আয়না ২৪ ডেস্ক
একটা নতুন দিন। একটা নতুন টুইট।
সান ফ্রান্সিসকোর আপিল আদালতে তাঁর আর্জি খারিজ হয়ে যাওয়ার পরে সেই টুইটের রাস্তাই বেছে নিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আদালতকে হুমকি দিলেন— ‘‘আদালতেই দেখা হবে!’’
আদালত বলতে নিশ্চয় সুপ্রিম কোর্টের কথাই বলতে চেয়েছেন প্রেসিডেন্ট। কারণ সিয়াটল ফেডেরাল কোর্টের স্থগিতাদেশ রদের আর্জি জানিয়ে এ বার শুধু সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার রাস্তাটুকুই খোলা রয়েছে ট্রাম্পের সামনে। প্রেসিডেন্টের জারি করা ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় স্থগিতাদেশ এসেছিল সিয়াটল ফেডারেল কোর্টের তরফেই। যে স্থগিতাদেশ খারিজের আর্জি জানিয়ে আপিল আদালতে যায় মার্কিন জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট।
কিন্তু দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে বৃহস্পতিবার আপিল আদালত জানায়, যে সাতটি মুসলিম অধ্যুষিত দেশ থেকে আমেরিকায় ঢোকার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন ট্রাম্প, সেই ইরাক, ইরান, সিরিয়া, লিবিয়া, ইয়েমেন, সুদান বা সোমালিয়ার কোনও নাগরিক আমেরিকার মাটিতে কখনও সন্ত্রাসমূলক কার্যকলাপ চালিয়েছে, এমন প্রমাণ সরকার দিতে পারেনি। ফলে এই নিষেধাজ্ঞা যুক্তিহীন।
ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে প্রেসিডেন্ট যদি কোনও এগ্জিকিউটিভ নির্দেশ জারি করেন, তা হলে তার বিরুদ্ধে রায় দেওয়ার এক্তিয়ার দেশের কোনও আদালতেরই নেই। সেই দাবি উড়িয়ে দিয়ে এ দিন রায় ঘোষণার সময়ে আপিল আদালত জানায়, ‘‘এই দেশের গণতন্ত্র বজায় রাখার দায়িত্ব বিচারব্যবস্থার উপরেই ন্যস্ত করে গিয়েছিলেন দেশের আইনপ্রণেতারা।
তাই প্রেসিডেন্ট যদি ভেবে থাকেন, তাঁর নির্দেশিকা কেউ আটকাতে পারবে না, ভুল ভেবেছেন।’’ যা শুনেই ক্ষাপ্পা প্রেসিডেন্টের টুইট— ‘‘দেশের নিরাপত্তা নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন আপনারা! আদালতেই দেখা হবে।’’
সেই নির্বাচনী প্রচারের আমল থেকে টুইটকে জনসংযোগের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসেবে দেখে এসেছেন ট্রাম্প। নানা বেঁফাস মন্তব্য করে হরহামেশা ব্যঙ্গ-বিদ্রূপের মুখেও পড়েছেন। তাঁর আজকের টুইট নিয়েও টীকা-টিপ্পনীতে ভরে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। ‘আইসক্রিম মেশিন খারাপ? আদালতে দেখা হবে।’ ‘এত বৃষ্টি হচ্ছে কেন? আদালতে দেখা হবে।’ — এ ধরনের চুটকি ঘুরেছে ফেসবুক-টুইটারের দেওয়ালে দেওয়ালে। আর যাঁকে হারিয়ে হোয়াইট হাউস দখল করেছেন ট্রাম্প, সেই হিলারি ক্লিন্টন টুইটারে শুধু লিখেছেন— ‘৩-০’। আপিল আদালতের তিন বিচারপতি যে একবাক্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দাবি নস্যাৎ করে দিয়েছেন, তারই ইঙ্গিত হিলারির টুইট-টুকরোয়।
সিয়াটল ফেডেরাল কোর্টের স্থগিতাদেশ খারিজ করার জন্য এ বার যদি সুপ্রিম কোর্টে যান প্রেসিডেন্ট, তা হলে আট জন বিচারপতির বেঞ্চ সেই আবেদন খতিয়ে দেখবে। তখন ফলটা যাতে ৮-০ না হয়, সেটাই আপাতত প্রেসিডেন্টের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ।
এখনও তাই অভিবাসী ও শরণার্থীদের জন্য দরজা খোলাই রাখছে আমেরিকা। ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমেরিকা।