আয়না ২৪ ডেস্ক
বলতে গেলে অনেকটা ধমক দিয়েই অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর ফোন কেটে দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। খবরে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুলের মধ্যকার টেলিফোন আলাপের সময় উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের এক পর্যায়ে একরকম ধমকের সুরেই ফোন কেটে দিয়েছেন ট্রাম্প। ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, ট্রাম্পের এই আচরণকে বিশ্বনেতাদের সাথে তার এ পর্যন্ত সবচেয়ে বাজে বলে অভিহিত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, একটি শরণার্থী চুক্তি নিয়ে দু’নেতার মধ্যে টেলিফোনে তীব্র বাদানুবাদ হয়। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে চুক্তিটি করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী টার্নবুল। কিন্তু গত শনিবার তার সঙ্গে ফোনালাপকালে ট্রাম্পের বিরোধ বাধে এ চুক্তিকে কেন্দ্র করেই। পরে এক টুইটে চুক্তিটি পড়ে দেখবেন বলে জানালেও বৃহস্পতিবার ফের চুক্তির তীব্র সমালোচনার পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়াকে এর জন্য দোষারোপ করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করে তুলেছেন ট্রাম্প। দু’নেতার ফোনালাপ এক ঘণ্টা স্থায়ী হওয়ার কথা থাকলেও মাত্র ২৫ মিনিটের মাথায় আচমকা ফোন রেখে দেন ট্রাম্প।
এদিকে, দু’নেতার এ উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ে সংশয়ের মুখে পড়েছে শরণার্থী চুক্তি। কারণ, এ চুক্তি অনুযায়ী, অস্ট্রেলিয়া থেকে পাঠানো ১২৫০ শরণার্থীর যুক্তরাষ্ট্রে পুনর্বাসিত হওয়ার কথা রয়েছে। অস্ট্রেলিয়া এসব শরণার্থীকে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে তাদেরকে নাউরু ও পাপুয়া নিউ গিনির মত প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর উপকূলীয় আটককেন্দ্রে আটকে রেখেছে। যুক্তরাষ্ট্র তাদেরকে নিলে এর বিনিময়ে অস্ট্রেলিয়া এল সালভাদর, গুয়াতেমালা এবং হন্ডুরাসের শরণার্থীদেরকে পুনর্বাসন করবে।
উল্লেখ্য, ট্রাম্প গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রে শরণার্থী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি সাতটি মুসলিম প্রধান দেশের নাগরিকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার নির্বাহী আদেশ দেন। এরপর তার সঙ্গে ফোনালাপে শরণার্থী চুক্তিটির ভবিষ্যৎ কি সে ব্যাপারেই পরিষ্কার হতে চাইছিলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী। আর এতেই রেগে গিয়ে ওই প্রতিক্রিয়া দেখান ট্রাম্প। পরে ট্রাম্প এক ট্যুইটে চুক্তিটি পড়ে দেখবেন বলে জানালেও এর তীব্র সমালোচনা করে চুক্তিটিকে ‘নির্বোধ’ আখ্যা দেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার এক ট্যুইটে ট্রাম্প লেখেন, “আপনাদের বিশ্বাস হয়? অস্ট্রেলিয়া থেকে হাজার হাজার অবৈধ অভিবাসী নিতে রাজি হয়েছিল ওবামা প্রশাসন। কেন? এই নির্বোধ চুক্তিটি আমি পড়ে দেখব।”
ট্রাম্প এ চুক্তিকে ‘এ যাবতকালের সবচেয়ে বাজে চুক্তি’ আখ্যা দিয়ে অভিযোগ করে বলেন, অস্ট্রেলিয়া আগামী দিনের ‘বোস্টন বোমা হামলাকারীদেরকে’ যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর চেষ্টা করছে।
ট্রাম্প প্রশাসন অবশ্য বলছে, তারা অস্ট্রেলিয়া থেকে ১২৫০ শরণার্থী নেবে। তবে তাদেরকে নেওয়া হবে চুলচেরা যাচাই-বাছাইয়ের মধ্য দিয়ে।
এদিকে, হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র সিয়ান স্পেইসার এবং অস্ট্রেলিয়ার মার্কিন দূতাবাসও বলেছে, ট্রাম্প চুক্তিটি বহাল রাখবেন। তাছাড়া, ট্রাম্পের কয়েকটি ট্যুইটের পর কয়েকটি গণমাধ্যমকে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন, তার বিশ্বাস চুক্তিটি ঠিক থাকবে।