আয়না২৪ ডেস্ক
গুলির আওয়াজেই তাঁর ঘুম ভাঙত। আর তাঁর হুঙ্কারে ঘুম ভেঙে যেত গোটা গ্রামের মানেুষের। এককালে চম্বলের ত্রাস, ১৭ জনকে খুনের মামলায় অভিযুক্ত মালখান সিংহ। তাকে বৃহস্পতিবার দেখা যায় টাকা বদলানোর লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন জনতার মাঝে। গ্বালিয়রে ব্যাংকের বাইরে সাধারণের সঙ্গে একই লাইনে দাঁড়িয়ে পুরনো নোট বদলান তিনি। যার নাম শুনেই এককালে ভয়ে কাঁপত গোটা এলাকা, এ দিন সেই ডাকাতের সঙ্গেই আড্ডা দিলেন উপস্থিত জনতা!
মোদীর পুরনো ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের পর সকলেরই নোট বদলানোর জন্য ব্যাংকমুখী হয়েছেন। সে কারণেই এ দিন এক কালের এই ডাকাতও লাইনে গিয়ে দাঁড়ান। অনেক বছর আগে ডাকাতি ছেড়ে দিলেও সাধারণ জনতার কাছে এখনও তিনি ডাকু মালখান বলেই পরিচিত। তিনিও জনতার থেকে খানিকটা দূরত্ব রেখেই চলেন । বাড়ির বাইরেও তাঁকে খুব একটা দেখা যায় না। এ দিন তাই তাঁকে লাইনে দাঁড়াতে দেখে বেশ তাজ্জবই হয়ে যান অন্যেরা। মালখান অবশ্য সকলকে চমকে দেন। বেশ খোস মেজাজেই আড্ডা জমিয়ে ফেলেন সকলের সঙ্গে।
এক সময়ে গোটা মধ্যপ্রদেশেই তিনি তাণ্ডব চালাতেন। তাঁর মাথায় সব মিলিয়ে ৯৪টি মামলা রয়েছে। তার মধ্যে ছিল ১৮টি ডাকাতি, ২৮টি অপহরণ, ১৯টি খুনের চেষ্টা এবং ১৭টি খুনের অভিযোগ। ১৯৭৬ সালে বিলাও গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধানকে গুলি করে খুন করতে যান মালখান। কিন্তু ব্যর্থ হন। তাঁর ছোড়া গুলিতে তাঁরই দলের এক জনের মৃত্যু হয়, গুরুতর জখম হয় আরও দু’জন। পুলিশের তাড়া খেয়ে উত্তরপ্রদেশ পালিয়ে গিয়েছিলেন একটা সময়ে। এরপর উত্তরপ্রদেশ এবং মধ্যপ্রদেশের সীমানা লাগোয়া বুন্দেলখণ্ডে তাঁর প্রভাব বিস্তারিত হয়। পরে ১৯৮৩ সালে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন সিংহের কাছে আত্মসমর্পন করে সাধারণ জীবনযাপনে ফিরে আসেন। এখন আর ডাকাতি নয়, চাষাবাদ করেই সংসার চালান তিনি। তাঁর জীবনী নিয়ে ইতিমধ্যে একটা বায়োপিকও তৈরি করছেন অভিনেতা-পরিচালক মুকেশ আর চৌকসে।