আয়না২৪ প্রতিবেদন
মানহানির মামলায় বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার সাবেক ও বর্তমানে বরগুনা সদরের ইউএনও তারিক সালমনের জামিন নামঞ্জুরের কোন আদেশ ওইদিন দেওয়া হয়নি বলে সুপ্রিম কোর্টে পাঠানো ব্যাখ্যায় বলেছেন বরিশাল মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) মোহাম্মদ আলী হোসাইন।
ব্যাখ্যায় সিএমএম বলেন, আদালতের কার্যপ্রণালী শেষে এজলাস ত্যাগ করে খাসকামরায় এসে শুনি ইউএনওর জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে মর্মে অনলাইন মিডিয়ায় সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে তার জামিন আবেদন একটি বারের জন্যও নামঞ্জুর করা হয়নি। ফলে জেল হাজতে পাঠানোর কোন প্রশ্নই উঠে না। ব্যাখ্যায় বলা হয়, ইউএনওর পক্ষে নথি দাখিল হলে এবং উত্তেজনার পরিস্থিতির অবসান হলে জামিনের আবেদন এবং ফৌজদারি কার্যবিধির ২০৫ ধারার আবেদন আইনানুগ প্রক্রিয়া পালনপূর্বক মঞ্জুর ক্রমে জামিন প্রদান করা হয়। ইউএনওর আদালত কক্ষ ত্যাগের পরে তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা যাতে বিঘ্নিত না হয় এবং অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি পরিহারের জন্যই আমি তৎক্ষণাৎ জামিনের দরখাস্তের আদেশ না দিয়ে নথি দাখিল হলে শুনানি শেষে আদেশ দেয়া হবে বলে উদ্ভূত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেছি।
স্বাধীনতা দিবসের আমন্ত্রণপত্রে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতির অভিযোগে ইউএনও তারিক সালমনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৫০১ ধারায় মানহানির মামলা করেন বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ওবায়দ উল্লাহ সাজু। ওই মামলা আমলে নিয়ে গত ৭ জুলাই অতিরিক্ত সিএমএম অমিত কুমার দে ইউএনওর বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। সমন পেয়ে গত ১৯ জুলাই সিএমএমের আদালতে ওকালতনামা দাখিল করে জামিন চান ইউএনও। কিন্তু বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় যে ইউএনওর জামিন নামঞ্জুর এবং পরে জামিন মঞ্জুরের ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে সিএমএমের কাছে ব্যাখ্যা চায় সুপ্রিম কোর্ট। রোববার সকালে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে লিখিত ব্যাখ্যা পাঠান বিচারক মোহাম্মদ আলী হোসাইন।
ব্যাখ্যায় বলা হয়, সিআর-৪২৭/১৭ (কোতোয়ালি) মামলাটি শুনানি চলাকালে উৎসুক জনসাধারণের রোষানল হতে ইউএনওর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য শুনানি মুলতুবি করা হয়। ইউএনওর আইনজীবী মোখলেছুর রহমানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কাগজাত (নথি) দাখিল করতে বলি এবং মৌখিক আদেশ দেয়া হয় যে, নথি দাখিলের পরে পুনরায় শুনানি হবে। আমি তখন ইউএনওকে আদালত কক্ষে বসাতে বলি। আদালতে কর্তব্য পালনরত পুলিশ সদস্যগণ ইউএনওর সার্বিক ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিতে সাধ্যমত চেষ্টা করেন।
ইউএনওকে আদালতের কাঠগড়া হতে পরিপূর্ণ নিরাপত্তা দিয়ে আদালতের কক্ষে বসানোর জন্য আদালত কক্ষের এক দরজা দিয়ে বাহির হয়ে বারান্দা ব্যবহার করে অন্য দরজা দিয়ে আদালত কক্ষে আনতে হয়েছে। এই সময়ে মিডিয়ার কর্মীবৃন্দ বা অন্য কেহ কোন ছবি তুলেছেন কিনা তা অবলোকন করা আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি। এই সময়ে কি সংবাদ প্রচার করা হয়েছে তাও আমি বিচারকার্য পরিচালনাধীন থাকায় তা জানতে পারিনি।