• Home  / 
  • সারা দেশ  / 

অ্যামনেস্টির দাবিঃ বাংলাদেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতার কণ্ঠরোধ করা হয়েছে

Spread the love

বিবিসি

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, বাংলাদেশে গত তিন-চার বছরে মত প্রকাশের স্বাধীনতার পুরোপুরি কণ্ঠরোধ করা হয়েছে। ভারতের রাজধানী দিল্লিতে গতকাল মঙ্গলবার এক বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করে তারা দাবি করেছে, আতঙ্ক আর দমন-পীড়নের চাপে পড়ে আজকের বাংলাদেশে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর পুরোপুরি স্তব্ধ। সরকার ধর্মনিরপেক্ষ ব্লগারদের রক্ষা তো করতে পারেইনি, বরং নতুন একগুচ্ছ আইন প্রণয়ন করে সাংবাদিক বা ব্লগারদের স্বাধীন কাজকর্মকে অপরাধের তকমা দিতে চেয়েছে বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

বাংলাদেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা কতটা বিপন্ন, তা নিয়ে অ্যামনেস্টি তাদের রিপোর্টটি প্রকাশ করতে চেয়েছিল ঢাকাতেই। কিন্তু এই মানবাধিকার সংগঠনের একাধিক কর্মকর্তা বাংলাদেশের ভিসা পাননি বিধায় তাদের প্রতিবেদনটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করতে হলো দিল্লিতে। এ নিয়ে অ্যামনেস্টি প্রকাশ্যে মুখ খুলতে রাজি হয়নি ঠিকই, কিন্তু নাম না প্রকাশ করার শর্তে বিবিসিকে তারা বলেন, বাংলাদেশে স্বাধীন মতামত প্রকাশের পরিবেশ যে আদৌ নেই, এই ঘটনাই তা দেখিয়ে দিচ্ছে।

অ্যামনেস্টির রিপোর্টের মূল কথাটি কী, বিবিসিকে সে প্রশ্নের জবাবে রিপোর্টের মূল লেখক ওলফ ব্লমকভিস্ট বলেন, আমরা দেখেছি ২০১৪ সাল থেকেই সেখানে মত প্রকাশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে জোরদার অভিযান চলছে। ব্লগারদের রক্ষা করতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে, সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় তারা অসহায়ভাবে প্রাণ হারিয়েছেন। মিডিয়া আর সুশীল সমাজের ওপর ক্রমাগত বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। আর যেহেতু সরকারও চলছে কার্যত কোনো রাজনৈতিক বিরোধী দলকে ছাড়াই, তাই তারা সমালোচকদের আক্রমণ করার জন্য কার্যত ঢালাও লাইসেন্স দিয়ে দিয়েছে।

অ্যামনেস্টির বাংলাদেশ-গবেষক ব্লমকভিস্ট আরো মনে করেন, বাংলাদেশে টানা বহু বছর ধরে একটা সংসদীয় গণতন্ত্র থাকলেও সেটা স্বাধীন মত প্রকাশের রাস্তাকে পরিষ্কার করতে পারছে না। অ্যামনেস্টির মতে, মুক্ত সাংবাদিকতাকে তো সরকার যেন একটা অপরাধ বলেই গণ্য করছে। পরিস্থিতি আরো জটিল করে তুলেছে একগুচ্ছ ভীতিকর আইন। অ্যামনেস্টির দক্ষিণ এশিয়া ডিরেক্টর বিরাজ পট্টনায়ক বলছেন, ঠিক ভারতের এফসিআরএ আইনের ধাঁচে বাংলাদেশও সম্প্রতি এফডিআরএ নামে একটি আইন প্রণয়ন করছে, যাতে এনজিওগুলোর বিদেশি তহবিল পাওয়ার রাস্তা বন্ধ হয়।
রিপোর্ট প্রকাশের অনুষ্ঠানে অ্যামনেস্টি ইন্ডিয়ার প্রধান নির্বাহী আকার প্যাটেল প্রস্তাব দিয়েছেন, বাংলাদেশে যে সব সেক্যুলার বা প্রগতিশীল ব্লগার তাদের লেখালেখির কারণে বিপন্ন বোধ করছেন ভারতের উচিত হবে তাদের রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া। তবে এটা একটা সাময়িক সমাধানের পথ হলেও বাংলাদেশে যারা মুক্তচিন্তার চর্চা করেন, তাদের রক্ষা করার প্রাথমিক দায়িত্ব সে দেশের সরকারেরই, এটাও অ্যামনেস্টি মনে করিয়ে দিয়েছে এবং তারা আরো বলেছে, এ ক্ষেত্রে ধর্মীয় সহিষ্ণুতা বা সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্মীয় আবেগে আঘাত লাগার দোহাই দিয়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতার সঙ্গে কিছুতেই আপস করা যাবে না।