আয়না২৪ প্রতিনিধি, আমতলী (বরগুনা)
আমতলী ও তালতলী দুই উপজেলায় গত দুদিনের প্রবল বর্ষণে ৩০টি ইটভাটার প্রায় ১ কোটি কাঁচা ইট বৃষ্টির পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে ভাটা মালিকদের প্রায় দেড় কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে ভাটা মালিকেরা জানিয়েছেন।
আমতলী উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতি সূত্র জানায়, আমতলী ও তালতলী উপজেলায় প্রায় ৩০টির মত ইটভাটা রয়েছে। এসব ভাটায় বছরে প্রায় ১০ কোটি ইট উৎপাদন হয়। গত শুক্র ও শনিবার বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে টানা দুদিনের ভারী বর্ষণ হয়। এতে সবগুলো ভাটায় পোড়ানোর জন্য অপেক্ষমান প্রায় ১ কোটি কাঁচা ইট ভিজে গলে গেছে।
কয়েখজন ভাটা মালিক জানান, বৃষ্টি শুরু আগে তাঁরা এসব কাঁচা ইট পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিয়ে পানি থেকে রক্ষার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু বৃষ্টির তীব্রতা এতোটাই ছিল যে পলিথিন দিয়েও তা রক্ষা করা যায়নি। এছাড়া প্রবল বর্ষণে মাঠে পানি জমে যাওয়ায় স্তুপ করে রাখা ইটও পানিতে গলে মাঠের মধ্যে ছড়িয়ে যায়।
সোমবার সকালে সরেজমিনে আমতলীর উরশিতলা এলাকায় আকন ব্রিকস, দক্ষিণ পশ্চিম আমতলীর সাগর ব্রিকস, হলদিয়ার হিজবুল্লাহ ব্রিকস’ ও সেকান্দারখালীর ’অটো ব্রিকস’, গুলিশাখালীর ’এন বি এন ব্রিকস’ নামে বেশ কয়েকটি ইটভাটা ঘুরে দেখা গেছে, লাখ লাখ কাঁচা ইট বৃষ্টির পানিতে গলে মাঠে পড়ে আছে। পলিথিন দিয়ে শুকনো কাঁচা ইট ঢেকে রক্ষার চেষ্টা করা হলেও তা শেষ রক্ষা হয়নি।
আকন ব্রিকস এর মালিক মো. কামাল আকন জানান, বৃষ্টির পানিতে তাঁর ভাটার প্রায় সাড়ে ৪ লাখ কাঁচা ইট পানিতে গলে মাঠের মধ্যে মিশে গেছে। এতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৫ লাখ টাকা। তিনি আরো জানান, মাঠের মধ্যে গলে যাওয়া ইটের মাটি সরাতে আরো প্রায় ১ লাখ টাকা খরচ হবে।
গুলিশাখালীর ’এন বি এম’ ইট ভাটার মালিক নুরুল ইসলাম জানান, তাঁর প্রায় ৪ লাখ টাকা মূল্যের সাড়ে ৩ লাখ কাঁচা ইট নষ্ট হয়েছে। সাগর ব্রিকস এর ব্যবস্থাপক রাজিব খান জানান, বৃষ্টির পানিতে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ ইট গলে মাটিতে মিশে গেছে। তিনি আরো জানান, প্রথম দিন পলিথিন দিয়ে কাঁচা ইট ঢেকে দিয়েছিলেন কিন্ত মাঠে পানি জমে সব গলে গেছে। এখন নতুন করে ইট তৈরিতে আরো প্রায় ১৫ দিন সময় লাগবে।
তালতলীর লাউপাড়ায় এসটিডি ভাটার মালিক আবদুস ছোবাহান জানান, বৃষ্টির পানিতে তাঁর ভাটার প্রায় দেড় লাখ কাঁচা ইট নষ্ট হয়েছে। এতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা।
আমতলী উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি সাগর ব্রিকস এর মালিক নাজমুল আহসান নাননু জানান, আমতলী ও তালতলী দুই উপজেলায় ছোট বড় প্রায় ৩০টির মত ইট ভাটা রয়েছে। আকস্মিক বৃষ্টিতে এসব ভাটার প্রায় ১ কোটি কাঁচা ইট পানিতে গলে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। এতে আনুুমানিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় দেড় কোটি টাকা। গলে যাওয়া ইটের মাটি সরাতে আরো প্রায় অর্ধকোটি টাকা শ্রমিকের পেছনে ব্যয় হবে। তাছাড়া এলাকায় যে পরিমান ইটের চাহিদা রয়েছে সে চাহিদা এ বছর মে,টানো সম্ভব হবে না ফলে ইটের দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করেছেন তিনি।