রবিবার বিকেলে ওই জাহাজটি পরিদর্শন করেছেন বিআইডাব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের কর্মকর্তারা। এর আগে গত বৃহস্পতিবার একটি চক্র ওই জাহাজটি কেটে বিক্রির চেষ্টার সময় খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জাহাজ কাটা বন্ধ করে দেয়।
জানা গেছে, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গোলাবারুদ বহনকারী এমভি একরাম কার্গো জাহাজটি মুক্তিযোদ্ধারা চাঁদপুরের ডাকাতিয়া নদীতে ডুবিয়ে দেন। জাহাজটি ১৯৬৫ সালে নেদারল্যান্ডসে (হল্যান্ড) নির্মিত হয়। ১৯৬৫ সালের ১৯ মার্চ জাহাজটি রেজিস্ট্রেশন হয় এমভি একরাম নামে। ইউনাইটেড ট্রেডিং করপোরেশন ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল ব্যাংক অব পাকিস্তান জাহাজটির মালিকানায় ছিল।
স্বাধীনতার পরে জাহাজটি বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংকের অধীনে চলে আসে। ২০০৮ সালের মাঝামাঝিতে বন্দরের সোনাকান্দা এলাকার মোক্তার হোসেন ডুবুরি বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক থেকে নিলামে কেনেন। এরপর ওই বছরের ১৪ অক্টোবর ডাকাতিয়া নদী থেকে জাহাজটি উদ্ধার করে পরদিন নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার সোনাকান্দায় শাহেনশাহর মালিকানাধীন ডকইয়ার্ডে এনে রাখেন।
পরে এ জাহাজটি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি হিসেবে সংরক্ষণের জন্য সারা দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে দাবি উঠলে ২০০৯ সালের ১৭ আগস্ট মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে জাহাজটি সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর থেকে জাহাজটি শাহেনশাহর ডকেই রক্ষিত থাকে।
বৃহস্পতিবার মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়দানকারী নূরে আলম ও জসিম নামে দুই ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত এমভি একরাম জাহাজটি কাটা শুরু করেন। এ ঘটনায় ডুবুরি মোক্তার থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে নূরে আলম জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জাহাজ কাটার নির্দেশ দিয়েছে। তাদের কাছ থেকে নির্দেশের কাগজ চাইলে তারা কোনো কাগজ দেখাতে পারেনি বিধায় পুলিশ জাহাজ কাটা বন্ধ করে দেয়।
এ ব্যাপারে বন্দর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আব্দুল লতিফ জানিয়েছেন, এমভি একরাম মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি। এটা কাটা বা পরিবর্তন করা যাবে না।