আয়না২৪ প্রতিবেদন
আজ পয়লা রমজান। গতকাল সূর্য অস্ত যাবার পর পরই নতুন চাঁদ উদিত হয়ে রমজান মাসের সূচনা করেছে।
৬২২ খৃস্টাব্দের রবিউল আউয়াল মাসে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলায়হি ওয়া সাল্লাম মক্কা মুকাররমা থেকে প্রায় ২৯৬ মাইল উত্তরে অবস্থিত মদীনা মনওয়ারায় হিজরত করেন।
এখানে এসে তিনি জানতে পারেন, এখানকার ইয়াহুদীরা মুহররমের দশ তারিখ আশুরার দিনে সিয়াম পালন করে। তারা জানায়, তাদের নবী হযরত মূসা (আ.) বনী ইসরাঈলের হাজার হাজার মানুষকে জালিম রাজা ফেরাউনের কারাগার থেকে উদ্ধার করে লোহিত সাগরের ওপারে যেদিন নিয়ে গিয়েছিলেন সেদিন ছিল আশুরা। তাই তিনি এদিন কৃতজ্ঞতা ও মুক্তির নিদর্শনস্বরূপ সিয়াম পালন করতেন।
তাঁকে অনুসরণ করে ইয়াহুদীরা আশুরায় সিয়াম পালন করে আসছে। প্রিয়নবী সাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: মূসার ওপর আমাদের অধিকার তোমাদের চেয়ে অনেক বেশি।
সেই বছর আশুরা এলে তিনি এবং তাঁর সাহাবিগণ আশারায় সিয়াম পালন করলেন এর প্রায় সাড়ে সাত মাস পরে ৬২৪ খৃস্টাব্দের ১৫ ফেব্রুয়ারি মুতাবিক দ্বিতীয় হিজরীর ১৫ শাবান তারিখে রমাদান মাসে সিয়াম পালনের জন্য নির্ধারণ করে দিয়ে ইরশাদ করেন: রমাদান মাস, যাতে নাজিল হয়েছে মানুষের দিশারী, সত্পথের স্পষ্ট নিদর্শন এবং সত্য ও অসত্যের মধ্যে পার্থক্যকারী পবিত্র আল-কুরআন।
সুতরাং তোমরা যারা এই মাস প্রত্যক্ষ করবে তারা এতে সিয়াম পালন করবে। (সূরা বাক্বারা: আয়াত ১৮৫)।
সিয়াম শব্দের শব্দমূল সওম যার অর্থ বিরত থাকা। দৃঢ়সংকল্প করে যাবতীয় কামাচার, পানাহার ও পাপাচার থেকে সুবিহ্ সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত বিরত থাকাটাই হচ্ছে সিয়াম। এই সিয়ামকে ফারসীতে বলা হয় রোজা।
আত্মশুদ্ধি, সহিষ্ণুতা, সহমর্মিতা ইত্যাদি গুণ অর্জনের প্রত্যক্ষ প্রশিক্ষণ লাভ হয় রমজানে সিয়াম পালনের মাধ্যমে। আমরা এই মুবারক মাসকে জানাই খোশ আমদেদ।
রমজান মাস অনেক ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার স্মৃতি ধারণ করে রয়েছে। অধিকাংশ আসমানী কিতাব ও সহীফা নাজিল হয়েছিল রমজান মাসে। পহেলা রমজান হযরত ইব্রাহীম (আ.) ওপর নাজিল হয়েছিল সহীফা। হযরত ইব্রাহীম আলায়হিস্ সালাম মুসলিম জাতির জনক। তিনিই মক্কা নগরীর পত্তন করেন। তিনি আল্লাহ্র নির্দেশে কাবা শরীফ পুনঃনির্মাণ করেন এবং হজের ঘোষণা করেন।
প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: রমাদানের প্রথম দশক রহমতের, দ্বিতীয় দশক মাগফিরাতের এবং শেষ দশক দোযখের আগুন থেকে নাজাতের।