ফের সাইবার হামলা হতে পারে: মাইক্রোসফট

Spread the love

আয়না২৪ ডেস্ক

বিশ্বের ১৫০ দেশে গত শুক্রবারে একযোগে  ভয়াবহ সাইবার হামলা চালানোর পর আবারও সাইবার হামলার আশংকা করা হচ্ছে।শুক্রবারের হামলায়  সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তাব্যবস্থা ‘ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত’ হয়েছে বলে জানিয়েছে টেক জায়ান্ট মাইক্রোসফট। সংস্থাটি জানাচ্ছে, এখনো সক্রিয় রয়েছে র‌্যানসামওয়ার, ফের আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। খবর বিবিসি ও সিএনএনের।
 
এক বিবৃতিতে মাইক্রোসফটের পক্ষ থেকে সতর্ক করে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে সাইবার আক্রমণের এ ঘটনাকে প্রতিটি সরকারের উচিত একটি ‘জাগ্রত ডাক’ হিসেবে বিবেচনা করা। এ আক্রমণে ব্যবহৃত সর্বশেষ ভাইরাসটি মাইক্রোসফট উইন্ডোজের একটি সংস্করণে প্রথমবারের মতো খুঁজে পায় মার্কিন সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু আরও একটি ব্যাপক আকারের হামলা শীঘ্রই ঘটতে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা। এবারের হামলায় ১ লাখের বেশি কম্পিউটার সিস্টেম আক্রান্ত হতে পারে। আর এ হামলাটি সোমবারেই হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।
 
তবে নতুন হামলা ঠেকাতে অনেক প্রতিষ্ঠানই ইতোমধ্যে সাইবার বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করেছে। এছাড়া কম্পিউটারের নিরাপত্তা রক্ষায় কাজ কারা প্রতিষ্ঠানগুলোও বিশ্বব্যাপী সাইবার হামলা প্রতিরোধে সবাইকে সতর্ক করে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছে।
ওয়ানাক্রাই’সহ বিভিন্ন নামে ছড়িয়ে পড়া র‌্যানসামওয়্যার জাতীয় ভাইরাসটি শেষ পর্যন্ত স্পেন, ফ্রান্স, রাশিয়া এবং চীনসহ বিশ্বের ১শ’টি দেশের দু’লাখের বেশি কম্পিউটারে আক্রমণ করতে সফল হয়। সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা অ্যাভাস্ট জানিয়েছে, রাশিয়া, ইউক্রেন এবং তাইওয়ানকে লক্ষ্য করেই বেশিরভাগ হামলা হয়েছে। এসব দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান আক্রান্ত হয়েছে। বিশেষ করে বড় ধরণের হামলার মুখে পড়েছে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস। দেশটির স্বাস্থ্য খাতের ১৬টি সংস্থা হামলার কবলে পড়েছে। হাসপাতালে জরুরি চিকিত্সা সেবা বন্ধ করে রাখতে হয়। অনেক রোগীর অপারেশন করাও সম্ভব হয়নি। অনেক রোগীকে ভর্তি পর্যন্ত করা হয়নি।
 
স্পেনের টেলিকম ও জ্বালানি কোম্পানি, চীনের বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের ডেলিভারি কোম্পানি ফেডএক্স এই হামলার শিকার হয়েছে। ইউরোপোল জানিয়েছে, এই হামলা ছিল অপ্রত্যাশিত এবং এর আন্তর্জাতিক তদন্ত দরকার। চীনের ইন্টারনেট নিরাপত্তা কোম্পানি কিউইহো৩৬০ সতর্ক করে দিয়েছে, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজের বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের কম্পিউটারে হামলা করা হতে পারে। এর বিনিময়ে অর্থ দাবি করা হবে।
শুক্রবার হওয়া এই সাইবার হামলা যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সির (এনএসএ) তৈরি একটি সফটওয়্যার টুল দিয়েই করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এনএসএ’র ফাঁস হওয়া কিছু দলিলপত্রে পাওয়া কিছু প্রাযুক্তিক ত্রুটির সূত্র ধরে সাইবার হামলাটি করা হচ্ছে বলে ধারণা করছেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা। গত এপ্রিলে ‘শ্যাডো ব্রোকারস’ নামের একটি হ্যাকার গ্রুপ এই টুলগুলো হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে চুরি করে অনলাইনে ছেড়ে দেয়ার দাবি করে। হামলাকারীরা ‘র‍্যানসামওয়্যার’ জাতীয় এই টুল ছড়িয়ে হাজারো কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। এরপর সেই নিয়ন্ত্রণ ব্যবহারকারীদের ফিরিয়ে দিতে ডিজিটাল মুদ্রা বা ‘বিটকয়েনের’ মাধ্যমে তারা কম্পিউটার প্রতি ৩০০ ডলার করে দাবি করতে শুরু করে।