আয়না ২৪ ডেস্ক
নিরাপত্তা হুমকিতে পড়লে আবারও ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ে জবাব দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরদিনই ক্ষেপণাস্ত্র ও রাডার ব্যবস্থার সমন্বয়ে সামরিক মহড়া শুরু করেছে ইরানি সামরিক বাহিনী। ইরানকে বিশ্বের অন্যতম সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষক দেশ হিসেবে উল্লেখ করেছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস। নতুন নিষেধাজ্ঞা ইরানের প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের সতর্কবার্তা বলে উল্লেখ করেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরদিনই ইরানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সেমনান প্রদেশে সামরিক মহড়া করেছে ইরানি রেভুলিউশনারি গার্ড। কমান্ড, কন্ট্রোল ও সাইবার হামলা প্রতিরোধ ব্যবস্থার পাশাপাশি, ক্ষেপণাস্ত্র ও রাডার প্রযুক্তিকেও এ মহড়ায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রসহ ইরানের জন্য হুমকি যেকোনো দেশের ওপর হামলা চালানোর মতো সক্ষমতা তেহরানের রয়েছে দাবি করে সামরিক বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান- নিরাপত্তা হুমকিতে পড়লে ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ে উপযুক্ত জবাব দেবে ইরান।
ইরানি রেভুলিউশনারি গার্ডের অ্যারোস্পেস ইউনিটের ব্রিগে. জেনা. আমির আলি হাজিজাদেহ বলেন, ‘অপমানজনক নিষেধাজ্ঞা ও হুমকি মোকাবিলায় আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত। ইরানের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছি। ইরানের বিরুদ্ধে শত্রুদের যেকোনো সামরিক পদক্ষেপ দেখলেই তাদের লক্ষ্য করে আমাদের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো গর্জে উঠবে।’
ইরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর তেহরানের পাল্টা হুঁশিয়ারির প্রশংসা করেছেন দেশটির পার্লামেন্টের স্পিকার আলি লারিজানি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফের বক্তব্যকে সমর্থন করে লারিজানি বলেন- সাম্প্রতিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষায় পরমাণু চুক্তি লঙ্ঘিত হয়নি; বরং, নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্রই চুক্তির লঙ্ঘন করেছে।
আলি লারিজানি বলেন, ‘ইরান যুক্তরাষ্ট্রের কোনো হুমকির তোয়াক্কা করে না। প্রতিরোধই দেশটির জন্য উপযুক্ত জবাব। ওয়াশিংটন তেহরানের প্রতি যা করেছে যা করেছে, তা অপরিপক্ব আচরণ ছাড়া কিছু নয়।’
ইরানকে বিশ্বে সন্ত্রাসের বড় পৃষ্ঠপোষক দেশ হিসেবে উল্লেখ করেছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস। ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সাম্প্রতিক উত্তেজনা সত্ত্বেও, এই মুহূর্তে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সেনা উপস্থিতি বাড়ানোর পরিকল্পনা নেই বলে শনিবার জাপানের টোকিওতে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান তিনি।
ট্রাম্প প্রশাসন শুধু ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার জেরেই ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়নি, বরং ইয়েমেনে শিয়া হাউথি বিদ্রোহীদের প্রতি তেহরানের সমর্থনও নিষেধাজ্ঞা আরোপের অন্যতম কারণ বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের বিশ্লেষণে উঠে এসেছে।
নিষেধাজ্ঞায় থাকা ২৫ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের যুক্তরাষ্ট্রে উল্লেখযোগ্য বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড না থাকায় তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না। তবে, নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে নতুন মার্কিন প্রশাসন ইরানের প্রতি সতর্কবার্তা দিলো বলে বিবিসি’র বিশ্লেষণে উল্লেখ করা হয়েছে