আয়না২৪ ডেস্ক
পৃথিবীতে সব কিছুরই একটা নির্দিষ্ট সময় রয়েছে কেবলমাত্র একটা জিনিস ছাড়া সেটি হলো মৃত্যু। কিন্তু জীবনের চরমতম এই পরিণতি কাকে কখন আলিঙ্গন করে তা বলা অসম্ভব। লন্ডনের বাসিন্দা ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীও ভাবতে পারেনি এই সুন্দর পৃথিবীতে মাত্র কয়েক বছরই তার আয়ু ছিল। গত বছরের অগস্টে তার ক্যানসার ধরা পড়ে একদম শেষ পর্যায়ে গিয়ে। অনেক চিকিৎসার পরেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। গত সেপ্টেম্বর মাসেই মারণরোগে চিরকালের মতো পৃথিবী ছেড়ে চলে যায় ওই কিশোরী।
কিন্তু বয়স অল্প হলেও সে বুঝতে পেরেছিল যে তার দিন ফুরিয়ে আসছে। এত অল্প বয়সে পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে, একথা মনে পড়তেই ভয় তাকেেআচ্ছন্ন করত। তবে এর চেয়েও বেশি তার ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তাকে প্রথা মেনে মাটির নিচে কবর দেওয়া হবে, সেটা ভেবে। ঠিক এমন সময় একটি ওয়েবসাইটে ক্রায়োপ্রিসারভেশনের কথা জানতে পারে সে। মাটির তলায় চাপা পড়ার থেকে তরল নাইট্রোজেনে ভেসে থাকাটা তার কাছে অনেক কম ভয়ের মনে হয়। সে ভাবে, তরল নাইট্রোজেনে ভেসে থাকলে আরও একবার ফিরে আসার সুযোগ থাকছে তার সামনে।
কিশোরীর বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ ঘটেছিল পূর্বেই। সে মায়ের সঙ্গে থাকত এবং তার ইচ্ছা সে মাকে জানায়। মা-ও মেয়ের ইচ্ছেকে স্বীকৃতি দেন সম্পূর্ণরূপে। তিনি মেয়েকে বলেন, হাইকোর্টে বিচারপতির কাছে একটি চিঠি লিখতে। মায়ের পরামর্শে ওই কিশোরী বিচারপতি পিটার জ্যাকসন-এর কাছে একটি চিঠি পাঠায়। তাতে লেখা ছিল, ‘আমার বয়স মাত্র ১৪ বছর। আমি মরতে চলেছি। কিন্তু আমি মরতে চাই না। মাটির তলায় চাপা পড়তেও চাই না। ১০০ বছর পরে হলেও ক্রায়োপ্রিজারভেশন আমাকে এক নতুন জীবন দিতে পারে। আমি অনেক বছর বাঁচতে চাই। এই সুযোগটা আমাকে দেওয়া হোক। এটাই আমার শেষ ইচ্ছা।’
বিচারপতি কিশোরীর মরণোত্তর দেহ সংরক্ষণের নির্দেশ দেন। এবং এও জানান, তার দেহের উপরে কেবলমাত্র তার মায়ের অধিকার থাকবে। তিনি চাইলেই এর সৎকার করতে পারেন যখন ইচ্ছে। আর নয়তো এমনই তরল নাইট্রোজনে অবিকৃত অবস্থায় বছরের পর বছর রয়ে যাবে কিশোরীর দেহ। বিচারপতির নির্দেশ আসার আগেই অবশ্য ওই কিশোরী পৃথিবী ছেড়ে চিরশান্তির উদ্দেশে পাড়ি জমিয়েছে।