আয়না২৪ ডেস্ক
এ বছর (২০১৭) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ব্রিটিশ লেখক কাজুও ইশিগুরো। কে এই কাজুও ইশিগুরো? কাজুও ইশিগুরো ১৯৫৪ সালের ৮ নভেম্বর জাপানের নাগাসাকিতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা সমুদ্রবিজ্ঞানী হিসেবে চাকরি নিয়ে ১৯৬০ সালে সপরিবারে ইংল্যান্ডে চলে আসেন। কাজুও ইশিগুরো স্কুলের পড়া শেষ করে, ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার আগে মাঝখানের কয়েক বছর যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা সফর করেন। ১৯৭৪ সালে ক্যান্টারবুরিতে ইউনিভার্সিটি অফ কেন্টে ভর্তি হন। ১৯৭৮ সালে ইংলিশ এবং দর্শনে সম্মান সহ স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। স্নাতক ডিগ্রি লাভ করার পর লেখালেখিতে মন নিবেশ করেন। ১৯৮০ সালে ইউনিভার্সিটি অফ ইস্ট অঙ্গলিয়া থেকে ক্রিয়েটিভ রাইটিং এ মাস্টার ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৮২ সালে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব লাভ করেন।
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার
১৯৮২ সালে উইনিফ্রেড হোল্টবে মেমোরিয়াল প্রাইজ। ১৯৮৬ সালে হুইটব্রেড প্রাইজ। ১৯৮৯ সালে “দ্যা রিমেইন্স অফ দ্যা ডে” উপন্যাসের জন্য বুকার পুরস্কার। ১৯৯৫ সালে অর্ডার অফ দ্যা ব্রিটিশ এম্পায়ার। ১৯৯৮ সালে চেভালিয়ের লেট্ট্রেস। এবং
২০১৭ সালে নোবেল প্রাইজ। তিনি নাটক, ঐতিহাসিক উপন্যাস, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী লিখেন।
তার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি সাহিত্য কর্মঃ এন আর্টিস্ট অফ দ্যা ফ্লোটিং ওয়ার্ল্ড , দ্যা রিমেইন্স অফ দ্যা ডে, হোয়েনউই ওয়ার অরফেন্স ,নেভার লেট মি গো।
নিঃসন্দেহে আগামী ৮ নভেম্বর জীবনের ৬৩তম জন্মদিনটি কাজুয়ো ইশিগুরোর জন্য আলাদা গুরুত্বপূর্ণ ও বৈচিত্রময় হবে। ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, চিত্রনাট্যকার, গীতিকার, কলামলেখক ইশিগুরোর নোবেল প্রাপ্তি জাপান ও ব্রিটেনে আনন্দের জোয়ার বইয়ে দেবে। ‘এন আর্টিস্ট অফ দ্য ফ্লোটিং ওয়ার্ল্ড’, ‘দ্য রিমেইন্স অফ দ্য ডে’, ‘হোয়েন উই ওয়্যার ওরফান’, ‘নেভার লেট মি গো’ তার বিশ্বখ্যাত উপন্যাস। পাঁচটি গল্প নিয়ে রচিত তার গল্পগ্রন্থ নকটার্নসও বিশ্বব্যাপী আলোচিত। তিনি ইতিপূর্বে উইনিফ্রেড হল্টবি মেমোরিয়াল প্রাইজ (১৯৮২), হোয়াটব্রেইড প্রাইজ (১৯৮৬), বুকার প্রাইজ (১৯৮৯) স্যাভালি দ্যু লর্দে দে আর্টস এত্যুদেস লেটার (১৯৯৮) পেয়েছেন। আজকের সময়ের অন্যতম বিখ্যাত এই ইংরেজ জাপানি লেখক চারবার ম্যান বুকার প্রাইজের মনোনয়ন পেয়েছিলেন। ২০০৮ সালে ‘দ্য টাইমস’ ম্যাগাজিন তাকে ব্রিটেনের সেরা ৫০ লেখকের তালিকায় রেখেছিল। তারও আগে ২০০৫ সালে ‘টাইম’ ম্যাগাজিন তার ‘নেভার লেট মি গো’ উপন্যাসকে শত সেরা ইংরেজি উপন্যাসের তালিকায় ঠাঁই দিয়েছিল। ২০১০ সালে মার্ক রোমানেকের পরিচালনায় নেভার লেট মি গো চলচ্চিত্রায়িত হয়। তারও আগে জেমস আইভরি ১৯৯৩ সালে ‘দ্য রিমেয়ন্স অফ দ্য ড ‘ এবং ২০০৫ সালে ‘দ্য হোয়াই কাউন্টেস’ উপন্যাস দুটি নিয়ে চলচ্চিত্র তৈরি করেন।
পুরস্কার ঘোষণার সময়ে সুইডিশ একাডেমি কাজুও ইশিগুরোকে ‘অব্যক্ত আবেগের রূপকার’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছে। ঔপন্যাসিকের প্রশংসায় নোবেল কমিটি বলে, ‘তিনি তাঁর প্রচণ্ড আবেগভরা উপন্যাসগুলোর মাধ্যমে আমাদের এই দুনিয়া সম্পর্কিত ভাব-কল্পনার নিচের অতল গহ্বরকে উন্মোচন করেছেন।’ আটটি উপন্যাস লিখেছেন কাজুও ইশিগুরো, যা ৪০টির বেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
‘অব্যক্ত আবেগের রূপকার’ ইশিগুরোর
চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্যও লিখেছেন ইশিগুরো। তাঁর লেখা উপন্যাস ‘নেভার লেট মি গো’, ‘দ্য রিমেইনস অব দ্য ডে’, ‘দ্য হোয়াইট কাউন্টেস’ ও ‘দ্য স্যাডেস্ট মিউজিক ইন দ্য ওয়ার্ল্ড’কে চলচ্চিত্রে রূপান্তরের জন্য চিত্রনাট্য তাঁর লেখা।