• Home  / 
  • বরিশাল  / 

বরগুনার তালতলী উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মিন্টু অপসারণ

জুলাই ১৭, ২০১৮
Spread the love

নিজস্ব প্রতিনিধি

বরগুনার তালতলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মনিরুজ্জামান মিন্টুর অসদাচারণ, অনিয়ম দুর্নীতিসহ ১৫টি অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় তার পদ থেকে অপসারণ করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। গত রোববার বিকেলে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন বরগুনা জেলা প্রশাসকের দপ্তরে এসে পৌছেছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।
গত ৮ জুলাই ২০১৮ স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের উপ সচিব আঞ্জুমান আরা স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে তার দায়িত্ব থেকে অপসারণ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সদ্য জারিকৃত প্রজ্ঞাপন চিঠি সূত্রে জানা যায়, তালতলী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মিন্টুর বিরুদ্ধে আনিত বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে ২০১৭ সালের ১৭ এপ্রিল স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মোঃ শহিদুজ্জামানকে তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে তদন্তের দায়িত্ব দেয়। তদন্ত কর্মকর্তা বিভাগীয় কশিমনার মো. শহীদুজ্জামান সরেজমিন তদন্তের মাধ্যমে স্থানীয় ভুক্তভোগী ও স্বাক্ষীদের বক্তব্যের ভিত্তিতে ২০১৭ সালের ১ আগস্ট একটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।

বিভাগীয় কমিশনার মোঃ শহিদুজ্জামান তার তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, উপজেলা চেয়ারম্যান মিন্টুর বিরুদ্ধে আনিত ১৬টি অভিযোগের মধ্যে ১৫টি অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। এসব অভিযোগের মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মিন্টু কর্তৃক তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজি তোফায়েল হোসেন, তালতলী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবু কমলেশ এবং এসআই আঃ খালেক এবং বড়বগী ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অফিস সহকারী মো. জসীম উদ্দিন মধুকে মারধরের ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। এছাড়া তালতলী সিনিয়র মাদরাসার দপ্তরী মো. শাহজাহান মিয়া, রাখাইন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (আরডিএফ)-এর চেয়ারম্যান উসিৎ মং, ছোট অংকজানপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুন্দর আলী ও তার ছেলে সবুজকেও মারধর করেছেন বলে তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেছে। অপরদিকে উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মিন্টু তালতলী শহরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩ একর জমি দখল করে হাওলাদার স’-মিল স্থাপন করেছেন। উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের কাছ থেকে অবৈধ উৎকোচ নিয়েছেন। গভীর নলকূপ বরাদ্দ দেয়ার নামে দুই শতাধিক স্থানীয় গ্রামবাসীর কাছ থেকে ১৫-২০ হাজার টাকা করে উৎকোচ নিয়েছেন। মোঃ মনিরুজ্জামান মিন্টু তার ভাই তারিকুজ্জামান তারেক ও নয়ন ব্যাপারিকে নিয়ে এলাকায় ইয়াবাসহ মাদক ব্যাবসা চালিয়েছেন। উপজেলা চেয়ারম্যান মিন্টুর প্রভাব খাটিয়ে তার পিতা এ কে এম কামরুজ্জামান তালতলী বন্দর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানিজিং কমিটির সভাপতি হয়েছেন বলেও তদন্তে প্রমানিত হয়েছে।

প্রজ্ঞাপন জারি চিঠি পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে তালতলী উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মনিরুজ্জামান মিন্টু বলেন, তার মেয়ে অসুস্থ থাকায় তাকে নিয়ে তিনি বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন। তবে জনগনের ভোটে নির্বাচিত একজন জনপ্রতিনিধিকে এভাবে অপসারণ করা যায় না। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে রিট করা হবে।