আইন প্রণয়ন ও ই-ভোটিংয়ের প্রস্তাব আ. লীগের

জানুয়ারি ১১, ২০১৭
Spread the love

আয়না২৪ প্রতিবেদন

নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে এখনই একটি আইন অথবা অধ্যাদেশ জারি ও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ই-ভোটিং প্রবর্তনসহ রাষ্ট্রপতিকে চার দফা প্রস্তাব দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ।

আজ বুধবার সন্ধ্যায় ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপের বিষয়ে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

এর আগে বিকেল চারটায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ১৯ সদস্যের প্রতিনিধিদলের সংলাপ শেষ হয়। বিকেল চারটায় বঙ্গভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদল প্রবেশ করে। বৈঠক চলে বিকেল ৪টা ৫ মিনিট থেকে বিকেল ৫টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত।

নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়ের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, রাষ্ট্রপতিকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, সময় স্বল্পতার কারণে আগামী নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে তা সম্ভব না হলে পরবর্তী নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের সময় যেন এর বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়। কাদের বলেন, সংবিধানের নির্দেশনার আলোকে এখন থেকেই সে উদ্যোগ গ্রহণ করার প্রক্রিয়া শুরু করা যায়।

ই-ভোটিংয়ের প্রস্তাব দেওয়ার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য বর্তমানে বিরাজমান সব বিধি-বিধানের সঙ্গে জনমানুষের ভোটাধিকার অধিকতর সুনিশ্চিত করার স্বার্থে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ই-ভোটিং প্রবর্তন করতে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের সংবিধান ও বিরাজমান সব আইনকানুনের ওপর শ্রদ্ধাশীল। রাষ্ট্রপতির সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের সুগভীর প্রজ্ঞা ও সুবিবেচনার প্রতি আওয়ামী লীগের পরিপূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে রাষ্ট্রপতি গৃহীত যে কোনো ন্যায়সংগত উদ্যোগের প্রতি এই দলের পরিপূর্ণ সমর্থন থাকবে।

এর আগে বৈঠক শেষে বঙ্গভবন থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় ওবায়দুল কাদের জানান, ‘রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।’ এ পর্যন্ত আওয়ামী লীগসহ ২৩টি রাজনৈতিক দল রাষ্ট্রপতির সংলাপে আমন্ত্রণ পেয়েছে।

ইসি গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতিকে আওয়ামী লীগের প্রস্তাব ও সুপারিশমালা দিতে আওয়ামী লীগের গঠিত কমিটির দুজন সদস্য গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, সংবিধানে রাষ্ট্রপতিকে যে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, তার প্রতি আওয়ামী লীগের শ্রদ্ধা রয়েছে। তাঁরা আশা করেন, গতবারের মতো সার্চ কমিটির মাধ্যমেই রাষ্ট্রপতি সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন কমিশন উপহার দিতে পারবেন। আগামী ফেব্রুয়ারিতে বর্তমান ইসির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তাই এই অল্প সময়ের মধ্যে সার্চ কমিটির মাধ্যমে ইসি গঠনই সর্বোত্তম পন্থা।

 

নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে মতবিনিময় করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গভবনে পৌঁছfb আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল।  আজ বুধবার বিকাল ৪টায় তারা বঙ্গভবনে প্রবেশ করেন।

দলের অন্য সদস্যরা হলেন- উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, এইচটি ইমাম, ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আইনবিষয়ক সম্পাদক আবদুল মতিন খসরু, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
  প্রসঙ্গত, আগামী ফেব্রুয়ারিতে বর্তমান ইসির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। নতুন ইসি গঠন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নিতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ১৮ ডিসেম্বর থেকে সংলাপ শুরু করেন। প্রথমে বিএনপির সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ধারাবাহিকভাবে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ২২টি দলের সঙ্গে পৃথকভাবে সংলাপে বসছেন রাষ্ট্রপ্রধান। 
  
মতবিনিময় শেষে রাষ্ট্রপতির কাছে উপস্থাপিত প্রস্তাব ও সুপারিশমালা সম্পর্কে আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ধানমণ্ডিতে দলের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের বক্তব্য তুলে ধরা হবে।