ফের রক্তাক্ত হল লন্ডন, নিহত ৬

Spread the love
আয়না২৪ ডেস্ক
ফের রক্তাক্ত হল  লন্ডন। শনিবার রাতে লন্ডনে পৃথক সন্ত্রাসী হামলায়  ছয়জন নিহত হয়েছেন। সেন্ট্রাল লন্ডনের ব্যস্ততম লন্ডন ব্রিজ এলাকায়  রাত ১০ টার দিকে দ্রুতগতির একটি চলন্ত গাড়ি পথচারীদের ওপর হামলা চালায়। এতে বেশকয়েকজন পথচারী হতাহত হয়েছে। 
 
নিহতের মধ্যে ঘটনাস্থলেই তিনজন সন্ত্রাসীর গুলিতে নিহত হয়েছেন। ছুরি দিয়ে সন্ত্রাসীরা আক্রমণ করে বলে খবর প্রকাশ করেছে সিএনএন। 
 
একই সময়ে ব্রিজ সংলগ্ন একটি বরা (Borough)মার্কেট এলাকায় পথচারীদের উপর ছুরিকাঘাত  করা হয়। এতে অন্তত একজন নিহত হয়েছে বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
 
পুলিশ জানিয়েছে যে, তারা তৃতীয় একটি ঘটনার কথা জানতে পেরেছে। তবে ওই ঘটনাটি লন্ডন ব্রিজের ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। ওই ঘটনাটি লন্ডন ব্রিজ থেকে অন্তত কয়েক কিলোমিটার দুরে ভৌক্সহল ব্রিজের কাছে ঘটেছে। এটি একটি ছিনতাইয়ের ঘটনা।
প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে, এ ঘটনাটি ‘ভয়াবহ’ বলে অভিহিত করেছেন।
 
বিরোধী দল লেবার পার্টির প্রধান জেরেমি করবিন, এ ঘটনাকে  ‘নিষ্ঠুর এবং ভয়ঙ্কর’ বলে উল্লেখ করেছেন। পুলিশ ওই এলাকার হোটেল থেকে পর্যটকদের নিরাপদে নিয়েছে এবং পুরো এলাকা  পুলিশ কর্ডন করে রেখেছে।
এদিকে যুক্তরাজ্যের লন্ডন ব্রিজ ও বারা এলাকায় সন্ত্রাসী হামলার সময় সেখানে উপস্থিত থাকা একজন ট্যাক্সিচালক সন্ত্রাসীদের আটক করার চেষ্টা করেছিলেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই ট্যাক্সিচালক সেই ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন।

আজ রোববার ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে ওই ট্যাক্সিচালকের বিবরণ প্রকাশ করা হয়।

লন্ডন ব্রিজ এলাকায় স্থানীয় সময় শনিবার রাতে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। এতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে সাতজনে পৌঁছেছে। পুলিশের গুলিতে সন্দেহভাজন তিন হামলাকারীও নিহত হয়েছে। ব্রিজের কাছাকাছি বারা মার্কেট এলাকায় সন্দেহভাজন কয়েকজন সন্ত্রাসী ছুরি নিয়ে সাধারণ লোকজনের ওপর হামলা চালায়।

ট্যাক্সিচালক বলেন, হুট করে ভ্যান নিয়ে কোত্থেকে কয়েকজন এসে প্রায় ১২ ইঞ্চি লম্বা ছুরি দিয়ে সাধারণ মানুষকে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকে। তিনি বলেন, ‘সে সময় আমি ভাবলাম দৌড়ে গিয়ে হামলাকারীদের পাল্টা আঘাত করব, তাঁদের নিচে ফেলে দেব। এই ভেবে গাড়ি ঘোরানো শুরু করি, হামলাকারী একজনের খুব কাছাকাছি চলে আসা মাত্র পুলিশের তিন সদস্য তাঁদের তাড়া করেন।’

ট্যাক্সিচালক আরও বলেন, ‘সবার উদ্দেশে আমি চিৎকার করে বলছিলাম, এই এলাকা ছেড়ে সবাই দ্রুত সরে যান। অন্য কোনো পথে চলে যান। কেউ কেউ এ কথা শুনে ঘটনাস্থল দ্রুত ত্যাগ করেছিলেন।’

ট্যাক্সিচালক আরও বলেন, ‘সেখানে মানুষ বিক্ষিপ্তভাবে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এমন সময় একটি ভ্যান এসে দাঁড়ায়। ভ্যান থেকে হামলাকারীরা দ্রুত নেমে ছুরি দিয়ে মানুষকে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকে।’

ঘটনাস্থলে থাকা জেমস ইয়েটস নামের এক ব্যক্তি বলেন, হামলার সময় পুলিশ কাটজেনজামার্স বিয়ারহলে ঢুকে পড়ে। সেখানে থাকা ক্রেতাদের দ্রুত মেঝেতে শুয়ে পড়তে বলে। সেখানে থাকা এক ব্যক্তির মুখমণ্ডল হামলাকারীর ছুরিকাঘাতে কেটে গিয়েছিল। স্থানীয় সময় রাত ১১টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

ঘটনার সময় অ্যালেক্স শেলাম নামের এক ব্যক্তি লন্ডন ব্রিজসংলগ্ন দ্য মাডলার্ক পানশালায় ছিলেন। তিনি বলেন, সেখানে রাত ১০টার দিকে ২০ বছরের এক তরুণী ঠিকমতো হাঁটতে পারছিলেন না। কারণ তাঁর মুখ ও নাক দিয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হচ্ছিল।

অ্যালেক্স শেলাম বলেন, ‘কিছুক্ষণ পরে আমরা জানতে পেরেছিলাম, হামলাকারীরা ওই তরুণীর গলা কাটার চেষ্টা করেছিলেন। ঘটনাস্থলে থাকা মানুষেরা ওই তরুণীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে সহায়তা করেছিল। এরপরেই পানশালাটি বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং পুলিশ সবাইকে সেই স্থান ত্যাগ করতে নির্দেশ দেয়।’