আয়না ২৪ ডেস্ক
ভারতকে ‘সত্যি-সত্যিই একটি বন্ধু’ দেশ বলে মনে করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সুদূর ওয়াশিংটন থেকে টেলিফোনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সে কথাই বলেছেন নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ‘প্রকৃত বন্ধু’র যা ‘প্রাপ্য’, তা-ও মিটিয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প। তুলনায় শক্তিধর বা ‘বহু দিনের বন্ধু’ দেশ রাশিয়া, চিন, ব্রিটেন, জার্মানি, জাপানের রাষ্ট্রপ্রধানদের আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকেই টেলিফোনটা করে বসলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
আর সেই দূরভাষেই, কোনও আভাস বা ইঙ্গিত নয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে প্রত্যয়ের সুরেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলে দিয়েছেন, ‘‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমরা (আমেরিকা) ভারতের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়তে চাই।’’ শুধু তাই নয় ‘এক জন প্রকৃত বন্ধু’র সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে, মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি, সুস্থিতি ও নিরাপত্তা ফেরানোর জন্য তিনি কী কী ভাবছেন, প্রধানমন্ত্রী মোদীকে সে সবও বলেছেন ট্রাম্প।
পরে ডাকা সাংবাদিক সম্মেলনে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ট্রাম্প-মোদীর টেলিফোন বাক্যালাপে দু’দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আরও বাড়ানো ও জোরদার করার ওপরে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তার জন্য ভারত ও মার্কিন সেনাবাহিনীর যৌথ মহড়া আরও বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথাও মোদীকে বলেছেন ট্রাম্প। কথা হয়েছে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম নিয়েও। হোয়াইট হাউস বলেছে, ‘‘ভারতকে যে প্রকৃতই একটি বন্ধু দেশ বলে মনে করা হয়, মোদীকে টেলিফোনে তা বার বার বলেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। বলেছেন, গোটা বিশ্বের সামনে এখন যে চ্যালেঞ্জগুলি রয়েছে, সেগুলির মোকাবিলা করতে তিনি ভারতকে পাশে চান। অর্থনৈতিক
সহযোগিতা বাড়ানোর পাশাপাশি দু’দেশের বাণিজ্যিক লেনদেন আরও বাড়ানোর প্রয়োজনের ওপরেও জোর দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।’’এর আগে কানাডা, মেক্সিকো, মিশরের প্রেসিডেন্ট ও ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেই কথা হয়েছিল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের।৪৫তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর এই প্রথম ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে টেলিফোন করলেন ট্রাম্প। নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বার বার বলেছিলেন, তিনি যদি ভোটে জিতে প্রেসিডেন্ট হতে পারেন, তা হলে ইজরায়েল তো বটেই, তা ছাড়াও ভারতের মতো আরও কয়েকটি দেশের সঙ্গে সম্পর্ককে জোরদার করে তুলবেন।
মঙ্গলবার ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে টেলিফোনে এ বছরের শেষেই আমেরিকায় যাওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। প্রধানমন্ত্রী মোদীও ভারতে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ট্রাম্পকে টেলিফোনে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ও তাঁকে ভারতে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।
বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়ানোর ক্ষেত্রে ট্রাম্প ও মোদীর মধ্যে ঠিক কী কী কথা হয়েছে, হোয়াইট হাউস অবশ্য সে সব সবিস্তারে জানায়নি। তবে ট্রাম্প ও মোদী, দু’জনেরই ঘনিষ্ঠ এক অনাবাসী ভারতীয় শিল্পপতি বলেছেন, ‘‘মনে হয়, সমরাস্ত্র, প্রতিরক্ষা সামগ্রী, সরঞ্জাম, প্রযুক্তি ও শক্তি ক্ষেত্রে ভারতে রফতানি আরও বাড়াতে উৎসাহী হবে ট্রাম্প প্রশাসন। ভারতের পক্ষে সুখবর এটাই যে, ওই সব ক্ষেত্রে এত দিন আমেরিকার বড় বাজার ছিল চিন। এ বার সেই অভিমুখ বদলে যাওয়ার ইঙ্গিত ইতিমধ্যেই মিলতে শুরু করেছে। এর ফলে, ভারতে প্রচুর পরিমাণে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে।’’