স ম্প্রতি কর্নাটকের বিজেপি নেতা গলী জনার্দন রেড্ডি তাঁর মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। এতে ব্যয় হয়েছে শত কোটি টাকা। অতিথির সংখ্যা ছিল প্রায় ৫০ হাজার! ভারতে যখন ৫০০ ও ১০০০ হাজার টাকার নোট বাতিলের পর ব্যাপক প্রতিক্রিয় চলছে ঠিক সেই বাজারে এই রাজকীয় বিয়ের বিষয়টি খুব আলোচিত হচ্ছে। যেখানে সরকার ঘোষণা করেছে, বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার ব্যয় মেটাতে এই পরিস্থিতিতে আড়াই লাখ টাকা পর্যন্তই ব্যাংক থেকে তোলা যাবে এবং এ জন্য দেখাতে হবে বিয়ের কার্ড। তা সত্ত্বেও ১০০ কোটির বিয়ে!
আয়না২৪ এর পাঠকদের জন্য ভারতের এরকম কয়েকটি রাজকীয় বিয়ের খবর উপস্থাপন করা হলো-
খরচ প্রায় ৫৫২ কোটি
কে না চেনেন ‘সহারা ইন্ডিয়া’র মালিক সুব্রত রায়কে! বিপুল পরিমাণে অর্থ তছরূপের অভিযোগে দীর্ঘদিন হাজতবাস করতে হচ্ছে তাঁকে। এখন যদিও প্যারোলে মুক্ত। সেই সুব্রত রায়ের দুই ছেলের বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল লখনউয়ের সহারা অডিটোরিয়ামে। দুই ভাইয়ের বিয়ের মোট খরচ ৫৫২ কোটি। রোহিত বাল এবং সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়ের ডিজাইন করা পোশাক গায়ে চাপিয়ে বিয়ে করতে গিয়েছিলেন সুশান্ত এবং সীমান্ত। বিভিন্ন কুইজিন মিলিয়ে ১১০ রকমের ডিশ ছিল অনুষ্ঠানে।
অমিত ভাটিয়া-বনীষা মিত্তল
খরচ প্রায় ৩৫০ কোটি
ফ্রান্সের ভার্সাই প্যালেসে হয়েছিল বিয়ের অনুষ্ঠান। যে প্যালেসে লক্ষ্মী মিত্তলের মেয়ে বনীষার বিয়ের অনুষ্ঠান ছাড়া আর কোনও প্রাইভেট অনুষ্ঠান পালন করা হয়নি কখনও। বিয়ের দিন পারফর্ম করেছিলেন শাহরুখ খান, ঐশ্বর্যা রাই বচ্চন, অক্ষয় কুমার-সহ আরও অনেক বলিউড তারকা। কোরিওগ্রাফ করেছিলেন ফারহা খান। মণ্ডপ সাজানো, অতিথি আপ্যায়ন সব মিলিয়ে খরচ ৩৫০ কোটি। এতেই থামেননি লক্ষ্মী মিত্তল। ভাগ্নী সৃষ্টি মিত্তলের বিয়েতে খরচ করেছিলেন ৫০০ কোটি টাকা।
ললিত তনবার-যোগিতা জৌনপুরিয়া
খরচ প্রায় ২৫০ কোটি
শুধু বিজেপি নেতা নয়, কংগ্রেস নেতা কুঁয়র সিংহ তনবারও ছেলের বিয়েতে খরচ করেছিলেন ২৫০ কোটি। আমন্ত্রিত অতিথি ৩০ হাজার। শুধু তাই নয়, কনের বাড়ি থেকে উপহার হিসেবে ললিত পেয়েছিলেন বিশাল পরিমাণ নগদ, যা প্রায় ৪২৯টা হেলিকপ্টারের দামের সমান!
মুকিত তেজা-বিনীতা অগ্রবাল
খরচ প্রায় ১৩০ কোটি
মেয়ের বিয়ের জন্য কোনও হোটেল নয়, গোটা একটা আইল্যান্ডই নিয়েছিলেন কোটিপতি প্রমোদ অগ্রবাল। ক্যালিফোর্নিয়ার সান ক্লিমেন্ট আইল্যান্ডে হয়েছিল বিনীতা এবং মুকিতের বিয়ে। অনুষ্ঠানে পারফর্ম করেছিলেন শাকিরা। দিল্লি এবং মুম্বই থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ডেকরেশন ডিজাইনারদের। পুরো অনুষ্ঠানের যাবতীয় ডেকরেশনের দায়িত্বে ছিলেন সুমন্ত জয়কৃষ্ণণ।
বিক্রম চাটওয়াল-প্রিয়া সচদেব
খরচ প্রায় ১০০ কোটি
এত টাকা খরচ করে বিয়ে করেছিলেন বটে বিক্রম! কিন্তু শেষমেশ আর টিকিয়ে রাখতে পারেননি। অভিনেতা এবং হোটেলিয়র বিক্রম বিয়ের জন্য আনিয়েছিলেন ৫০ হাজার কিলো ফুল এবং তিন হাজার মোমবাতি! দূর-দূরান্তের অতিথিদের জন্য ব্যবস্থা করেছিলেন প্রাইভেট জেটের। আর না করে উপায়ও ছিল না! অতিথির তালিকায় শাহরুখ খান, নাওমি ক্যাম্পবেল থেকে গ্রিসের প্রিন্স নিকোলাসও ছিলেন। তবে বিক্রম-প্রিয়া বিদেশে নয়, দেশের মধ্যেই আয়োজন করেছিলেন বিয়ের। উদয়পুরের এক দুর্গে আয়োজন করা হয়েছিল পুল পার্টির। সঙ্গে ছিল ট্রাইবাল নাচ। বিয়ের মূল অনুষ্ঠান হয়েছিল দিল্লিতে।
সিদ্ধার্থ রেড্ডি-মল্লিকা রেড্ডি
খরচ প্রায় ১০০ কোটি
অনুষ্ঠানের শুরুটা হয়েছিল বলিউড স্টাইলে, কিন্তু মূল বিয়েটা ট্র্যাডিশন মেনেই করেছিলেন মল্লিকা-সিদ্ধার্থ। ‘জিভিকে গ্রুপ’এর মালিক কৃষ্ণ রেড্ডির নাতনি মল্লিকা। বর এবং কনে দু’জনেই সেজেছিলেন ডিজাইনার পোশাকে। শুধু তাই নয়, বিয়ের মণ্ডপের সাজও তৈরি হয়েছিল নামী ডিজাইনারের হাতে। আয়োজন করা হয়েছিল ক্ল্যাসিকাল নাচ-গানের। যশ চোপড়া থেকে অমিতাভ বচ্চন, কেউই বাদ যাননি আমন্ত্রিত অতিথির তালিকা থেকে।
দীপক কনোডিয়া-পায়েল বনসল
খরচ প্রায় ১০০ কোটি
রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার বসন্ত বনসলের মেয়ের বিয়ে বলে কথা! খরচ তো হবেই। তুরস্কে বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলেও মেনুতে কিন্তু ছিল ইন্ডিয়ান কুইজিন। ভারত থেকে ৩০ জন কুক এবং ১৩০ জন সহকারীকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। মেয়ের বিয়ের মণ্ডপ সাজাতে এক লক্ষ ফুল আনিয়েছিলেন বসন্ত। উপরি পাওনা ছিল সেলিনা জেটলি এবং ঈশা কোপিকরের পারফরম্যান্স।