আয়না২৪ প্রতিবেদন
আগামী বছর থেকে রাজধানীতে আর জলাবদ্ধতা থাকবে না বলেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
এমন আশ্বাসের পরদিন মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, তিনি না বুঝে এই কথা বলেননি। তিনি একজন প্রকৌশলী এবং তিনি এই সমস্যার সমাধান জানেন, বোঝেন। এ নিয়ে একটি পরিকল্পনাও করা আছে। এটি পাস হয়ে গেলেই কাজ শুরু হবে। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ‘পানি সম্মেলন-২০১৭’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বুধবার রাজধানীর জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগ ছিল চরমে। নগরীর একটি বড় অংশেই মূল সড়ক, অলি গলি, আবাসিক ও বাণিজ্যিক এলাকা ছিল পানির নিচে। আগের রাত থেকে টানা ভারী বৃষ্টিতে এই পরিস্থিতির তৈরি হয়। আর এই পরিস্থিতিতে বিকালে সচিবালয়ে এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, ‘প্রমিজ করছি, সামনের বছর ঢাকায় জলাবদ্ধতা থাকবে না।’
বৃহস্পতিবারও একই সুরে কথা বলেন মন্ত্রী মোশাররফ। কীভাবে এত আত্মবিশ্বাসী হচ্ছেন-জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গতকাল আমি বলেছি আগামী বছর আর জলাবদ্ধতা থাকবে না। সেটিকে অনেকে ভিন্নভাবে নিচ্ছে। কিন্তু আমি একজন প্রকৌশলীও। সেজন্যই আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এই কথা বলছি। আমি না বুঝে বলিনি। আমাদের প্রস্তুতি আছে।’
রাজধানীতে জলাবদ্ধতা নিরসনে যে কয়টি সংস্থা কাজ করে তার প্রতিটিই স্থানীয় সরকারের অধীনে। কীভাবে এই সমস্যার সমাধান করবেন- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে পরিকল্পনা কমিশনে আমাদের প্রস্তাবনা আছে। আশা করছি এটি খুব শিগগিরই পাস হয়ে আসবে। তারাও ঢাকার দুরাবস্থা গতকাল দেখেছে। এটি হলে আর সমস্যা থাকবে না।’
মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত রাজধানীতে যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে, সেটি সাম্প্রতিককালের সব রেকর্ড ভেঙে গিয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হলে তা সিটি করপোরেশনের আয়ত্বের মধ্যে থাকে। এর বেশি হলে তা সিটির সক্ষমতার বাইরে চলে যায়।’ তিনি বলেন, ‘এই সিজনে যেমন বৃষ্টিপাত হয় সেইরকম নরমাল কনডিশন হলে এমন পরিস্থিতি হতো না। গতকাল যা ঘটছে সেটা একটা নাইটমেয়ার। এর পুনরাবৃত্তি আমরা আর হতে দেবো না।’
মন্ত্রী বলেন, ‘ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি হলে তিন ঘণ্টার মধ্যে পানি সরে যাবে। সেই প্রস্তুতি আমাদের আছে।’
এ সময় পানিসম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘গতকাল যে বৃষ্টি হয়েছে সেটি রেকর্ড। আমি এর আগেও মন্ত্রী ছিলাম। কিন্তু সচিবালয়ে কখনও পানি ঢুকতে দেখিনি। গতকাল সচিবালয়ে পানি ঢুকেছে। সুতরাং গতকালের পরিস্থিতি সম্পর্কে কারোই প্রস্তুতি ছিল না। থাকার কথাও না।’
‘তবে সিটি করপোরেশন এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের যথেষ্ট ভাল প্রস্তুতি এবার ছিল। সেকারণেই গতকালের প্রবল বর্ষণের পরও তিন ঘণ্টায় পানি সরে গেছে। সিটির ড্রেনেজ ব্যবস্থাও সচল ছিল। তা নাহলে এতো তাড়াতাড়ি পানি নিষ্কাশন হতো না ‘
জলাবদ্ধতা নিরসনে নগরবাসীর সচেতনতার ওপরও জোর দেন মন্ত্রী। বলেন, ‘আমরা যেহারে পলিথিন এবং ময়লা ড্রেনে ফেলি এতে ড্রেন ব্লকেজ হয়ে যায়। এ থেকে উত্তরণে জনসচেতনাও বড় ভূমিকা পালন করতে পারে।’