আয়না ২৪ ডেস্ক
এবার ভারতের নাকের ডগায় ভিড়েছে চীনের ডুবোজাহাজ। ভারতীয় সমুদ্রসীমা ব্যবহার করেই পাকিস্তানের করাচি বন্দরে ভিড়েছে বেইজিংয়ের এ যুদ্ধযান। এতদিন ভারত মহাসাগরীয় এলাকায় ডুবোজাহাজের ঘোরাফেরা, বিশেষ করে প্রতিবেশী দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলংকার কলম্বো বন্দরেও হরহামেশাই পৌঁছে যাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিল ভারত সরকার। সেই কপালের ভাঁজ এবার আরও বেড়ে গেছে।
চীনের ডুবোজাহাজ সোজা চলে আসছে পাকিস্তানের করাচি বন্দর পর্যন্ত! আর এ কাজেও তারা ভারতীয় মহাসাগর এলাকাকেই ব্যবহার করছে। অর্থাৎ, চারদিক থেকে ভারতের প্রায় ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে তাদের ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’।চীনের নৌ বাহিনী পিপলস রিপাবলিক আর্মি-নেভি (পিএলএ-এন) একটি ইয়ুন-ক্লাস ৩৩৫ সাবমেরিন করাচি বন্দরে প্রবেশ করে। এ জন্য সাবমেরিনকে ভারতের খুবই কাছে আরব সাগরীয় এলাকা পেরোতে হয়। করাচি বন্দরে চীনের সাবমেরিনটি এক সপ্তাহ অপেক্ষা করছে। প্রয়োজনীয় রসদ গ্রহণ করার পড়ে সাবমেরিনটি সমুদ্রপথে যাত্রা শুরু করে। গত সেপ্টেম্বর থেকে কলম্বোতে একইভাবে অবস্থান শুরু করেছিল চীনের আরেকটি সাবমেরিন। এ নিয়ে ভারত বারবার শ্রীলংকা সরকারের কাছে নিজেদের উদ্বেগ জানিয়ে আসছে। পাকিস্তানের ক্ষেত্রে মোদি সরকার কি পদক্ষেপ নেবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।
ভারত মহাসাগরে চীনের সাবমেরিনের উপস্থিতি বেড়ে যাওয়ার বিষয়টির ওপর কড়া নজরদারি রাখলেও, ভারত সরকারেরও এক জায়গায় হাত-পা বাঁধা। কারণ, আন্তর্জাতিক সমুদ্র এলাকা তো সব দেশের জন্যই খোলা এবং বিশেষ দেশের ‘সার্বভৌম’ নিয়ন্ত্রণসীমার বাইরে। ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রধান রবিন ধাওয়ান বলেন, এ অঞ্চলে চীনা যুদ্ধজাহাজের উপস্থিতি আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। তার চলাফেরা সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রয়েছে। আমাদের জন্য কোনো চ্যালেঞ্জ বা হুমকি সৃষ্টি করছে কিনা- তা খতিয়ে দেখছি।
নৌ বাহিনীর আরেক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের চারটি যুদ্ধজাহাজও দীর্ঘ যাত্রাপথে বর্তমানে দক্ষিণ চীন সাগরে অবস্থান করছে। কিন্তু যাই হোক না কেন, ভারতীয় মহাসাগর এলাকায় নিজেদের আধিপত্য বাড়ানোর জন্য চীন ও ভারত যুদ্ধে ব্যস্ত। পাকিস্তানে চীনের ডুবোজাহাজের উপস্থিতি দু’পক্ষের মধ্যে পরিস্থিতি আরও উত্তেজনা কয়েকগুণ বাড়িয়ে তুলল। ’
করাচিতে অবস্থান করা চীনের সাবমেরিনটি ডিজেল-ইলেকট্রিক শক্তিচালিত, নিউক্লিয়ার শক্তিচালিত নয়। তবে এ ধরনের ইয়ুন-ক্লাস ডুবোজাহাজে গতি বৃদ্ধির জন্য বায়ু-নিরপেক্ষ প্রোপালসান (এআইপি) ব্যবস্থা রয়েছে, যার ফলে পানির নিচে সাবমেরিনটির সহ্যশক্তি এবং ধ্বংস ক্ষমতাও বেশি।
নিউক্লিয়ার সাবমেরিন যেখানে টানা কয়েক মাস পানির নিচে থাকতে পারে, সেখানে ডিজেল-ইলেকট্রিক ইয়ুন-ক্লাস সাবমেরিনকে অক্সিজেন নেয়া এবং ব্যাটারি চার্জ দেয়ার জন্য কয়েকদিন পরপর পানির উপরে আসতে হবে। তবে নিজেদের প্রতিবেশি পাকিস্তনের সঙ্গে সাবমেরিন সংক্রান্ত সম্পর্ক সম্প্রতি শক্তিশালী করেছে চীন।