আয়না২৪ ডেস্ক
রাশিয়ার সাইবার হ্যাকারদের মিথ্যা প্রতিবেদনের সূত্র ধরেই কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে সৌদি আরব ও অন্যান্য মিত্ররা-এমনটা মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। সিএনএনকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। এটি প্রকাশিত হয়েছে লন্ডনের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকায়।
পত্রিকাটির খবরে বলা হয়েছে, সাইবার নিয়ম ভঙ্গ করে কাতারের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থায় একটি ভুয়া রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। আর তা করে হ্যাকাররা। এ বিষয়টি মে মাসের শেষের দিকে যাচাই করতে কাতার সফরে যান এফবিআইয়ের বিশেষজ্ঞরা। এ সময়েই ভুয়া ওই রিপোর্টের সূত্র ধরেই কাতারের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবরোধের প্রক্রিয়া শুরু করে সৌদি আরব। এতে যুক্ত হয় উপসাগরীয় আরো বেশ কয়েকটি দেশ। একে কেন্দ্র করে কয়েক দশকের মধ্যে উপসাগরীয় অঞ্চলে সবচেয়ে কঠিন কূটনৈতিক সঙ্কটের সৃষ্টি হয়।
কাতার সরকার বলছে, ২৩শে মে রিপোর্টে ভুল তথ্য জুড়ে দেয়া হয় যে কাতারের শাসকদের সঙ্গে ইরান ও ইসরাইলের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। ওই রিপোর্টে আরো প্রশ্ন তোলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প কি তার ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবেন? কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানি এ বিষয়ে মিডিয়ার কাছে মুখ খুলেছেন।
তিনি বলেছেন, (রাশিয়ার) ওই হ্যাক ও ভুয়া খবর যুক্ত করা সম্পর্কে নিশ্চিত করেছে এফবিআই। ভুল তথ্যের ভিত্তিতে কাতারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। আমরা মনে করি এ সঙ্কটের পুরোটাই ভুল তথ্যের কারণে। তিনি বলেন, এ সঙ্কট শুরু হয়েছে বানোয়াট রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে। হ্যাক করে আমাদের জাতীয় বার্তা সংস্থায় এমন খবর প্রকাশ করা হয়েছে। এ বিষয়টি প্রমাণ পেয়েছে এফবিআই।
যদি কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই অভিযোগ সত্যি হয় তাহলে এটা পরিষ্কার হবে যে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিকে খর্ব করার চেষ্টা করছে রাশিয়া। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা তৎপরতা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিতে পারে। কারণ, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে বিজয়ী করতে নির্বাচনী ব্যবস্থায় রাশিয়া হস্তক্ষেপ করেছিল বলে অভিযোগ আছে। এ অভিযোগ ক্রেমলিন অস্বীকার করেছে।
গত সোমবার সন্ত্রাসবাদে সমর্থন দেওয়ার অভিযোগে কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছেদের ঘোষণা দেয় সৌদি আরব, মিশর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন। একই সঙ্গে ্ এসব দেশ কাতারের সঙ্গে আকাশ, জল ও স্থল যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
এসব দেশ অভিযোগ করছে, উপসাগরীয় ছোট্ট দেশ কাতার উগ্রপন্থি গ্রুপগুলোকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে। আরো বলা হয় সৌদি আরবের ঘোর বিরোধী ইরানের এজেন্ডা বাস্তবায়নে সহায়তা দিচ্ছে কাতার। কিন্তু তাৎক্ষণিক কড়া প্রতিক্রিয়ায় কাতার জোর দিয়ে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বিমান ঘাঁটি কাতারে অবস্থিত। তা সত্ত্বেও কাতারকে একঘরে করে রাখার এমন উদ্যোগে সমর্থন দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।