শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে নতুন প্রত্যয়

ডিসেম্বর ১৫, ২০১৭
Spread the love

নিজস্ব  প্রতিবেদক 

অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ার প্রত্যয়
 
 
 পরম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা মধ্যদিয়ে স্মরণ করলোর বাঙালী তাদের   শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের।সর্বস্তরের মানুষের উপন্থিতিতে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবানের মধ্যদিয়ে  যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি কার্যকর, জঙ্গির অর্থায়ন বন্ধসহ জামায়াত নিষিদ্ধ এবং দেশবিরোধী  ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়ানোসহ জঙ্গিবাদমুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য সোমনে রেখে  যথাযোগ্য মর্যাদায় গতকাল বৃহস্পতিবার শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করছে দেশবাসী।
 
বেদনায় আচ্ছন্ন হয়ে, শোকে মুহ্যমান হয়ে-  এক বেদনাবিধুর পরিবেশে জাতি স্মরণ করেছে  কাল দেশের শ্শরেষ্হীট সম্পদ শহীদ বুদ্ধিজীবীদের। কিন্তু তাতে ছিল না কোনো আক্ষেপ কিংবা হতাশা। বুদ্ধিজীবীদে নৃসংশ খুনের  শোক  এখন পরিণত হয়েছে দুর্দান্ত শক্তিতে।   দেশের পথে-প্রান্তরে এখন  দেশ মাতৃকার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হন্তারক রাজাকার-আলবদরদের প্রতি মানুষের প্রবল ঘৃণা-ধিক্কারের বহিঃপ্রকাশ অহরহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বুদ্জিীবীদের হন্তারক এসব   ‘নরঘাতক যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও রায় কার্যকরের দাবিই এখন মূখ্য চা্ওয়া এই জাতির।  শত প্রতিকূলকা, বাঁধা উপেক্ষা করে  একের পর এক যুদ্ধাপরাধী পাপিষ্ঠদের ফাঁসি কার্যকর করার মহান ঋদ্যোগ নিয়ে দেমকে এগিয়ে  দ্রুত নেওয়ায়   এবারের শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস স্বাথধীনতাকামী সিংহভাগ মানুণের কাছে একব ভিনন্ন মাত্রার।
 
 সরকারি প্রেসনোট অনুযায়ী,   সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রাষ্ট্রপতি সেখানে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়েও  থাকেন। এ সময় বিউগলে বাজানো হয়  করুন সুর। শহীদদের সম্মান জানাতে  সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে সেখানে। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো  শেষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ  যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন এবং তাদের খোঁজ-খবর নেন।
 
 
 রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এর আগে  স্মৃতিসৌধে পৌঁছালে মন্ত্রিপরিষদের কয়েকজন সদস্য, ডেপুটি স্পিকার, সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যরা তাঁকে স্বাগতও শুভেচ্ছা জানান।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে  উপস্থিছিলেন, জাতীয় সংসদের  ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া। এছাড়া কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী একেএম মোজাম্মেল হক, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, চিফ হুইপ এ.এস.এম. ফিরোজ, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী  দীপু মনি, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী  আব্দুর রাজ্জাক, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর, তিন বাহিনীর প্রধানগণ এবং ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
 
শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি হয়েছে। অন্যদেরও বিচার প্রক্রিয়া চলছে। তাইতো এবার শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে শহীদদের স্মরণ করতে আসা সাধারণ মানুষ স্বপ্ন দেখছেন যুদ্ধাপরাধীমুক্ত একটি আধুনিক সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। রায়েরবাজার বধ্যভূমি ও মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে আসা সব বয়সী শ্রেণি পেশার মানুষের কণ্ঠে ছিল এমনই সুর। আজ দিনভর আবাল-বৃদ্ধ-বনিতাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লাখো মানুষ জড়ো হয়েছিল মিরপুর আর রায়েরবাজার স্মৃতিসৌধে। তাদের হাতে ছিল ফুল, কণ্ঠে ছিল সব যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকরের দাবি। নতুন প্রজন্মসহ দেশমাতৃকার সেই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের অমর স্মৃতির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে আসা লাখো শোকার্ত মানুষের কণ্ঠে ছিল অভিন্ন আওয়াজ-‘সব যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি কার্যকরের মাধ্যমে রাজাকার মুক্ত বাংলাদেশ চাই।’
 
মানুষের বিনম্র শ্রদ্ধায় ফুলে ফুলে ভরে উঠেছিল মিরপুর ও রায়েরবাজার শহীদ বৃদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ। শোকার্ত মানুষ মিরপুর এবং রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুলে ফুলে নিবেদন করেছেন তাদের প্রাণের অর্ঘ্য। এ দুটি স্থানে একটি বা দু’টি ব্যানার নয়, পাক হানাদার ও তাদের এ দেশীয় দোসর হায়েনাদের দেশমাতৃকার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নৃশংসভাবে হত্যার পর বধ্যভূমিতে ফেলে রাখার অসংখ্য নিষ্ঠুর ও ভয়াবহ আলোকচিত্র শ্রদ্ধা জানাতে আসা হাজারও বাঙালিকে শিহরিত করে তুলেছিল। বুদ্ধিজীবি হত্যায় জড়িত আল বদরনেতাসহ কয়েকজন যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকর হওয়ায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ গড়ার পথ আরো মসৃন হওয়ার আশা বুকে ধারণ করেছেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা।
 
সকালে কলো পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা, শহীদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বলন, শোক শোভাযাত্রা, শ্রদ্ধা নিবেদন, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে পালন করা হয়। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধা জানাতে সকালে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নেমেছিল। ভোরের সূর্য ওঠার আগেই হাজারো মানুষ ভিড় করে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের সামনে।
 
বিশেষ করে স্থানীয় সংসদ সদস্য আসলামুল হক আসলাম ও দারুস সালাম থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ফরিদুল হক হ্যাপীর নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় সবার হাতে ছিল ফুলের তোড়া, কালো ব্যানারে আর শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে লেখা ‘বুদ্ধিজীবীর স্মরণে ভয় করি না মরণে’ বুদ্ধিজীবীদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’ ‘জামায়াত, শিবির, রাজাকার এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়’। আর কণ্ঠে একাত্তরের ঘাতক রাজাকার, আলবদর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে স্লোগান; দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে স্মৃতিস্তম্ভের বেদীমূলে যাওয়ার অপেক্ষা। শ্রদ্ধা নিবেদনের সময়ে সবার দাবি ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দ্রুত শেষ, জাতি আর এ কলঙ্ক বহন করতে চায় না।
 
ঘড়ির কাঁটা তখন ঠিক ৭টা। শীত তেমন একটা নেই বললেই চলে। কিন্তু কুয়াশার চাদর পুরো মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ ঘিরে রেখেছিল। স্মৃতিসৌধের প্রবেশমুখ থেকে বেশ দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন ৯০ বছরের বৃদ্ধা ফিরোজা বেগম ও ৮৯ বছরের বৃদ্ধা জমিলা খাতুন। গায়ে সাদা চাদর, পরনে সাদা শাড়ি। প্রায় দুই ঘণ্টা অপেক্ষার পর স্মৃতিসৌধের বেদিতে গিয়ে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তারা।  দুজনই স্বামী হারিয়েছেন ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে। ওই রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে প্রাণ হারানো শহীদদের ২৯টি পরিবারের সদস্যরা গতকাল এখানে শ্রদ্ধা জানান।
 
অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে ফিরোজা বেগম বলেন, প্রতিবছরই আসি। সারা জীবন কষ্ট করলাম।  শেষ বারের মতো স্বামীর মুখটাও দেখতে পাইনি। এখানে আসি সান্ত্বনা পাওয়ার জন্য। প্রতিবছরই আসি গ্রামের বাড়ি থেকে।’ তাঁর ছেলে শাহজালাল বলেন, ‘আমার বাবার মৃত্যুর পর আমার মা-ই আমাদের সব ভাইবোনকে মানুষ করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদের তালিকায় বাবার নাম থাকলেও সরকারিভাবে কোনো স্বীকৃতি মেলেনি। আমরাও কোনো সহায়তা পাইনি।’ শাহজালাল বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মচারী হিসেবে কাজ করছেন। কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে এসেছেন জমিলা খাতুন। তাঁর সঙ্গে থাকা ছেলে মিন্নত আলী বলেন, তাঁর বাবা শহীদ হাফিজউদ্দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রহরী ছিলেন। তিনি একমাত্র সন্তান। এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী হিসেবে কাজ করছেন। বললেন, ‘বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকা অবস্থায় দুই হাজার টাকা সাহায্য দিয়েছিলেন। আর কখনো কিছু পাননি। বাবার নামটাও তালিকাভুক্ত হয়নি। প্রধানমন্ত্রী ও উচ্চপর্যায়ের লোকজনের সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করেছি, সুযোগ পাইনি।’ শ্রদ্ধা জানাতে আসা সুমাইয়া জাহান নামের এক কলেজ শিক্ষার্থী বলেন, ‘বুদ্ধিজীবীদের সেদিন হত্যা করা না হলে আমরা আজ আরও শক্তিশালী জাতি হতে পারতাম। আমরা তাদের ভুলব না।’
 
রাষ্ট্রপতির শ্রদ্ধা নিবেদন শেষ হলে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক সংগঠন ও সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের বেদী উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। এ সময় বিভিন্ন সংগঠন সারিবদ্ধভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদনকালে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী অ ক ম মোজাম্মেল হক, নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, পাট ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম প্রমুখ। পরে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুব মহিলা লীগ ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
 
নেতাকর্মীদের নিয়ে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে খালেদা জিয়ার শ্রদ্ধা
বেলা পৌনে ১১টার দিকে দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন বিএনপি  চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীরউত্তম, শামসুজ্জামান দুদু, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
 
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে জনতার ঢল
এদিকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শ্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীরা। শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে জনতার ঢল নামে।
 
রায়ের বাজারেও শোকার্ত মানুষের ঢল
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আজ সকাল সাড়ে সাতটা থেকে বধ্যভূমিতে নামে জনতার ঢল। কুয়াশার চাদরে মোড়ানো শীতের সকালে সূর্য ওঠার আগেই রায়েরবাজার ও মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের দীর্ঘ লাইন। দিনের আলোর উজ্জলতা যতই বাড়তে থাকে জনতার সারিও তত দীর্ঘ। সব বয়সী সব শ্রেণী পেশার মানুষ ফুল হাতে শ্রদ্ধাবনত চিত্তে স্মরণ করে শহীদদের। তারা বলেন, দীর্ঘদিন রাজনৈতিক রাষ্ট্রীয় বাধা ছিল। এখন সে বাধা দূর হয়েছে। অনেকে বলেন, দেশের প্রতি ত্যাগের মাধ্যমেই বড় হওয়া যায়, এটাই তারা শিখিয়ে গেছেন। বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুল দিতে এসে শহীদ পরিবারের সন্তানরা বলেন, এবার আর আক্ষেপ নয়, পেছনে তাকানো নয়, এখন সময় সামনে এগিয়ে যাওয়ার। যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি কার্যকরের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ যে পথে হাটছে সময়ের ব্যবধানে বিশ্বের বুকে মাথা উচু করে দাড়াবে বাংলাদেশ এমন স্বপ্ন দেখছেন তারা। শহীদ পরিবারের সন্তানেরা আরো বলেন, অনেক অগ্রগতি হয়েছে। বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধীর বিচার প্রক্রিয়া চলাতে তারা আশাবাদী বলে জানান তারা।
 
নতুন প্রজন্মকে শহীদের আত্মত্যাগের কথা জানাতে সন্তানদের নিয়ে এসেছিলেন অনেক অভিভাবকও। বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীদের সংগঠন জামায়াতের আর্থিক উৎস বন্ধসহ রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি জানান শহীদ পরিবারের সন্তানরা। স্মৃতিসৌধের পাশেই প্রতীকীভাবে সেই দিনের হত্যাকান্ডের ভয়াবহতার চিত্র তুলে ধরা হয় নতুন প্রজন্মের কাছে। কেবল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নয় জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার মধ্য দিয়ে একাত্তরের শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে বলে মনে করেন তারা। জঙ্গিবাদের সকল আর্থিক উৎস বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদ পরিবারের সন্তানরা।
 
শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. আলীম চৌধুরীর মেয়ে ডা. নুজহাত চৌধুরী বলেন, ‌‌‘আজ আমরা আপ্লুত ও গর্বিত বোধ করছি। এখানে ভাবগম্ভীর পরিবেশে আমরা শ্রদ্ধা নিবেদন করি। স্মৃতিসৌধের পবিত্রতা বজায় রাখা দরকার।’ শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, ‘১৯৭১ সালে যে চেতনা ধারণ করে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম, তা আজও বাস্তবায়িত হয়নি। জনগণের আত্মমুক্তির আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।’ এই উপস্থিতিই িনিশ্চিত করে এই দল কত শক্শিালী দক্ষিনাছল্ ে