আয়না২৪ ডেস্ক
তাঁর এই দীর্ঘ আয়ুর রহস্য কী? এমা বলছেন, নিয়মিত কাঁচা ডিম খাওয়া, রাতে তাড়াতাড়ি বিছানায় শুতে যাওয়া, এবং অবিবাহিত থাকার কারণেই এতদিন পৃথিবীর আলো দেখতে পেরেছেন তিনি। বলেন কী এমা! বিয়ে না করাটাও তাঁর দীর্ঘজীবী হওয়ার নেপথ্য কারণ? ১১৬ বছরের তরুণী ফোকলা গালে হেসে বলছেন, ‘‘বিয়ে করলে থোড়াই বাঁচতাম এতদিন!’’
তিনিই এখনকার বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন মানুষ এমা মোরানো। তাঁর জন্ম ঊনিশ শতকে। গত মঙ্গলবার তিনি তাঁর ১১৭তম জন্মদিন পালন করেছেন। বয়স হয়েছে ঠিকই , কিন্তু এখনো শারিরীক কাঠামো অটুট আছে। প্রতিদিন দুটি করে কাঁচা ডিম খেয়ে স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নেন ইতালির নাগরিক বয়সে প্রাচীন এই নারী।
১৮৯৯ সালে জন্ম হয়েছিল এমার। পরিবর্তনশীল এ পৃথিবীর বহু ঘটনার সাক্ষী তিনি যা আমরা ইতিহাসের পাতায় পড়ি। দু-দুটি বিশ্বযুদ্ধ ছাড়াও তিনটি শতকের ছোঁয়া পেয়েছেন এমা। তাঁর জীবদ্দশায় ইতালিতে প্রায় ৯০ বার সরকার বদল হয়েছে ।
২৯ নভেম্বর ছিল তাঁর জন্মদিন। এই বিশেষ দিনটিতে বন্ধুবান্ধব, প্রতিবেশী এবং এমার চিকিৎসকসহ সকলে সমবেত হয়েছিলেন তাঁর ছোট্ট অ্যাপার্টমেন্টে। সকলে মিলে একটা বিশালাকার সাদা রঙের কেক উপহার দিয়েছিলেন এমাকে। একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারেে এমা জানিয়েছেন, ‘আমার জীবনটা অতটাও সুখের ছিল না। আমি একটি ফ্যাক্টরিতে ৬৫ বছর বয়স পর্যন্ত কাজ করি। তারপর কাজ ছেড়ে দিই।’
কয়েকবছর আগে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন তাঁর স্বামীর কথা। যিনি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় মারা যান। খুব কম বয়সেই তাঁর বিয়ে হয়েছিল। প্রথম স্বামী মারা যাওয়ার পর ইচ্ছার বিরুদ্ধে দ্বিতীয়বার বিয়ে করতে হয়। দ্বিতীয় স্বামী তাঁকে হুমকির সুরে বলেছিলেন, ‘হয় তুমি আমায় বিয়ে কর, আর নইলে আমি তোমায় মেরে ফেলব।’ ১৯৩৭ সালে তাঁদের একটি পুত্রসন্তানও হয়। কিন্তু জন্মের ছয় মাস পরেই মারা যায় সেই সন্তান। কয়েক বছর পর স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় তাঁর।
সব মিলিয়ে নানা সীমাহীন চড়াই উৎরাইয়ের মধ্য দিয়ে গোটা জীবন কেটেছে এই নারীর। তবে স্বাস্থ্য-সচেতনতাই তাঁর দীর্ঘায়ুর রহস্য বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা।
এমা মোরানোর আগে পৃথিবীর প্রবীণতম মানুষ ছিলেন নিউ ইয়র্কের সুজানা মুশাট জোনসের। তিনি কয়েকমাস বড় ছিলেন এমার চেয়ে। কিন্তু কয়েকমাস আগে প্রয়াত হয়েছেন সুজানা। ফলে পৃথিবীর প্রাচীনতম মানুষের শিরোপা চলে আসে এমার কাছে।