বরগুনা প্রতিনিধি
ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ মোকাবিলায় উপকূলীয় জেলা বরগুনাসহ আশপাশের এলাকায় ৫ নম্বর বিপদ সংকেত জারি রয়েছে। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে দুর্যোগ প্রস্তুতি কমিটির সভা হয়েছে। সভায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সকল সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
এছাড়া সভায় জেলার সকল আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি গবাদিপশুর জন্য নিরাপদ স্থানের ব্যবস্থা করা এবং প্রয়োজনে ঝুকিপূর্ণ উপকূলীয় এলাকা থেকে সাধার জনগণকে স্থানান্তর, বিশুদ্ধ পানি সংরক্ষণ, মেডিকেল টিম ও হাসপাতাল প্রস্তুত রাখার জন্য উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের সকল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিকে অনুরোধ জানানোহয়।
এদিকে রোববার রাতে বরগুনাসহ এর আশেপাশের এলাকায় মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হলেও সকাল থেকে আবহাওয়া থমথমে এবং দুপুরের পর থেকেই ঝড়ো বাতাস বইতে শুরুকরেছে।
এছড়াও বরগুনার নৌ পথে চলাচলরত সব ধরনের নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আবহাওয়া প্রতিকূল থাকায় চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার নদীবন্দরে ৭ নম্বর বিপদসংকেত এবং পায়রা ও মংলা সমুদ্র বন্দরে ৫নং বিপদ সংকেত থাকায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ কর্তৃপক্ষ এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। বরগুনা নৌ পরিবহন কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ আয়না ২৪ কে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি আরো জানান, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে সমুদ্র বন্দরগুলোতে ৫ ও ৭ নম্বর বিপদ সংকেত থাকায় বুধবার রাত থেকে বরগুনায় সকল ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে বলেও জানান তিনি।
দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে বরগুনার দু’টি রুটে চলাচলরত ফেরি বন্ধ করে দিয়েছে সড়ক ও জনপদ বিভাগ।
বুধবার সন্ধ্যা থেকে বরগুনার বড়ইতলা-বাইনচটকি ও পুরাকাটা-আমতলী রুটে চলাচলরত ফেরি দু’টি বন্ধ করে দেয় সড়ক ও জনপদ বিভাগ। এতে বরগুনার সঙ্গে সড়ক পথেরাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে বরগুনা সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজামুদ্দীন জানান, ঘূর্ণিঝড় মোরা`র প্রভাবে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে ফেরি চলাচল সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফেরি চালানোর নির্দেশ দেয়া হবে।
বরগুনার জেলা প্রশাসক মোহা. বশিরুল আলম ঘূর্নিঝড় মোরা মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে জানিয়ে বলেন, বরগুনার নদী ও সাগরতীরবর্তী এলাকায় বসবাসরত সকল মানুষকে মাইকিং করে সতর্ক করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার অধিক ঝুকিপূর্ণ সাগর তীরবর্তী এবং বলেশ্বর ওবিষখালী নদীর পার্শ্ববর্তী সকল বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, দুর্যোগ মোকাবেলায় এবং দুর্যোগ পরবর্তী উদ্ধার অভিযান পরিচালনার জন্য জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, রেড ক্রিসেন্ট, সিপিপি এবং ফায়ার সার্ভিসসদস্যদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এছাড়াও জেলার সকল আশ্রয়কেন্দ্রসহ স্কুল, কলেজ এবং মাদ্রাসা প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি গবাদিপশুর নিরাপদ স্থানের ব্যবস্থা করা এবং প্রয়োজনে উপকূলীয় এলাকা থেকেসাধারণ জনগণকে স্থানান্তর, বিশুদ্ধ পানি সংরক্ষণ, শুকনো খাবার, মেডিকেল টিম ও হাসপাতাল প্রস্তুত রাখার জন্য উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের সকল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাকমিটিকে অনুরোধ জানানো হয়।
তিনি আরো জানান, দুর্যোগ মোকাবেলায় ৮৭ মে. টন জিআর চাল নগদ দু’লাখ টাকা এবং ৩২ বান্ডিল ঢেউটিন মজুদ রাখা হয়েছে। এছাড়া আরও দুইশত মে. টন চাল, নগদআরও পাঁচ লাখ টাকা এবং তিনশ বান্ডিল ঢেউটিনের জন্যে চাহিদাপত্র পাঠান