বরগুনা প্রতিনিধি
বরগুনার তালতলী উপজেলার চরপাড়া গ্রামের রেখা রাণী (২৮) নামের এক প্রসূতি চারটি কন্যা সন্তানের প্রসব করেছেন। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তিনি বাড়িতে বসে এসব সন্তান প্রসব করার পর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে আজ শুক্রবার সকালে চার সন্তানসহ তাঁকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তবে হাসপাতালে ভর্তি করার দুই ঘন্টা পর শুক্রবার সকাল ১০ টার দিকে তিনটি বাচ্চা মারা যায়। এরপর দুপুর সাড়ে ৩ টার দিকে অপর বাচ্চাটিও মারা যায়। তবে প্রসূতি রেখা রাণী সুস্থ আছেন।
পারিবারিব সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সালে তালতলী উপজেলার চরপাড়া গ্রামের বিকাশ মিস্ত্রিরির সঙ্গে বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর গ্রামের অনিল মিস্ত্রিরির মেয়ে রেখা রাণীর বিয়ে হয়। গত বছর ডিসেম্বর মাসে বিকাশের স্ত্রী রেখা সন্তান সম্ভাবা হন।
সন্তান সম্ভাবা হওয়ার পর বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আকরব হোসেন , বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের গাইনি বিভাগের অপর আরেক চিকিৎসক সেলিনা পারভীনসহ কয়েকজন চিকিৎসককে দেখান। ওই চিকিৎসকেরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেন রেখা রাণীর গর্ভে তিনটি সন্তান রয়েছে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পরিচর্যা ও নিয়মিত চিকিৎসা নেন তিনি। চিকিৎসকেরা রেখার সন্তান প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ র্নিধারণ করেন আগামী ১৫ আগষ্ট।
কিন্তু গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে রেখা রাণী বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রাত ৩ টার দিকে এক এক করে চারটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন। এ সময় প্রসূতি ও সদ্য প্রসূত বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে পড়লে শুক্রবার সকাল ৮ টার দিকে তাঁদের বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়।
ওই হাসপাতালে ভর্তি করার পর সকাল ১০ টার দিকে একে একে তিনটি বাচ্চা মারা যায়। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে মারা যায় অপর বাচ্চাটি।
রেখার বড় ভাই সুবাস মিস্ত্রি বলেন, আমার বোন ও তাঁর চার সদ্যপ্রসূত বাচ্চাকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করার পর সোহরাব হোসেন নামে একজন চিকিৎসক এসে এক নজর দেখে যান। এরপর কোনো চিকিৎসক আর আসেননি এবং খোঁজও নেননি।এমনকি ওয়ার্ডের কর্তব্যরত সেবিকারাও ঠিকমত সেবাও দেননি। বরং তাঁরা আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছেন। এজন্য বিকেল চার টার দিকে বাধ্য হয়ে আমার বোনের নাম কাটিয়ে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে এনে ভর্তি করেছি।’
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক মো. সোহরাব হোসেন বলেন,যথা সময়ে বাচ্চাগুলো প্রসব না করায় পরিপূর্ণতা পায়নি, এজন্য এসব বাচ্চাকে বাচাঁনো সম্ভব হয়নি। বাচ্চাগুলো ২০০ থেকে ৪০০ গ্রাম ওজন নিয়ে ভূমিষ্ট হয়েছিল।’