আয়না২৪ ডেস্ক
ফিরে আসার কোনো আশাই ছিল না। বরং মৃত্যুকেই নিয়তি ভাবতে শুরু করেছিলেন চব্বিশ বছরের তরুণী নাদিয়া। পুরো নাম নাদিয়া মুরাদ। ঠিক তিন বছর আগে ইরাকের উত্তর প্রান্ত ইয়াজিদি গ্রাম থেকে আইএস জঙ্গিরা তাঁকে বন্দী করেছিল। পরে তাঁকে যৌনদাসী হিসাবে বন্দী ও বিক্রি করা হয়েছিল। কিন্তু কয়েক মাসের মাথায় নাদিয়া আইএস জঙ্গিদের চোখে ধুলো দিয়ে পালাতে সক্ষম হন। তাঁর সঙ্গে ছিল আরেক বন্দী তরুণী।
তবে কীভাবে তিনি সফল হলেন তা জানা গিয়েছে নিরাপত্তা পরিষদের পক্ষ থেকে।
নিরাপত্তা পরিষদ সূত্রে পাওয়া খবর, ইরাকের কোজো এলাকার স্কুল ভবনে সন্ত্রাসবাদীরা তাঁকে আটক করে রেখেছিল। সেখানে বহু কাকুতি-মিনতি করে কান্নায় ভেঙে পড়লেও সন্ত্রাসীদের মন গলেনি। এজন্য এই ঘৃণ্য সন্ত্রাসীদের হাত থেকে মুক্তিও মেলেনি তাঁর।
তরুণী নাদিয়া মুরাদ ধরেই নিয়েছিলেন তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করা হবে। শুক্রবার নাদিয়াকে ঘিরে উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে তাঁর নিজ গ্রাম। নাদিয়া ইতিমধ্যে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের সাকারোভ পুরস্কার পেয়েছেন। তাঁর সঙ্গে আরও একজন ওই গ্রামেরই তরুণী লামিয়া অজি বাশার এই পুরস্কার পেয়েছেন। এই পুরস্কার দেওয়া হয় ভাবনার ধীনতার জন্য।
নাদিয়া মুরাদের বয়স এখন ২৪। ২০১৪ সালের গ্রীষ্মকালে আইএস তাঁকে বন্দী করেছিল। আর ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে এই সন্ত্রাসবাদীদের চোখে ধুলো দিয়ে পালাতে সক্ষম হন তিনি। তারপর ২০১৫ সালে নিরাপত্তা পরিষদের দারস্থ হন তিনি। নাদিয়ার সঙ্গে লামিয়াও পালাতে সক্ষম হন।
একটি মাইন বিস্ফোরণের ফলে তাঁর একটি চোখ নষ্ট হয়ে যায়। সে অবস্থাতেই এই ১৯ বছরের তরুণী আইএস–এর খপ্পর থেকে পালাতে সক্ষম হন। তিনিও নাদিয়ার গ্রামেরই মেয়ে। তাঁরা পালাতে সক্ষম হলেও তিন হাজারের বেশি মহিলা আটক রয়েছে ওই সন্ত্রাসবাদীদের হাতে। এই তথ্য দেওয়ার পাশাপাশি নাদিয়া আইনজীবী হতে চান বলে নিরাপত্তা পরিষদকে জানিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশনের আইনজীবী আমাল ক্লুনি জানান, ‘আইএস–এর অপরাধ নিয়ে ইরাক সরকার ও আন্তর্জাতিক মহলের তদন্ত করা উচিত।’