বরগুনা প্রতিনিধি
বরগুনার তালতলী উপজেলার আঙ্গারপাড়া গ্রামে শুক্রবার রাতে ডাকাত সন্দেহে কামাল মৃধা (৩৫) নামের এক যুবকের দুই পা, এক হাত ভেঙে এবং একটি চোখে টেঁটা দিয়ে গুরুতর জখম করা হয়েছে। চিকিৎসকদের আশঙ্কা কামালের জখম হওয়া চোখটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এনিয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে।
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ জানায়, তালতলী উপজেলার আঙ্গারপাড়া গ্রামের সেলিম চৌকিদার ও তার প্রতিবেশী মোকলেস হাওলাদারের মধ্যে বন্দোবস্ত নেওয়া জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে।
সেলিম চৌকিদারের বড় ভাই আবদুল রব চৌকিদারের দাবি, মোকলেস হাওলাদারের বাড়িতে ঈদের একদিন পরে বরগুনার সদর উপজেলার ডৌয়াতলা গ্রামের ইউনুস মৃধার ছেলে কামাল মৃধা বেড়ানোর নাম করে আসে। শুক্রবার রাত ১ টার দিকে কামালের নেতৃত্বে ৭-৮ জন ডাকাত তাঁর (আবদুর রব) ছোট ভাই সেলিম চৌকিদারের ঘরে দরজা ভেঙে প্রবেশ করে। এরপর সেলিমকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে নগদ ৩ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যাওয়ার সময় সেলিমের ডাক চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে আসে এবং কামালকে ধরে ফেলে। এরপর স্থানীয় লোকজন কামালের হাত-পা ভেঙে ও বাম চোখ উপড়ে ফেলে।
তবে মোকলেস হাওলাদার এসব অভিযোগকে মিথ্যা ও বানোয়াট দাবি করে বলেন, কামাল মৃধা তাঁর ভাগনে। ঈদের একদিন পর কামাল তাঁর (মোকলেস) বাড়িতে বেড়াতে আসে। ঘটনার দিন রাতে বিরোধ মিমাংসার কথা বলে সেলিম চৌকিদার তার ভাই মুনছুর চৌকিদার, ভাইয়ের ছেলে হাবিব চৌকিদার ও সাইদুল চৌকিদার তাঁর ভাগনে কামাল মৃধাকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর সেলিম চৌকিদারের বাড়ির পুকুর পাড়ে গোয়াল ঘরের সামনে নিয়ে ধারাল অস্ত্রদিয়ে কুপিয়ে দুপা ও বাম হাত ভেঙে দেয় এবং বাঁ চোখ ট্যাডা (দেশীয় অস্ত্র) মেরে উপড়ে ফেলে। এ ঘটনার সময় কামালের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হলে সেলিম চৌকিদারও সামান্য আহত হন।
তিনি জানান, কামালের ডাক-চিৎকার শুনে তাঁরা ও এলাকার লোকজন সেলিম চৌকিদারের বাড়ির পুকুরপাড়ে গিয়ে কামালকে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে সংকটজনক অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে আমতলী উপঝেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। পরে তার অবস্থার অবষতি হলে তাকে ওই রাতেই বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন।
তবে ওই গ্রামের অন্তত চার ব্যক্তি বলেছেন, ডাকাতির ঘটনা তারা কেউই শোনেননি এবং কামাল মৃধা নামে ওই ব্যক্তিকে এলাকার কেউ গণপিটুনি বা মারধর করেননি। চৌকিদার বাড়ির লোকজনের ডাকাডাকি শুনে তারা গিয়ে দেখেন ওই ব্যক্তি গুরুতর আহত অবস্থায় পুকুরপাড়ে পড়ে আছেন।
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমলেশ চন্দ্র হালদার জানান, দুই পরিবারের মধ্যে জমিজমা নিয়ে বিরোধ ও মামলা রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে ডাকাতির ঘটনা সাজানো। এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ মামলা করেনি। মামলা হলে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।