আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইভানকার বাবা ডোনাল ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। বাবা প্রেসিডেন্ট সেই সূত্রে ইভানকা হোয়াইট হাউসের বাসিন্দা। কিন্তু হোয়াইট হাউসে প্রবেশের সময়ই তিনি নাকি যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যতে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। তাঁর এই পরিকল্পনা সম্পর্কে ইভানকা নাকি তাঁর স্বামী জেরাড কুশনারের সঙ্গেও কথা বলেছিলেন। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি বই থেকে এমন তথ্যই পাওয়া যায়।
সিএনএনে প্রচারিত এক খবরে বলা হয়েছে, ‘ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি : ইনসাইড দ্য ট্রাম্প হোয়াইট হাউস’ নামে প্রকাশিত ওই বইটিতে ইভানকার এমন পরিকল্পনার কথা প্রকাশ হয়। এই বইটির লেখত মাইকেল ওলফ। বইটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের ভেতর-বাইরের প্রায় ২০০ সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে তিনি এই বইটি লেখেন।বইটিতে রয়েছে হোয়াইট হাউসের উল্লেখযোগ্য ঘটনার টুকরো টুকরো বিষয়াবলী। এরমধ্যে ডোনাল্ট ট্রাম্পের বড় মেয়ে এবং তাঁর স্বামীর মধ্যে সম্পাদিত চুক্তির বিষেয়েও তথ্য রয়েছে।
বইটি প্রকাশের আগেই হাতে পেয়েছে পশ্চিমা বিশ্বের বিখ্যাত সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান। গণমাধ্যমটির খবরে বলা হয়েছে, ‘ ট্রাম্পের মেয়ে ও তাঁর স্বামী জেরাড কুশনারের মধ্যে একটি চুক্তি হয় যাতে তাঁরা ঠিক করেছিলেন, ভবিষ্যতে যদি মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার কোনো সুযোগ আসে, তবে তাতে অংশ নেবেন ট্রাম্প কন্যা ইভানকা।’
কিন্তু কোন উৎস থেকে এমন তথ্য পাওয়া গেছে, তা উল্লেখ করা হয়নি ওই বইতে। বইটিতে কেবল বলা হয়, ‘ যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হলে তা হবেন ইভানকা, হিলারি নন।’
শুধু ইভানকাই যে এমন স্বপ্ন দেখছেন তা কিন্ত নয়। ইভানকার মা-বাবাও তাঁদের মেয়েকে নিয়ে এমন স্বপ্নই দেখেন বলে উল্লেখ করা হয়। ইভানকার মা মেলানিয়া তাঁর মেয়ের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক দূরদর্শিতা প্রসঙ্গে লেখা স্মৃতিকথা ‘রেইজিং ট্রাম্প’-এ বলেছেন, ‘ইভানকা ওভাল অফিসের পুরোটাই চালাতে সক্ষম। আর সেটা ১৫ বছরের মধ্যেই সম্ভব।’ মেলানিয়ার বাবা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও মেয়ের উচ্চসিত প্রশংসা করে লিখেছেন, ‘কে জানে একদিন হয়তো সে–ই (মেলনিয়া) হবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট …।’
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্পের মেয় ইভানকা ও তাঁর স্বামী কুশনারের মধ্যকার এমন আলাপের খবর কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না স্টিভ ব্যানন। তিনি ট্রাম্পের চিফ কৌশলবিদ।
ট্রাম্পের মল কৌশলবিদ হলেও তিনি ইভানকা ও কুশনারের বিরোধী হিসেবে পরিচিত। এজন্য তিনি এই ইভানকা ও কুশনার দম্পতির জন্য ‘জাভানকা’ নামটি চালু করেন। কৌতূকপ্রদ এই নাম হোয়াইট হাউসে এখন সবচেয়ে বেশি আলোচিত ও উচ্চারিত। ভ্যানিটি ফেয়ার সাময়িকীতে গেল ডিসেম্বরে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের সব বাজে সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছেন মেয়ে ইভানকা এবং তাঁর স্বামী।
তবে প্রকাশিতব্য ওই বইটির বিষয়ে নেতিবাচক ভাষ্য দিয়েছে হোয়াইট হাউস। হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব সারাহ স্যান্ডার্স বুধবার এপ্রসঙ্গে ডাকা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, এই বইটি মিথ্যায় পরিপূর্ণ। বইটি এমন মানুষের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে লেখা, যাঁদের হোয়াইট হাউসে প্রবেশাধিকার নেই কিংবা প্রভাবও নেই।
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির আলোচনায় আসেন মেয়ে ইভানকা। বাবার আশির্বাদে তিনি ট্রাম্প প্রশাসনে যোগ দেন। বাবা প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে ইভানকা তাঁর নিজের ফ্যাশন ও ব্যবসা নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন।