আয়না২৪ ডেস্ক
স্পেন থেকে কাতালোনিয়ার স্বাধীনতা ঘোষণার পর ক্রমবর্ধমান সংকটে দেশটির অন্যতম সম্পদশালী অঞ্চলের অর্থনীতি নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। স্পেনের অর্থনীতির ‘পাওয়ার হাউস’ খ্যাত কাতালানের ব্যবসা ও সম্পদের কিছু তথ্য তুলে ধরা হল-
ধনী অঞ্চল : স্পেনের সম্পদশালী অঞ্চলের তালিকায় কাতালোনিয়া মাদ্রিদকেও পেছনে ফেলেছে। ২০১৬ সালে স্পেনের জিডিপির ১৯ ভাগের জোগান দেয় কাতালান। স্পেনের ১৭টি অঞ্চলের মধ্যে মাথাপিছু আয়ে কাতালানের অবস্থানে শীর্ষ চতুর্থ স্থানে। ২০১৭ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকের হিসাব অনুসারে বেকারত্বের হার দেশটির গড় হার ১৩.২ ভাগের চেয়ে কম। স্পেনের অর্থমন্ত্রী বলেছেন, কাতালান স্বাধীন হলে দেশটির জিডিপি এক-চতুর্থাংশ কমে যাবে এবং বেকারত্ব দ্বিগুণ হবে। স্বাধীনতাকামীরা বলছেন, মাদ্রিদকে কর দিতে না হলে কাতালানের অর্থনীতি আরও সমৃদ্ধ হবে।
শীর্ষ রপ্তানিকারক অঞ্চল : কাতালান এখন পর্যন্ত দেশটির শীর্ষ রপ্কাতানিকারক অঞ্চল। গত বছর দেশটির রফতানি আয়ের এক-চতুর্থাংশই আসে কাতালান থেকে। ২০১৫ সালে স্পেনের বিদেশি বিনিয়োগের ১৪ ভাগই পায় কাতালান। মাদ্রিদের পরই ছিল এ অঞ্চলের অবস্থান। কাতালানে খাদ্য, রাসায়নিক এবং লজিস্টিক খাতের বৃহৎ কোম্পানি রয়েছে। ২০১৬ সালে স্পেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম গাড়ি উৎপাদনকারী অঞ্চল ছিল কাতালান। নিশান ও সিয়াটের কারখানা রয়েছে এখানে। তবে চলমান সংকটের কারণে ৮০০ কোম্পানির সদর দফতর কাতালান থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
প্রযুক্তি : নব্বইয়ের দশক থেকে জীববিজ্ঞান, জেনটিক্স, নিউরোসায়েন্স এবং সেল জীববিজ্ঞানের গবেষণায় ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে কাতালান। এখানে রয়েছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির হাসপাতাল ও গবেষণা কেন্দ্র। বলা হয়, মাথাপিছু হিসেবে ইউরোপের ওষুধ কোম্পানির শীর্ষে রয়েছে কাতালান। স্পেনের সেরা পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটিই কাতালানে।
পর্যটকদের কাছ ব্যাপক জনপ্রিয় : প্রাদেশিক রাজধানী বার্সোলো ও কোস্টা ব্রাভা সৈকত পর্যটকদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়। স্পেনের অন্য যে কোনো অঞ্চলের চেয়ে কাতালান পর্যটকদের কাছে বেশি জনপ্রিয়। গত বছর কাতালান পরিদর্শন করেন ১ কোটি ৮০ লাখ লোক, যা স্পেনের মোট বিদেশি পর্যটকের এক-চতুর্থাংশ। তবে চলমান সংকটের কারণে পর্যটকদের সংখ্যা প্রায় ১৫ ভাগ কমে গেছে।
ঋণের পাহাড় : ২০১৭ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে স্পেনের অঞ্চলগুলোর মধ্যে কাতালান ছিল তৃতীয় সর্বোচ্চ ঋণগ্রস্ত। অঞ্চলটির ঋণ প্রায় ৯ হাজার কোটি ডলার। জিডিপির ৩৫ ভাগ ঋণ রয়েছে কাতালানের। রেটিং সংস্থাগুলো কাতালানকে তলানিতে রেখেছে, যার মানে হচ্ছে ঋণ পেতে কাতালান সরকারকে স্পেন সরকারের ওপর নির্ভর করতে হয়।