আয়না ২৪ প্রতিনিধি, কলাপাড়া
দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশনের নির্মাণ কাজ সমাপ্তির পথে। প্রকল্পটি পটুয়াখালী জেলার কুয়াকাটার মাইটভাঙ্গা এলাকায় নির্মাণাধীন। ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকে এ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করবে। এ স্টেশনের মাধ্যমে ১ হাজার ৫০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ সুবিধাসহ নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেটে সংযুক্ত হবে গোটা দেশ।
কক্সবাজারে প্রথম স্থাপিত সাবমেরিন স্টেশনের চেয়ে আট গুণ ক্ষমতাসম্পন্ন হবে নির্মাণাধীন সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশনটি। এ প্রকল্পটি চালু হলে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন নেটওয়ার্ক দেশের চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত ব্যান্ডউইথ রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হবে।
দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্টেশন চালু হলে ইন্টারনেট ব্যবহারে গতি কয়েক গুণ বেড়ে যাবে। শুধু ইন্টারনেট নয়, এটি চালু হলে তথ্য প্রযুক্তিগত বিশ্বের সঙ্গে দেশের একটি নিবিড় বন্ধন তৈরি হবে। পাশাপাশি টেলিযোগাযোগ খাতে একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে। ল্যান্ডিং স্টেশনের সংযুক্তির মাধ্যমে ডাটার পরিধি বৃদ্ধি এবং দেশের তথ্য প্রযুক্তির চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এর সরবরাহ বৃদ্ধি করা হবে এবং সরকার এ খাতে অতিরিক্ত রাজস্ব আদায়ের সুযোগ পাবে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানায়, কেবল দ্বিতীয় প্রকল্প দিয়েই পুরো দেশে ইন্টারনেট সেবা পাওয়া সম্ভব।
সাবমেরিন ক্যাবল টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রকল্প পরিচালক পারভেজ মেনন আশরাফ মুঠো ফোনে জানান, বর্তমানে বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৫ কোটি। এ সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে কক্সবাজারে একটি মাত্র সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিংয়ের মাধ্যমে দেশে ইন্টারনেট সরবরাহ করা হচ্ছে। কিন্ত এ সাবমেরিন স্টেশনটির ক্যাবল লাইন কাটা পড়লে বিএসসিসিএলের কাছে নেটওয়ার্ক সরবরাহের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় গ্রাহকরা দুর্ভোগের শিকার হন। ফলে কুয়াকাটায় দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশনের সংযোগ স্থাপন করতে যাচ্ছে বিএসসিসিএল। ফলে দ্রুতগতির নিরবচ্ছিন্ন নেটওয়ার্কে ইন্টারনেটসহ নানা সেবা পাবেন গ্রাহকরা।
তিনি বলেন, কুয়াকাটার লতাচাপলি ইউনিয়নের আমখোলা গ্রামে ২০১৩ সালের শেষের দিকে ১০ একর জমির ওপর ৬৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে কাজ শুরু হয় দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশনের। প্রকল্পের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ইতিমধ্যে সাগরের নিচ দিয়ে ফ্রান্স থেকে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমার হয়ে বাংলাদেশ পর্যন্ত ২৫ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ ক্যাবল লাইনের সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। ইউরোপ থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে আসা সঞ্চালন লাইন সংযুক্তির জন্য ল্যান্ডিং স্টেশন স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কুয়াকাটার স্টেশন থেকে মাত্র সাড়ে ৯ কিলোমিটার দূরত্বে উপকূলের কাছাকাছি বঙ্গোপসাগরে আসা লাইনটির সংযোগ স্থাপনের কাজ শেষ করেই চালু করা হবে দ্বিতীয় সাবমেরিন স্টেশনটি। কারণ বর্ষা মৌসুমে ক্যাবল সংযোগের চূড়ান্ত কাজ শুরু করার পর বৈরী আবহাওয়ার কারণে তা বন্ধ রাখা হয়। এ প্রকল্প নভেম্বর মাসের শেষের দিকে সম্পন্ন করা হবে।