নতুন প্রজন্মের মডেল ও অভিনেত্রীদের মধ্যে সাফা কবিরের পরিচিতির বৃত্তটা যে অনেক বড়, সেটি তার ফেসবুক ফ্যান পেইজে চোখ রাখলেই বোঝা যায়। প্রায় তিন লক্ষ একুশ হাজার ফ্যান এরই মধ্যে জুটিয়ে ফেলেছেন। পেয়েছেন ফেসবুকের স্বীকৃতিও (পেইজ ভ্যারিফাইড)। মিস্টি হাসির এই মেয়েটি আলোর ফুলকি ছড়াতে শুরু করেছেন ছোটপর্দায়; কখনো মডেলিংয়ে কখনো অভিনয়ে।
ছোটবেলা থেকেই মিডিয়ার প্রতি আকর্ষণ ছিল সাফা কবিরের। শোবিজে তার স্বপ্নযাত্রা শুরু হয় বছর তিনেক আগে, রাহাত রহমানের নির্দেশনায় ‘প্রাণ পিনাট বার’-এর বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে। নজর কাড়েন আশফাক বিপুলের নির্দেশনায় এয়ারটেলের বিজ্ঞাপনের মডেল হয়ে। এই দুইটি বিজ্ঞাপন প্রচার হওয়ার পর তার আর পিছু ফিরতে হয়নি। দর্শক-নির্মাতাদের গ্রহণযোগ্যতা পেয়ে যান। অমিতাভ রেজার মতো খ্যাতিমান বিজ্ঞাপন-নির্মাতার ডাক পান।তার নির্দেশনায় ‘প্যারাসুট’-এর বিজ্ঞাপনে মডেল সাফা।
পাঁচ ফুট চার ইঞ্চি লম্বা এই মেয়েটির অভিনয়ে অভিষেক হয়ে আদনান আল রাজীব নির্মিত ‘এট এইটিন অলটাইম দৌঁড়ের উপর’ টেলিফিল্মের। আতিক জামান পরিচালিত ‘একা মেয়ে’ নাটকে অভিনয় করে প্রশংসিত হন। এরপর টিভি নাটকে তিনি নিয়মিত হয়ে যান। সাফা কবির অভিনীত নাটকগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ইউনিভারসিটি, ব্লাক ম্যাজিক, জোনাক পোকা, ইচ্ছে ঘুড়ি, ভালোবাসা ১০১, জোড়া শালিক, একটি গল্প হতে পারতো প্রভৃতি।পাশাপাশি এনটিভিতে ‘স্টাইল এন্ড ট্রেনড’ নামের একটি অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা করতেও তাকে দেখা গেছে।
সম্প্রতি এশিয়ান টিভিতে প্রচার শুরু হওয়া ধারাবাহিক নাটক ‘থার্ড জেনারেশন’-এ অভিনয় করছেন সাফা। গোলাম রাব্বানীর রচিত এবং জয়ন্ত রোজারিও পরিচালিত এ নাটকে তিনি এই প্রজন্মের এক রোমান্টিক মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করছেন।
মডেলিং নাকি অভিনয়, কোনটি প্রিয়? উত্তরে সাফা কবির বললেন, আসলে দুটি কাজ দুই রকম। বিজ্ঞাপনে মডেল হলে দীর্ঘ সময় দর্শকদের সামনে থাকা যায়। কারণ ভালো প্রডাক্টের বিজ্ঞাপন সব চ্যানেলে একাধিকবার প্রচার করা হয়ে থাকে। এতে পরিচিতির পরিসর বাড়ে। বিজ্ঞাপনে কাজ করতে ভালো লাগলেও আমার মূল কাজের জায়গাটা অভিনয়। ভালো কোনো চরিত্রে অভিনয় করে যখন দর্শকদের রেসপন্স পাই খুব ভালো লাগে। আমার পরিবারও অভিনয়ে বেশ উৎসাহ দেয়। অভিনয়টা আমি চালিয়ে যেতে চাই।
শুধু কী টিভি নাটকেই অভিনয় করবেন, নাকি সিনেমাতে কাজ করার ইচ্ছে আছে? জবাবে তিনি বলেন, অভিনয়ের সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্ম হলো সিনেমা। অভিনয়টা যেহেতু চালিয়ে যেতে চাই, তাই আগামীতে সুযোগ হলে সিনেমাতেও হয়তো অভিনয় করবো। তবে আমাদের দেশের গতানুগতিক বাণিজ্যিক ধারার সিনেমায় নয়, ব্যতিক্রম ধারার সিনেমায় কাজ করার ইচ্ছে আছে আমার।
সাফা কবিরের পারিবারিক নাম ‘আনাটনি কেলি’। ছোটবেলায় এই নামেই তাকে ডাকতন পরিবারের সবাই। কারণ কী? সাফা যখন জন্ম নেন, তখন তার বাবা হূমায়ুন কবির সবুজ ব্যবসার কাজে রাশিয়ায় ছিলেন। যে কারণে তার দাদা সাফা’র জন্য বেছে নেন রাশিয়ান নাম আনাটনি কেলি। এখন অবশ্য এই নামটি হারিয়ে গেছে।মিডিয়াতে তিনি সাফা কবির নামেই পরিচিত।
সাফা কবির পড়ছেন ঢাকার আমেরিকান ইন্টারন্যাশরন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির(এআইইউবি)বিবিএ বিবিএ-তে। গ্রামের বাড়ি বরিশালে হলেও পরিবারের সবার সঙ্গে ঢাকাতেই থাকেন।
সাফা কবিরের পছন্দের খাবার হল মাছ-ভাত. ভুনা খিচুড়ি, তেহারি অঅর পিৎজা। পছন্দের পোশাক জিনস আর টি-শার্ট। প্রিয় সঙ্গীতশিল্পী বাংলাদেশের তাহসান ও এলিটা এবং ভারতের অরজিত সিং। পছন্দের ছবির তালিকায় রয়েছে এ ওয়াক টু রিমেম্বার ও জিন্দেগি না মিলে দবারা। প্রিয় অভিনয়শিল্পীর তালিকায় রয়েছেন সুবর্ণা মুস্তাফা, তাহসান, তিশা আর ভারতের রণবীর সিং ও আলিয়া ভাট।