আয়না২৪ প্রতিবেদন
সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর চলা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনকে গণহত্যার শামিল বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটেনের রাষ্ট্রদূত অ্যালিসন ব্লেক। বৃহস্পতিবার সকালে ব্রিটেনের রাষ্ট্রদূত অ্যালিসন ব্লেক, কানাডার রাষ্ট্রদূত বিনো পিয়েরে লারামি এবং অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রদূত মিজ জুলিয়া নিবলেট রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে এ মন্তব্য করেন অ্যালিসন ব্লেক।
পরে স্থানীয় সাংবাদিকদের হাইকমিশনাররা বলেন, ‘রোহিঙ্গা নির্যাতনের যে বর্ণনা শোনা গেল, তা অত্যন্ত নির্মম। রোহিঙ্গাদের সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা আরও জোরালো করতে হবে।’
হাইকমিশনাররা সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে দেখেন। এ সময় পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা তাদের কাছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অকথ্য নির্যাতনের কথা বর্ণনা করেন।
পরে ক্যাম্প ইনচার্জের কার্যালয়ে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা-এনজিও, সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিন হাইকমিশনার।
ক্যাম্প ইনচার্জ শামশুদ্দোজা জানান, ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চান হাইকমিশনাররা। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনাররা নির্যাতিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করেন। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা আরও জোরালো করা প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তারা।
সকাল ১০টার দিকে কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গিয়ে হাইকমিশনাররা প্রথমে একটি বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন। পরে তারা অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নতুন আসা ৩০ নারী-পুরুষের সঙ্গে আলাপ করেন এবং তাদের ওপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের তথ্য নেন। এরপর নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন এ তিন কূটনৈতিক।
এ সময় যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার অ্যালিসন ব্লেক বলেন, ‘কুতুপালং ক্যাম্প পরিদর্শন করে সেখানে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বসবাস দেখেছি। পালিয়ে আসা মানুষ তাদের সম্প্রদায়ের ওপর সংঘটিত নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়েছেন।’
এ হত্যাকাণ্ডকে তিনি গণহত্যার শামিল বলে মন্তব্য করেন।
অ্যালিসন ব্লেক বলেন, ‘যুক্তরাজ্য সরকার রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরার ব্যবস্থা করতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।’
কানাডার হাইকমিশনার বিনো পিয়েরে লারামি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে ভালো কাজ করেছে। মানবাধিকার রক্ষায় এ সরকারের উদ্যোগ প্রশংসিত। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার রক্ষায় এখন সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।’
অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার জুলিয়া নিবলেট বলেন, ‘রোহিঙ্গারা যেন নিজের দেশে ফিরতে পারেন, নির্যাতনের শিকার না হন সেজন্য আন্তর্জাতিকভাবে আরও জোরালো উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।’
কুতুপালং ক্যাম্প পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম বলেন, ‘রাষ্ট্রদূতরা নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্যানিটেশন, সুপেয় পানি সরবরাহ, শিক্ষা-স্বাস্থ্য সহ ক্যাম্পে উন্নয়নমূলক কাজে রোহিঙ্গাদের সম্পৃক্ততা প্রত্যক্ষ করেছেন। এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উখিয়া সার্কেল) চাইলা প্রু মারমা, ক্যাম্প ইনচার্জ মো. শামসুদ্দোজা উপস্থিত ছিলেন।’ –