আয়না২৪ ডেস্ক
নতুন আরেক সৌরজগতের সন্ধান পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন নাসার কিজ্ঞানীরা। পৃথিবী থেকে মাত্র ৩৯ হাজার আলোকবর্ষ দূরে এর অবস্থান। সেই সৌরজগতে রয়েছে পৃথিবীর মতোই সাতটি গ্রহ, যারা ট্র্যাপিস্ট–১ নামে এক নক্ষত্রের চারপাশে পাক খাচ্ছে। ওই সাতটি ‘পৃথিবী’তে জীবনধারণের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে। তাই বিজ্ঞানীদের ধারণা, সেখানে প্রাণ থাকলেও থাকতে পারে। বুধবার ‘নেচার’ নামে একটি সাময়িকীতে এই আবিষ্কারের কথা প্রকাশিত হয়েছে।
বেলজিয়ামের লিয়েজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক–লেখক মাইকেল গিলন জানিয়েছেন, ‘এর আগে স্থলজ গ্রহ ছিল মাত্র ৪টি। তাও শুধু আমাদেরই সৌরজগতে। এখন আমাদের চোখের সামনে পৃথিবীর মতো আকারের ৭টি গ্রহ রয়েছে। সেখানে জল এবং জীবন থাকার সম্ভাবনাও রয়েছে। যদি নাও থাকে, যা আছে, যথেষ্ট মজাদার।’ নতুন সৌরজগতের কেন্দ্রে থাকা ট্র্যাপিস্ট–১–এর আয়তন সূর্যের ১০ ভাগের ১ ভাগ। আর উত্তাপ সূর্যের ৪ ভাগের ১ ভাগ। উত্তাপ বেশি হলে প্রদক্ষিণকারী গ্রহগুলো পুড়ে ছাই হয়ে যেত। কারণ এই নক্ষত্রের খুব কাছ থেকে পাক খাচ্ছে ৭ ‘পৃথিবী’। সবথেকে কাছের কক্ষপথে থাকা গ্রহ ট্র্যাপিস্ট–১–কে প্রদক্ষিণ করে ১ দিনে। সব থেকে দূরের কক্ষপথে থাকা গ্রহের সময় লাগে ২০ দিন। ট্র্যাপিস্ট–১–এর থেকে গ্রহগুলোর দূরত্ব কম থাকায় সেগুলোকে দেখায় অনেক বড়। সব মিলিয়ে গোটা ব্যবস্থা বেশ আঁটোসাঁটো। সৌরজগতের বাইরের কক্ষপথে থাকা গ্রহের আকাশে প্রতিদিন বাকি ৬টি গ্রহের ঘোরাফেরা ধরা পড়ে।
শুক্র, পৃথিবী আর মঙ্গলে সূর্যের যতটা তাপ আসে, নতুন সৌরজগতের তিনটি গ্রহেও ট্র্যাপিস্ট–১র ততটা উত্তাপ পৌঁছয়। বিজ্ঞানীদের মতে, এই তিনটির মধ্যে একটিতে প্রাণ থাকতে পারে। না থাকলেও উপযুক্ত পরিবেশে ভবিষ্যতে সেখানে প্রাণের সঞ্চার হতেই পারে। ট্রাপিস্ট ১-এর বয়স অন্তত ৫০ কোটি বছর। এখনও অন্তত ১০ লক্ষ কোটি বছর বাঁচবে নক্ষত্রটি। সূর্য সে তুলনায় অনেকটাই প্রবীণ। ১০০০ কোটি বছরের জীবন অর্ধেকটা পার করে দিয়েছে সে। আর কয়েকশ কোটি বছর পর সূর্যের জ্বালানি যখন ফুরিয়ে যাবে, তখন এই সৌরজগৎ ধ্বংস হয়ে যাবে। ট্রাপিস্ট ১ কিন্তু তখনও শিশু। এর হাইড্রোজেন ধীরে ধীরে পুড়ছে। তাই এর জীবন অনেক দীর্ঘ। ফলে তার কাছে প্রাণের সঞ্চার হওয়ার প্রচুর সময় থাকছে।