আমতলী প্রতিনিধি
বরগুনার পায়রা নদীতে কুমির আতঙ্কে জেলেরা দুদিন ধরে মাছ ধরা বন্ধ রেখেছে। গত শনিবার থেকে পায়রা নদীতে কুমির ভাসতে দেখেন।
প্রত্যক্ষদর্শী জেলেদের দাবি, তাঁরা অন্তত চারটি কুমির দেখেছেন।এসব কুমির দুটি মাছ ধরা নৌকায় হামলা করেছে। তবে কেউ হতাহত হয়নি।
নদীতে কুমির আসার খবর ছড়িয়ে পড়ায় এলাকার জেলে ও সাধারণ মানুষের মধ্যে কুমির আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এ খবরে আমতলী ও তালতলী দুই উপজেলার জেলেরা দুদিন ধরে নদীতে মাছ ধরতে নামছে না।
আমতলী ও তালতলী দুই উপজেলার পাশ দিয়ে প্রবাহিত পায়রা নদীটি বঙ্গোপপসাগরে গিয়ে মিশেছে।
গত শনিবার সকালে আমতলী উপজেলার পায়রা নদী-সংলগ্ন গাবতলী গ্রামের জেলে আলমগীর সিকদার জাল নিয়ে নদীতে মাছ শিকার করতে যান। এ সময় একটি কুমির তার নৌকায় হামলা করে। পরে আলমগীর ও তার সহযোগী জেলেরা জাল ফেলে রেখে দ্রুত নৌকা নিয়ে কিনারে আসেন। কিনারে এসে এই ঘটনা এলাকার অন্য জেলেদের কাছে জানালে প্রথমে কেউ বিশ্বাস করেনি।
পরে ওইদিন দুপুরে গাবতলী আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দা নাসিমা বেগম তার বোনের ছেলে রাব্বিকে নিয়ে নদীতে পানি আনতে গেলে নদীর কিনারে গিয়ে দেখেন সেখানে চারটি কুমির চরের সামান্য পানিতে ভাসছে।এই অবস্থায় নাসিমা ও তার বোনের ছেলে ভয়ে দ্রুত বাড়ি চলে আসে।
গত রোববার মৌপাড়ার গ্রামের কয়েকজন জেলে নদীতে জাল ফেলতে যায়। এসময় ওই জেলেদের একটি নৌকার কয়েকটি কুমির হানা দেয়। এতে অল্পের জন্য নৌকার জেলেরা রক্ষা পায়।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তালতলী উপজেলার চন্দনতলা গ্রামের জেলে হেলাল জাল ফেলতে গেলে বগি এলাকার পায়রা নদীর কিনারে গিয়ে দেখেন সেখানে অন্তত দুটি কুমির ভাসছে। পরে আতঙ্কে তিনি জাল-নৌকা ফেলে কিনারে উঠে স্থানীয় লোকজনকে খবর জানালে শতাধিক লোক নদীর পাড়ে ছুটে এসে ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন।
কয়েকদিন ধরে একের পর এক জেলে নৌকায় কুমিরের হানা দেওয়ার খবর জেলে ও সাধারণ মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে আমতলী ও তালতলী দুই উপজেলার জেলেদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ফলে গত দুদিন ধরে কুমিরের ভয়ে পায়রা নদীতে জেলেরা মাছ শিকার বন্ধ রেখেছেন।
তালতলী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শামীম রেজা বলেন, নদীতে কুমির এসেছে এ কথা শুনেছি। অনেক জেলে ফোন করে আমাকে বিষয়টি জানিয়েছে। আমরা ধারনা করছি, বঙ্গোপসাগর থেকে দলছুট হয়ে এসব কুমির শাখা নদীতে প্রবেশ করেছে। নদীতে আসা এসব কুমির যাতে জেলেরা সংঘবদ্ধ হয়ে মেরে না ফেলে সে জন্য জেলে ও সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে।’ তিনি বলেন,‘এসব কুমির সংরক্ষণের দায়িত্ব বনবিভাগের। আমরা বিষয়টি বন বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবহিত করেছি।