আয়না২৪ প্রতিবেদন
সারা দেশের সড়ক পরিবহন সেক্টরে চরম বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে উল্লেখ করে বিশিষ্ট লেখক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেছেন, ক্ষমতাসীন দলের অনেক নেতাসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকার কারণেই আজ এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। রাজধানী ঢাকায় গণপরিবহনে যে নৈরাজ্য চলছে, তা ঠেকাতে প্রশাসন কার্যত ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রযন্ত্রের পৃষ্ঠপোষকতায় এক শ্রেণির মালিক ও শ্রমিক সড়ক পরিবহন খাতকে জিম্মি করে রেখেছে, তারা রাজধানীতে সিটিং, গেটলক, সময় নিয়ন্ত্রণ- ইত্যাদি নামে নগরবাসীর কাছ থেকে মাত্রাতিরিক্ত বাসভাড়া আদায় করছে। অথচ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সড়কপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এই ভাড়া-সন্ত্রাস ঠেকাতে পারছে না।
আজ শনিবার সকালে রাজধানীর পুরানা পল্টনে মুক্তি ভবনে ‘যাত্রীবান্ধব গণপরিবহন সংকট ও ভাড়া-সন্ত্রাস রোধে উদ্বিগ্ন নাগরিকদের মতবিনিময় সভা’য় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সৈয়দ আবুল মকসুদ এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ যাত্রী অধিকার পরিষদ ও সিটিজেন্স রাইট্স মুভমেন্ট যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সিটিজেন্স রাইট্স মুভমেন্টের সভাপতি মেজর (অব.) মো. মফিজুল হক সরকারের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় সড়ক পরিবহন সেক্টরের নৈরাজ্য প্রতিরোধে ২১ দফা সুপারিশ তুলে ধরেন যাত্রী অধিকার পরিষদের সভাপতি তুসার রেহমান। নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আলোচনা করেন সাবেক সাংসদ এডভোকেট তাসনীম রানা, সিটিজেন্স রাইট্স মুভমেন্টের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মো. এনায়েতুর রহিম, উন্নয়ন ধারা ট্রাস্টের সদস্যসচিব আমিনুর রসুল বাবুল, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, জাতীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সঞ্জিব বিশ্বাস, নদী রক্ষা শপথের আহ্বায়ক জসি সিকদার প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন যাত্রী অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শ্রমিক নেতা সেকেন্দার হায়াৎ।
মফিজুল হক সরকার বলেন, বর্তমান সরকার নানামুখী উন্নয়ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে সেগুলো বাস্তবায়ন করছে। এসবের মধ্যে পরিবহন সেক্টরও রয়েছে। কিন্তু গুটিকয়েক রাজনীতিক, এক শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তা এবং কিছুসংখ্যক মালিক ও শ্রমিক নেতার কারণে গণপরিবহন সেক্টরে প্রতাশিত সাফল্য আসেনি, বরং জনভোগান্তি বেড়েছে। এর বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণকেই সোচ্চার হতে হবে।
তাসনীম রানা বলেন, সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা সম্পর্কে মন্ত্রী-এমপিদের অতীত নিয়ে ঘাটাঘাটি না করে বর্তমান অবস্থাকেই গুরুত্ব দেয়া উচিত। তিনিজনভোগান্তি লাঘবে যাত্রীবান্ধব পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার দাবি জানান।
তুষার রেহমান তাঁর লিখিত প্রবন্ধে বিআরটিএ পুনর্গঠনসহ ২১ দফা সুপারিশ তুলে ধরেন। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- রাজধানীতে গণপরিবহনস্বল্পতা দূরীকরণেসরকারি সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশনকে (বিআরটিসি) শক্তিশালী করা, বাস টার্মিনালগুলোতে চাঁদাবাজি বন্ধ, ঢাকার যানজাট নিরসনে প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ, ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধ, যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়ায় আদায় বন্ধে রাজধানীতে চলাচলরত সিটিং, গেটলকের মতো প্রতারণামূলক বাস সার্ভিসগুওেলার মালিকদের বিরুদ্ধে শাস্তি নিশ্চিতকরণ ইত্যাদি।