আয়না২৪ ডেস্ক
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট আদালত অবমাননার দায়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারক চিন্নাস্বামী স্বামীনাথন কারনানকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়ার পর লাপাত্তা রয়েছেন তিনি।
বিচারপতি সি এস কারনানকে গ্রেপ্তারের জন্য হন্যে হয়ে খুঁজছে কলকাতা পুলিশের ৫ সদস্যের একটি দল। আর গ্রেপ্তার এড়াতে কারনান দেশ ছেড়ে লুকিয়ে আছেন বলে দাবি করেছেন তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং আইন উপদেষ্টা ডব্লিউ পিটার রমেশ কুমার।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে কারনান বৃহস্পতিবার ভোরেই সীমান্ত পেরিয়ে প্রতিবেশী দেশ নেপাল বা বাংলাদেশে চলে গেছেন বলে জানান এই সহযোগী। সড়কপথেই দেশ ছেড়েছেন তিনি। ভারতের প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জির সঙ্গে দেখা করার অনুমতি পেলেই কেবল তিনি দেশে ফিরবেন। তবে কীভাবে কোন পথে কারনান দেশ ছেড়ে গেছেন সে সম্পর্কে আর কিছু জানাতে রাজি হননি রমেশ কুমার।
শীর্ষ আদালতের নির্দেশ আসার পর পশ্চিমবঙ্গের ডি জি হোমগার্ড রাজ কানোজিয়ার নেতৃত্বে একটি বিশেষ পুলিশ দল বুধবার কারনানকে গ্রেপ্তার করতে চেন্নাইয়ে পৌঁছায়। চেন্নাই পুলিশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ দলটি বৈঠকও করে।
কিন্তু এখনও পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায় নি বলে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের এক শীর্ষকর্তা জানিয়েছেন।
সূত্রগুলো বলছে, চেন্নাইতে পৌঁছে কারনান সেখানকার একটি সরকারি অতিথি নিবাসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ করছিলেন। সেই সময়েই নির্দেশ পৌঁছায় যে তার বক্তব্য সংবাদ মাধ্যমে প্রচারের ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়েছে।
ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানাচ্ছে যে পার্শ্ববর্তী অন্ধ্র প্রদেশের একটি মন্দিরে পুজো দিতে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। পুলিশ ওই মন্দিরেও খোঁজ লাগায়। কিন্তু পাওয়া যায় নি দণ্ডপ্রাপ্ত ওই বিচারপতিকে। তাঁর আইনজীবীদের সঙ্গেও কথা বলেছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, যে গাড়িটি নিয়ে তিনি চেন্নাই ছেড়েছেন তাঁর সরকারি চালকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে তাঁরা।
বিচারপতি কারনানের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সুপ্রিম কোর্টের এক নির্দেশের পরেই নজিরবিহীন পরিস্থিতি তৈরি হয় ভারতের বিচার বিভাগে। ডাক্তারি পরীক্ষা নাকচ করে বিচারপতি কারনান সুপ্রিম কোর্টসহ বিভিন্ন আদালতের ২০ জন বিচারকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে।
এরপরেই তাঁর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করে। এরপর একাধিকবার কারনানকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও তিনি উপস্থিত না হওয়ায় জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয় তাঁর বিরুদ্ধে। খবর বিবিসি বাংলা।