আয়না ২৪ প্রতিনিধি
সিলেটে ছাত্রলীগ নেতার হামলায় আহত হয়ে সাভার সিআরপিতে চিকিৎসাধীন কলেজছাত্রী খাদিজা বেগম নার্গিসের ভাইয়ের সঙ্গে বেড়াতে গেলেন জাতীয় স্মৃতিসৌধে। ধারাপলভ অস্ত্রের উপর্যুপরি কোপে আহত হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার লড়াইয়ে থাকা খাদিজাকে মানসিকভাবে দৃঢ় রাখতেই সোমবার বিকেলে তাকে স্মৃতিসৌধে নিয়ে যান বলে জানিয়েছেন তার ভাই শরনান হক শাহীন। সাভারে পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে (সিআরপি) চিকিৎসাধীন খাদিজাকে নিয়ে ঘুরে আসার পর দুটি ছবি ফেইসবুকে প্রকাশ করেন তিনি।
শাহীন জানান, মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এলেও এখনো নৃশংসতার স্মৃতি মনে হলে বিমর্ষ হয়ে পড়েন তার বোন। আগের মতো স্বাভাবিক জীবনে ফেরা নিয়ে শঙ্কায় ভোগেন। আমরা পরিবারের সদস্যরা তাকে সময় দিয়ে হাসিখুশি রাখার চেষ্টা করি। মন খারাপ হলে এতদিন সাভার সিআরপির আশপাশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাতে নিয়ে যেতাম। কাল (সোমবার) ঘণ্টাখানেক সময় নিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়েছিলাম।
খাদিজাকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার পর রাতে ‘খাদিজার সর্বশেষ অবস্থা’ শিরোনামে এক ফেইসবুকপোস্টও দেন শাহীন; যাতে সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের এই ছাত্রী ‘স্বাভাবিক জীবনে’ ফিরে যেতে লড়াই করছে বলে জানান তিনি।
ঘটনার পর রাজধানীতে এনে প্রথম দিকে খাদিজাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। তিন দফা অস্ত্রোপচার হয়। অবস্থার উন্নতি হওয়ায় গত ১৩ অক্টোবর তার লাইফ সাপোর্ট খোলা হয়।
স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ২৮ নভেম্বর খাদিজাকে সাভারের সিআরপিতে নেয়া হয়, সেখানে তাকে প্রতিদিন ফিজিওথেরাপি দেয়া হচ্ছে বলে ওই ফেইসবুক পোস্টে জানিয়েছেন তার ভাই।
খাদিজার শারীরিক অবস্থার সর্বশেষ পরিস্থিতি জানিয়ে ফেইসবুক পোস্টে শাহীন আরো লেখেন, বাম পায়ে কোপ পড়ায় হাঁটার সময় বাম পা বেঁকে যাচ্ছে। বাম হাতের তালুতে এবং আঙ্গুলে অনেকগুলো কোপে প্রধান নার্ভ এবং ব্লাড ভেসেল মারাত্মকভাবে ইনজুরড হয়েছে, বাম হাতে সার্জারি করার পরও এখনো আঙ্গুল সোজা হচ্ছে না।
তার স্বাভাবিক চলাচল ফিরিয়ে আনতে সাভারের সিআরপিতে প্রতিদিন ফিজিওথেরাপি দেয়ার কথা জানিয়ে শাহীন লিখেছেন, শারীরিকভাবে আগের চেয়ে অনেক উন্নতি হলেও মানসিকভাবে অনেক বিপর্যস্ত। নৃসংশতার কথা মনে হলেই ভয় পেয়ে যাচ্ছে, নিজের এই অবস্থা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না।
খাদিজার সম্পূর্ণ সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া কামনার পাশাপাশি দ্রুত বদরুলের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।