আয়না২৪ ডেস্ক
যখন জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সারা পৃথিবীতে নানা পদ্ধতি প্রয়োগ করা হচ্ছে সেখানে পাকিস্তানের তিন নাগরিক ৯৬টি সন্তানের বাবা । দীর্ঘ ১৯ বছর পরে পাকিস্তানের জনগণনা শুরু হয়েছে সম্প্রতি। সেখানেই ধরা পড়ে এই ব্যাপারটি।
পাকিস্তানে জনসংখ্যা দ্রুততার সঙ্গে বাড়ছে, এই তথ্য আগেই প্রকাশ পেয়েছিল। এই বিষয়ে নিজেদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছিল সে দেশের বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। কিন্তু এ সব বিষয় থেকে উদাসীন তিন পাকিস্তানি বাবার মধ্যে এক বাবা জানান, ‘আল্লাহ বলেছেন, তাই জন্ম দিয়েছি।’
দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে পাকিস্তানে জন্মের হার সবচেয়ে বেশি। বিশ্ব ব্যাংক এবং সরকারি সূত্র অনুসারে, পাকিস্তানে একজন নারীর গড়ে তিনটি সন্তান রয়েছে। জনসংখ্যার অনুপাতে যা খুব বেশি।
৩৬ সন্তানের বাবা গুলজার খান বলেন, ‘আল্লাহ পুরো বিশ্বকে এবং মনুষ্যজাতিকে তৈরি করেছেন, তাই আমি কেন বাচ্চা জন্ম দেওয়ার স্বাভাবিক প্রক্রিয়া বন্ধ করব?’ ইসলাম পরিবার পরিকল্পনাকে প্রতিরোধ করছে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
পাকিস্তানের উত্তর–পশ্চিমের বান্নুরের ৫৭ বছরের বাসিন্দা মাস্তান খান ওয়াজিরের তিন স্ত্রী। তিনজনই গর্ভবতী। ২২ সন্তানের বাবা এই ব্যক্তি বলেন, ‘আমরা আরও শক্তিশালী হতে চাই। আমার সন্তানদের ক্রিকেট খেলার জন্য অন্য কোনও বন্ধুর দরকার নেই, তারা নিজেরাই ক্রিকেটের পুরো দল।’
গুলজার খানের ভাই মাস্তান খান ওয়াজির ১৫ জন ভাই–বোনের মধ্যে একজন, তাঁর নিজেরই তিনটি স্ত্রী এবং ২২টি সন্তান। ভাইয়ের মতো তিনিও জানান, তাঁর নাতি–নাতনি সংখ্যায় যেন প্রচুর হয়, এমন যে গুনে শেষ করা না যায়। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন খাদ্য দেওয়ার এবং আমাদের রক্ষা করার। কিন্তু মানুষের বিশ্বাস নেই আল্লাহর ওপর।’
৩৮টি সন্তানের বাবা জান মহম্মদ ১০০টি সন্তানের বাবা হতে চান। তিনি বলেন, ‘বাবা হতে গেলে বয়স কোনও ব্যাপার নয়, ইচ্ছাশক্তিই আসল। আমি আরও মুসলিম সন্তানকে জন্ম দিতে চাই, মুসলিম জাতির কলেবর বাড়াতে চাই, যাতে শত্রুরা মুসলিম সম্প্রদায়কে ভয় পায়। মুসলিম সম্প্রদায়ের উচিত আরও বেশি করে সন্তানের জন্ম দেওয়া।’
১৯৯৮ সালে পাকিস্তানে যখন শেষ জনগণনা হয়, সেই সময় পাকিস্তানের জনসংখ্যা ছিল ১৩.৫ কোটি। ১৯ বছর পরে ফের জনগণনা শুরু হয় পাকিস্তানে, যা শেষ হবে জুলাইয়ে। সরকারি মতে যা ২০ কোটি হবে বলে জানা গিয়েছে। তারই মধ্যে তিন পাক নাগরিকের ৯৬টি সন্তান পাকিস্তান সরকারকে ভাবিয়ে তুলেছে। যদিও নিরুত্তাপ তিন পাক নাগরিক জানান, ‘আল্লাহর ইচ্ছাতেই সব কিছু।’ পাকিস্তানে এই জন বিস্ফোরণের দায় যাদের, সেই বাবারা অবশ্য এতটুকু অনুতপ্ত নন।