
আয়না২৪ ডেস্ক
ভারতের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি কি পররাষ্ট্র মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ? এমন কানাঘুষাই চলছে ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে যে সুষমাকেই শেষ পর্যন্ত এই পদে বেছে নেবে ক্ষমতাসীন বিজেপি। আলাপচারিতায়ও তার একটা জোড়ালো ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
বিজেপির একটি বড় অংশ মনে করছে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল সুষমাই হতে পারেন রায়সিনা হিলসে প্রণব মুখার্জির যোগ্য উত্তরসূরি। তাছাড়া, বেশ কিছুদিন ধরেই সুষমার শরীর ভাল যাচ্ছে না। কিডনিও প্রতিস্থাপিত করতে হয়েছে। তাই এই মুহূর্তে সুষমার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে লাভবান হতে চাইলে তাঁকে রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরা উচিত। সেই সঙ্গে সুষমাকে প্রার্থী করলে বিরোধী জোটেও ভাঙন ধরতে পারে বলে তাঁদের আশা।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জয় নিয়ে কোনও সন্দেহ না থাকলেও, কাকে প্রার্থী করা হবে তা নিয়ে ক্ষমতাসীন বিজেপির মনোভাব এখনও সুস্পষ্ট নয়। প্রশ্ন করলে সব বিজেপি নেতারই এক বক্তব্য, এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আরএসএসের সঙ্গে কথা বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
বেশ কিছুদিন ধরেই বিজেপির অন্দরমহলে ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল দ্রৌপদী মুর্মুর নাম নিয়ে চর্চা চলছে। যদি দ্রৌপদী মুর্মুর নামে শেষ পর্যন্ত সিলমোহর পড়ে তবে তিনিই হবেন দেশের প্রথম আদিবাসী রাষ্ট্রপতি। সেই সঙ্গে দ্রৌপদী মুর্মুকে রাষ্ট্রপতি করলে বিজেপি কিছু বাড়তি সুবিধাও পাবে। যেমন ওড়িশা বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ভাল ফলের সম্ভাবনা বাড়বে। কারণ দ্রৌপদী মুর্মু ওই রাজ্যেরই মানুষ। ওড়িশার আদিবাসীদের মধ্যে তাঁর ভালই প্রভাব। সেই প্রভাবের সুফল তুলতে দ্রৌপদী মুর্মুকেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এনডিএর প্রার্থী করা উচিত বলে মনে করছে বিজেপির একাংশ।
অন্যদিকে দ্রৌপদী মুর্মুর নামে আপত্তিও কিন্তু কম নেই। যাঁরা ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপালকে দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হিসেবে দেখতে চান না, তাঁদের মতে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতি সম্বন্ধে দ্রৌপদী মুর্মু তেমন ওয়াকিবহাল নন। কারণ তিনি রাজ্য রাজনীতিতেই বেশি সময় অতিবাহিত করেছেন। তাই তাঁর বদলে সুষমার মতো কাউকে প্রার্থী করলে দল বেশি লাভবান হবে বলে তাঁরা মনে করছেন। আলোচনায় রয়েছে লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজনের নামও।
অন্যদিকে আজ সকালে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী পালানিস্বামী দেখা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে। তামিলনাড়ুর উন্নয়ন ছাড়াও, দুজনের মধ্যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়েও আলোচনা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এআইডিএমকের ভোট প্রায় ছয় শতাংশ। তাই ৪৮ শতাংশের কিছু বেশি ভোট থাকা শাসক জোট জয়ের বিষয়ে একেবারে নিশ্চিত হয়ে যাবে প্রয়াত জয়ললিতার দলের সমর্থন পেলে। বৈঠক শেষে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে সরকারিভাবে কিছু বলতে রাজি হননি তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী।
তবে ওই দলের অভ্যন্তরের খবর যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এনডিএ প্রার্থীকেই সমর্থন করবে এআইডিএমকে। এখন দেখার জেতার জন্য প্রয়োজনীয় ভোট জোগাড় করে ফেললেও, রাষ্ট্রপতি পদে উপযুক্ত প্রার্থীর সন্ধান কত তাড়াতাড়ি পায় বিজেপি।