আয়না২৪ ডেস্ক
১৯৬৪ সালের ১৫ই জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই থেকে একটি চিঠি পাঠানো হলো তখনকার অ্যাটর্নি জেনারেল রবার্ট কেনেডির কাছে। তাতে তাকে বলা হলো, শিগগিরই একটি বই প্রকাশ হতে যাচ্ছে। তাতে দাবি করা হচ্ছে, হলিউডের চিরসবুজ নায়িকা মেরিলিন মনরোর সঙ্গে রবার্ট কেনেডির গোপন প্রেম আছে। ওই বইয়ে আরো দাবি করা হলো, ঘটনার নেপথ্যে অন্য কারণ। রবার্ট কেনেডি পর্দার অন্তরালে কমিউনিস্টদের সঙ্গে কাজ করছিলেন মেরিলিন মনরোকে হত্যা করার জন্য।
ওই চিঠিতে বলা হলো, ওই হত্যাকাণ্ডকে তখন আত্মহত্যা বলে ধামাচাপা দেয়া হয়েছিল। ওই বইয়ে আরো বলা হয়েছে, যে রাতে মেরিলিন মনরো মারা যান সে রাতে নিজের এপার্টমেন্টেই অবস্থান করছিলেন রবার্ট কেনেডি।
এরপর গোয়েন্দা এজেন্টরা লিখেছিলেন যে, কেনেডিকে নিয়ে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা মিথ্যা। কারণ, অ্যার্টনি জেনারেল তখন প্রকৃতপক্ষে নিজের স্ত্রীর সঙ্গে অবস্থান করছিলেন সান ফ্রান্সিসকোতে।
প্রসঙ্গত, এটর্নি জেনারেল রবার্ট কেনেডি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির ছোটভাই।
জন এফ কেনেডিকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তারপর অসংখ্য ফাইল জমা হয় যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোতে। সেই হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিপুল পরিমাণ ফাইল প্রকাশ করেছে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। তার একটিতে রবার্ট এফ কেনেডি সম্পর্কে এসব কথা বলা হয়েছে। ১৯৬৩ সালে হত্যা করা হয় যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডিকে। এর সঙ্গে জড়িত বলে শোনা যায় লি হারভে ওসওয়াল্ড, ওসওয়াল্ডের খুনি জ্যাক রুবি। কয়েক হাজার এমন নথি প্রকাশ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে এফবিআইয়ের সাক্ষাৎকার, সিআইএ ও অন্য সরকারি কর্মকর্তাদের তৎপরতা। দীর্ঘ সময় এসব রিপোর্টকে হিমঘরে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। কিন্তু তা প্রকাশ করার পর বেরিয়ে আসছে অনেক নাম। তার মধ্যে রয়েছেন নায়িকা মেরিলিন মনরো থেকে শুরু করে দস্যু স্যাম গিয়ানকারান পর্যন্ত নাম। জন এফ কেনেডিকে ডালাসে হত্যার পর একটি যুগের অবসান ঘটে। তখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রকে নিরপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু কেনেডিকে হত্যার মাধ্যমে তাদের ইতিহাসে কলঙ্ক লাগে। এ বিষয়ে সব রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি।
জাতীয় নিরাপত্তার জন্য কমপক্ষে ১৮০ দিন কমপক্ষে ৩০০ দলিল প্রকাশ বিলম্বিত করার জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে অনুরোধ করেছে এফবিআই ও সিআইএ। প্রেসিডেন্ট তা অনুমোদন করেছেন। তবে প্রকাশিত দলিলের একটি নোট পাওয়া গেছে। তা ১৯৬৪ সালের মে মাসের। সাবেক সোভিয়েত নেতা নিকিতা ক্রুশ্চেভের একটি কথোপকথন রয়েছে তাতে। এতে তাকে বলতে শোনা যায়, তিনি বিশ্বাস করেন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থা একেবারে অদক্ষ। তাই কোনো ষড়যন্ত্র ছাড়াই জন এফ কেনেডিকে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি বিশ্বাস করেন, কেনেডি হত্যাকাণ্ডে ডালাস পুলিশ ডিপার্টমেন্টও জড়িত (এক্সেসরি) থাকতে পারে। সিআইএ সূত্র জানতে পারে যে, এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে আমেরিকান রাইট উইং থাকতে পারে বলে চেয়ারম্যান ক্রুশ্চেভের কিছু অন্ধ ধারণা ছিল। যখন সূত্র বলে যে, ওসওয়াল্ড ও রুবি- দু’জনেই ছিলেন উন্মাদ। তারা নিজেরাই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তখন ক্রুশ্চেভ সোজাসাপ্টা বলে দেন, তিনি এ কথা বিশ্বাস করেন না।