আয়না২৪ ডেস্ক
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদে অযোগ্য ঘোষণা করা হলো নওয়াজ শরিফকে। দেশটির সর্বোচ্চ আদালত আজ শুক্রবার এই রায় ঘোষণা করেন।বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ সংস্থাটির খবরে বলা হয়েছে, পানামা পেপারসে ফাঁস হওয়া তথ্য অনুযায়ী নওয়াজ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ উঠে। ওই অভিযোগের তদন্ত করে দেশটির যৌথ তদন্ত দল (জেআইটি)। জেআইটর তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, নওয়াজ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা তাঁদের নামে থাকা বিপুল পরিমাণ সম্পদের উৎস জানাতে ব্যর্থ হয়েছেন। দেশটির সর্বোচ্চ আদালত জেআইটির দেও্য়া ওই প্রতিবেদন আমলে নিয়ে এই রায় ঘোষণা করেন।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইসহাক দারকেও দায়িত্বে থাকার অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে।
নওয়াজ পরিবারের সাবেক হিসাব রক্ষক ইসহাক ছিলেন পাকিস্তানের মন্ত্রিসভার প্রভাবশালী সদস্য। আদালতের নির্দেশে তিনিই নওয়াজের পরিবারের সম্পদের তথ্য ও নথি আদালতে উপস্থাপন করেছিলেন।
এই রায়ের ফলে তৃতীয় মেয়াদে পাকিস্তানের সরকারপ্রধানের দায়িত্বে থাকা এই রাজনীতিবিদকে এখন সরে দাঁড়াতে হবে।
গত বছর ফাঁস হওয়া পানামা পেপারসে নওয়াজ শরীফের মেয়ে মরিয়ম ও ছেলে হাসান-হুসেনের নাম আসে। তারা তিনজন ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডে নিবন্ধিত বিভিন্ন অফশোর কোম্পানির নামে লন্ডনে সম্পত্তি কেনেন বলে ফাঁস হওয়া নথিতে জানা যায়।
এরপরই বিরোধীরা নওয়াজ পরিবারের সম্পত্তির হিসাব ও দুর্নীতির তদন্ত করতে সুপ্রিম কোর্টের কাছে দাবি জানায়।
গত জুনে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট জানায়, পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারিতে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে অপসারণ করার মত পর্যাপ্ত প্রমাণ মেলেনি।
নওয়াজ পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে আদালত একটি যৌথ দল গঠনের নির্দেশ দেয় সে সময়।
সামরিক-বেসামরিক গোয়েন্দা সদস্যদের নিয়ে গঠিত ছয় সদস্যের এ তদন্ত দলকে নওয়াজ পরিবারের তিন পুরুষের সম্পত্তির হিসাব নিতে বলা হয়; একইসঙ্গে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
নওয়াজ শরীফ ও তার সন্তানরা শুরু থেকেই তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। পরিবারের সব সম্পত্তিই বৈধ উপায়ে কেনা বলেও তাদের দাবি।
যৌথ তদন্ত দলের (জেআইটি) জিজ্ঞাসাবাদেরও প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ ও তার সন্তানরা একই কথা বলেন।
প্রসঙ্গত, পাকিস্তান মুসলিম লীগ- নওয়াজের (পিএমএল-এন) দলের নেতা নওয়াজ শরীফের বাবা ছিলেন দেশটির খ্যাতিমান শিল্পপতি।
নওয়াজ ১৯৯০ ও ১৯৯৯ সালে দুবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলেও ক্ষমতাচ্যুত হওয়ায় কোনোবারই তিনি মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি।
দ্বিতীয় মেয়াদে সেনাবাহিনীর হাতে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশান্তরিত হতে হয়েছিল নওয়াজকে। তখন তিনি থাকতেন সৌদি আরবে। ২০১৩ সালের নির্বাচনে নওয়াজ পুনরায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।