আয়না২৪ ডেস্ক
এবার জনসমক্ষে এসে নিজের হতাশার কথা বললেন সদ্য সমাপ্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে যাওয়া ডেমোক্রেটিক দলের পরাজিত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ও সাবেক ফাস্ট লেডে হিলারি ক্লিনটন। রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে বুধবার রাতে শিশুদের একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়ে তিনি সেখানে অকপটে নিজের হতাশার কথা ব্যক্ত করেন। এ সময় হিলারি বলেন, ‘নির্বাচনের ফল দেখার পর বাড়ি থেকে আর কখনোই বের হবব না, এমন অনুভূতি হয়েছিল আমার।’ অবশ্য নির্বাচনে অপ্রত্যাশিত পরাজয়ের পর থেকে নিজেকে অনেকটা গুটিয়ে রেখেছিলেন হিলারি। হার মেনে ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানানোর পর তিনি আর জনসমক্ষে আসেন নি। তাঁকে শুধু বাড়ির আশপাশে প্রাতভ্রমণ ছাড়া অন্য কোনো অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি।
বুধবার রাতে ( স্থানীয় সময়) দাতব্য প্রতিষ্ঠান চিলড্রেন ডিফেন্স ফান্ডের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসেন হিলারি। এ সময় তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে হারার পর গেল সপ্তাহে ভালো একটা বই নিয়ে বিছানায় আয়েশ করে শুয়ে পড়তে মন চেয়েছিল। বাড়ি থেকে আর কখনোই বের হব, এমন ইচ্ছা হচ্ছিল না আমার।’
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানোয় চিলড্রেন ডিফেন্স ফান্ডকে ধন্যবাদ জানিয়ে হিলারি বলেন, ‘এখানে আসাটা আমার জন্য সহজ ছিল না। ‘আমি জানি, নির্বাচনের ফলাফলে আপনারা গভীরভাবে হতাশ। আমিও হতাশ, যা আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না।’ এ সময় তিনি সমর্থকদের হতাশ না হয়ে আমেরিকান মূল্যবোধের’ জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। সবার আগে দেশের কথা ভাবার কথাও বলেন তিনি ।
এর আগে নিজের পরাজয়ের জন্য এফবিআই পরিচালক জেমস কোমিকে দায়ী করেছিলেন হিলারি। দলের চাঁদাদাতাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় তিনি এ অভিযোগ করেন বলে ফাঁস হওয়া রেকর্ড থেকে জানা গেছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাত্র কয়েক দিন আগে হিলারির বিতর্কিত ই-মেইল ইস্যু নিয়ে নতুন করে তদন্ত শুরুর ঘোষণা দেন কোমি। এফবিআইয়ের এ ঘোষণা হিলারির জন্য বিরাট ধাক্কা হয়ে আসে।
অপরদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে নিউইয়র্কের মেয়র বিল ডি ব্লাজিও বলেছেন, নিজের শহরের অবৈধ অভিবাসীদের তিনি রক্ষা করবেন। ব্লাজিও বলেন, ‘ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী অবস্থানের কারণে পুরো শহর আতঙ্কে আছে।’
প্রসঙ্গত, নিউইয়র্ক শহরের ৪০ শতাংশের বেশি অধিবাসীর জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে। তাঁদের অনেকেই পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার আতঙ্কে রয়েছেন।
নিউইয়র্কের মেয়র ছাড়াও লস অ্যাঞ্জেলেস, সানফ্রান্সিসকো, শিকাগো, বোস্টন, ফিলাডেলফিয়া ও ওয়াশিংটন ডিসির মেয়ররাও আলাদাভাবে নিজ নিজ শহরের অভিবাসীদের রক্ষা করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
অন্যদিকে হবু ট্রাম্প প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নিয়োগ নিয়ে সৃষ্ট ধোঁয়াশার অবসান হচ্ছে। বুধবার রাতে জানানো হয়, ট্রাম্পের পক্ষ থেকে মূল দলের ঘোষণাটি পরদিনই দেওয়া হবে। সেই হিসাবে তা গতকালই আসার কথা ছিল। আর এরপরই পররাষ্ট্র ও বিচার মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোয় কারা আসতে পারেন, তা নিয়ে জল্পনার অবসান ঘটবে।
ট্রাম্পের নতুন মন্ত্রীসভায় নতুন এক নাম জোরেশোরে উচ্চারিত হচ্ছে। তিনি সাউথ ক্যারোলাইনার গভর্নর নিকি হ্যালে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন এবং এমএসএনবিসির ভাষ্য অনুযায়ী, নিকিকে ট্রাম্পের সরকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বা অন্য যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে দেখা যেতে পারে। তবে এই পদে এখন পর্যন্ত নিউইয়র্কের সাবেক মেয়র রুডি জুলিয়ানির নামটি খুব বেশী উচ্চারিত হচ্ছে।