• Home  / 
  • বিশ্ব  / 

সিরিয়ায় রাসায়নিক গ্যাস হামলাঃ এতো শিশু মৃত্যুর দায় কার?

এপ্রিল ৭, ২০১৭
Spread the love

আয়না২৪ ডেস্ক

সাদা কাফনে মোড়া নিথর দুটি শিশুর দেহ। বুকে জাপটে ধরে রেখেছেন বাবা। আর ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠছেন। আয়লান কুর্দির পর আহমেদ আর আইয়ার এই ছবি আরও একবার গোটা দুনিয়ার কাছে তুলে ধরল সিরিয়াকে। সিরিয়ার সন্ত্রাসকে। দেখে শিউরে উঠছে  সামাজিক  যোগাযোগ মাধ্যমগুলোও। রাসায়নিক গ্যাস হামলায় মারা গেছে ওই দুই  শিশু।

ভয়াবহ হামলার থেকে কোনো  রকমে বেঁচে যাওয়া ৭ বছরের বালিকা বানা আলাবেদ জানায়, সে এই ঘটনায় আতঙ্কিত। কিন্তু বিশ্বের কেউই এখনও পর্যন্ত কিছু করল না দেখে সে হতাশ। তবে তার আশা, সিরিয়ার শিশুরা এই দুঃখজনক ঘটনার পরেও স্কুলে যাবে, খেলা করবে, আনন্দে বড় হবে।
এরই মধ্যে জাতিসংঘের তদন্ত সম্পর্কে একাধিক শর্ত আরোপ করেছে সিরিয় সরকার।

 সিরিয়ার  পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়ালিদ মুয়ালেম বিবিসিকে দেওয়া  এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ওই তদন্ত দলকে অরাজনৈতিক হতে হবে,  বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি রাখতে হবে এবং তদন্ত শুরু করতে হবে রাজধানী দামেস্ক থেকে। বিশ্বজুড়ে সন্দেহ দানা বাঁধলেও সিরীয়  মন্ত্রী এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন,  আকাশ থেকেই রাসায়নিক গ্যাস ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে ছয়টার দিকে  সিরিয়ার বিদ্রোহী অধ্যুষিত ইদলিব প্রদেশের খান শেখু শহরের আকাশে দেখা যায় যুদ্ধবিমান। অভিযোগ, সরকার বা রুশ সেনাদের  বিমান থেকেই ছড়িয়ে দেওয়া হয় সারিন ও ক্লোরিন জাতীয় গ্যাস। গন্ধ ও বর্ণহীন সারিন গ্যাস অজান্তেই সরাসরি স্নায়ুতন্ত্রকে বিকল করে  দিতে সক্ষম।

মনে করা হচ্ছে, বিষাক্ত সেই সারিনেই দমবন্ধ হয়ে মারা  গেছে ৮৬ জন। যাদের মধ্যে ২৭ জনই শিশু। এতে অজ্ঞান হয়ে যান কেউ কেউ। অসুস্থদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হোয়াইট হেলমেট নামে সিরিয়ার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা জানিয়েছে, আহতের চিকিৎসা চলছিল যে শিবিরে, সেখানেও বিমান হানা হয় কিছুক্ষণের মধ্যে। রাশিয়ার মদদপুষ্ট সিরিয়ার আসাদ সরকার অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। 
২০১৩ সালে ঘোউতায় সারিন গ্যাস হামলার পর আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যস্থতায় ১৩০০ টন বিষাক্ত রাসায়নিক অস্ত্র হস্তান্তরে রাজি হয় সিরিয়ার আসাদ সরকার। সিরিয়ায় মার্কিন সেনা জোটের অভিযান ঠেকাতে আন্তর্জাতিক নজরদারির অধীনে রায়ায়নিক অস্ত্র কর্মসূচি বন্ধ করতেও রাজি হয় দেশটি। সরকার এই চুক্তি মেনে চলছে কি না, তা জানতে তদন্ত করেছিল  জাতিসংঘের  ও রাসায়নিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

গত অক্টোবরে তাদের রিপোর্টে দেখা যায়, ২০১৪-২০১৫ সালের মধ্যে অন্তত তিন বার রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ করেছে দেশটির  সরকার। ২০১৫ সালে মাস্টার্ড গ্যাস ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছে ইসলামিক স্টেট। অশান্ত সিরিয়া থেকে পালায় আলোচিত শিশু আয়লান কুর্দির পরিবার। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে তুরস্ক থেকে পালানোর সময় ভূমধ্যসাগরে মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ে দেড় বছর বয়সী আয়লান। গ্রিসের সৈকতে তার নিথর দেহ ভেসে আসে। সৈকতে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা আয়লানের সেই ছবি নিয়ে ঝড়  উঠেছিল সমগ্র বিশ্বে।