আয়না২৪ প্রতিনিধি, বাগেরহাট
বাগেরহাট জেলার আওতায় পূর্ব সুন্দরবনের দুবলারচরে আগামীকাল শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মালম্বীদের তিন দিনব্যাপী শত বছরের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব। আর এ উৎসবকে ঘিরে দুবলার চরের আলোরকোলে বসছে রাসমেলা।
এজন্য দর্শনার্থীদের সুন্দরবনে প্রবেশের জন্য বন বিভাগ ৮টি পথ নির্ধারণ করেছে। বন বিভাগ সূত্র জানায়, এসব পথ দিয়ে নৌকা, ট্রলার, লঞ্চ ও অন্যান্য নৌযানেযোগে পূণ্যার্থী ও দর্শনার্থীরা প্রবেশ করতে পারবেন। তবে এবার এই উৎসবের তিদিন সুন্দরবনে সব ধরনের পাস পারমিট বন্ধ থাকবে।
এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দুপুরে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সাইদুল ইসলাম বাগেরহাটে কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রেস বিফিং করেন। প্রেস বিফিং-এ তিনি বলেন, রাস উৎসবকে ঘিরে সাগর উপকূলের সুন্দরবনে বন বিভাগের ১৮টি টহল টিমের পাশাপাশি কোস্টগার্ড, র্যাব, নৌ বাহিনী ও পুলিশ নিয়োজিত থাকবে। এবার রাসমেলা উপলক্ষে ৩দিন সুন্দরবনে মাছ শিকারসহ সকল ধরনের পাশ পারমিট বন্ধ থাকবে। হরিণসহ বন্য প্রাণী শিকার রোধে বনরক্ষীদের টহল বৃদ্ধি ও ভ্রাম্যমাণ টিমকে শক্তিশালী করা হয়েছে।
এদিকে দর্শানার্থীদের সুন্দরবনে প্রবেশের জন্য ৮টি রুট নির্ধারণ করে দিয়েছে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ। এর মধ্যে রয়েছে, ঢাংমারী/চাঁদপাই স্টেশন-পশুর নদী-ত্রিকোণ আইল্যান্ড হয়ে দুবলারচর আলোরকোল,বগি-বলেশ্বর-সুপতি স্টেশন-কচিখালী- শেলারচর হয়ে দুবলারচর আলোকল, শরণখোলা স্টেশন-সুপতি স্টেশন- শেলারচর হয়ে দুবলার চর আলোরকোল। বুড়িগোয়ালিনী, কোবদক থেকে বাটুলা-নদী-বল-নদী-পাটকোষ্টা খাল হয়ে হংসরাজ নদী হয়ে দুবলার অলোরকোল। কদমতলা থেকে ইছামতি নদী, দোবেকী হয়ে-আড়পাঙ্গাসিয়া অতঃপর কাগা দোবেকী হয়ে দুবলারচর অলোরকোল। কৈখালী স্টেশন হয়ে মাদার গাং, খোপড়া খাল ভারানী, দোবেকী হয়ে আড়পাঙ্গাসিয়া অতঃপর কাগাদোবেকী হয়ে দুবলার চর আলোরকোল। কয়রা, কাশিয়াবাদ, খাসিটানা, বজবজা হয়ে আড়–য়া শিবসা নদী-মরজাত হয়ে মুবলার চর আলোরকোল ও নালিয়ান স্টেশন হয়ে শিবসা-মরজাত নদী হয়ে দুবলার চর আলোরকোল।
রাস উৎসবের আয়োজকরা জানান, প্রতি বছর অগ্রহায়ণ মাসের ভরা পূর্ণিমায় সাগর পাড়ের দুবলার চরে অনুষ্ঠিত হয় ৩ দিনব্যাপী রাস উৎসব। এ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থান ও প্রতিবেশী দেশসহ দেশি-বিদেশী লক্ষাধিক দর্শনার্থী এবং তীর্থ যাত্রীর ঢল নামে সুন্দরবনের দুবলারচরে। এ সময় দর্শানার্থীদের পদচারণায় মুখোরিত হয়ে ওঠে পুরো সাগর পাড় এলাকা।
এবার তিথি অনুযায়ী ১২ নভেম্বর থেকে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। মেলায় হস্ত ও কুটির শিল্পের কয়েক’শ দোকানী পসরা সাজিয়ে বসবে। এছাড়া জারি-সারি ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনও রয়েছে।