আয়না২৪ ডেস্ক
নির্বাচন পর্বের প্রায় পুরোটা জুড়েই তিনি ছিলেন বিতর্কের কেন্দ্রে। জনমত সমীক্ষাগুলোতেও তাঁকে প্রায় সকলেই পিছিয়ে রেখেছিল। অথচ নির্বাচনের ফল বেরলে দেখা গেল, সেই ডোনাল্ড ট্রাম্পকেই প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত করেছে আমেরিকাবাসী।
ভোটের আগে থেকেই তাঁর কেচ্ছা-কেলেঙ্কারির ঝাঁপি খুলতে থাকে। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলতে শুরু করেন একের পর এক মহিলা। প্রকাশ্যে তিনি সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করলেও, কেচ্ছা কিছুতেই তাঁর পিছন ছাড়েনি।
সত্তর বছর বয়সী ট্রাম্পের তিন বিয়ে। সব মিলিয়ে পাঁচ ছেলেমেয়ে, আট নাতি-নাতনি। প্রথম দু’টি সম্পর্ক বিবাহ বিচ্ছেদ পর্যন্ত গড়ায়। প্রথম বিয়ে তিনি ১৯৭৭-এ করেছিলেন। পাত্রীর নাম ছিল ইভানা জেলনিকোভা। তাঁদের তিন সন্তানও রয়েছে। কিন্তু, ১৯৯২-তে সেই ইভানার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে ফেলেন ট্রাম্প। তত দিনে তিনি মারলা ম্যাপলেসের প্রেমে পড়েছেন।
১৯৯৩-এ মারলার সঙ্গে তাঁর বিয়েও হয়। যদিও সেই সম্পর্কও টেঁকাতে পারেননি ট্রাম্প-মারলা। সন্তানের জন্মও দেন মারলা। তবু, এ সবের মধ্যেই ১৯৯৮-এ ট্রাম্প ফের প্রেমে পড়েন। পাত্রীর নাম মেলানিয়া কাউস। তত দিনে দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে। ২০০৫-এ মেলানিয়াকে বিয়েও করেন। এবং এই তৃতীয় বিয়েটি টিঁকে যায়। এই মুহূর্তে ট্রাম্পের সব মিলিয়ে আট জন নাতি নাতনি। দ্বিতীয় স্ত্রী এখনও বলেন, ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর খুব ভাল বন্ধুত্ব ছিল।
তিন তিন বার বিয়ে করলেও বাইরের প্রতি বেশ মন ছিল ট্রাম্পের। এ বারের নির্বাচনের আগে প্রায় ১২ জন মহিলা তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছেন। কখনও চুমু খাওয়ার অভিয়োগ, তো কখনও স্কার্টের ভেতর হাত ঢুকিয়ে দেওয়ার। বিমানের ভেতর হোক বা হোটেলের ঘর— ট্রাম্পের যে মহিলাকে পছন্দ হয়েছে, রেওয়াত পাননি তাঁদের কেউই। প্রায় সকলকেই জোর করে জড়িয়ে ধরে চুমু খেয়েছেন ট্রাম্প। এমনকী, অনেককে টাকার বিনিময়ে রাত কাটানোর প্রস্তাবও দিয়েছিলেন। যদিও এই সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। কিন্তু, কেচ্ছার ঝাঁপি খুলেতেই থেকেছে।
নারী-বিদ্বেষী বলে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিলই। যৌন হেনস্থার অভিযোগেও তিনি বারে বারেই বিদ্ধ হয়েছেন। আর সে সবের মধ্যেই একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে একটি মার্কিন দৈনিক। সেই ভিডিওতে ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, ‘‘সুন্দরী মহিলা দেখলেই আমি চুমু খেতে শুরু করি। কোনও রকম অপেক্ষা না করেই। এ যেন চুম্বকের মতো আকর্ষণ।’’ নিজের আচরণের সমর্থনে ট্রাম্পের যুক্তি, ‘‘তুমি যদি তারকা হও, কেউ কিছু মনে করবে না। যা খুশি করতে পারো।’’
সেই ট্রাম্প এখন আমেরিকার রাষ্ট্রপতি। বিতর্ক যে তার পিছু ছাড়বে না, তা সকলেরই জানা।