আয়না২৪ ডেস্ক
ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস তিন দিনের সরকারি সফরে আগামীকাল ঢাকা আসছেন। প্রেসিডেন্ট মো. আবদুুল হামিদের আমন্ত্রণে বুধবার বিকেলে একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছাবেন তিনি। ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. রিয়াদ আল মালকী, প্রধান বিচারপতি মাহমুদ আলহাব্বাশ, প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র নাবিল আবুরুদাইনাহ, কূটনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মাজদি খালদিসহ উর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ মাহমুদ আব্বাসের প্রতিনিধিদলে অন্তর্ভুক্ত থাকছেন।
গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সফরের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়- সফরকালে মাহমুদ আব্বাস প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন এবং তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হবেন। সকল বৈঠকে মাহমুদ আব্বাস দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে বাংলাদেশের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। এ সময়ে দু’দেশের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে যৌথ কমিশন গঠন সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়াও, দু’দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রীদ্বয় সৌজন্য বৈঠকে মিলিত হয়ে দু’দেশের প্রাধিকারপ্রাপ্ত ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মতবিনিময় করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ঢাকা সফরের শুরুতেই ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। তিনি ধানমন্ডি ৩২ নম্ব্বর সড়কে অবস্থিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করবেন। এছাড়া মাহমুদ আব্বাস তাঁর সম্মানে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ আয়োজিত স্টেট ব্যাঙ্কুয়েট বা ভোজসভায় অংশ নেবেন। বাংলাদেশে তিনদিনের সরকারি সফর শেষে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট আগামী ৩রা ফেব্রুয়ারি অপরাহ্নে ঢাকা ছেড়ে যাবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস একাধিকবার ঢাকায় যাত্রা বিরতি করলেও বাংলাদেশে এটাই হতে যাচ্ছে তার প্রথম আনুষ্ঠানিক সফর। গত সপ্তাহে পররাষ্ট্র দপ্তরের রাষ্ট্রাচার প্রধানের সঙ্গে প্রেসিডেন্টের সফর প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠক করেন ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিস্তিনের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ইউসেফ রামাদান। সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের রাষ্ট্রদূত জানান, প্রেসিডেন্টের সফরে অন্তত দু’টি চুক্তির বিষয়ে আলোচনা চলছে। মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক ছাড়াও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে যাবেন। সেগুনবাগিচার কর্মকর্তারা জানিয়েছে, ফিলিস্তিন স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে সব সময় ছিল বাংলাদেশ, এছাড়া দেশটির রাজধানী জেরুজালেমে স্থাপনের পক্ষেও বাংলাদেশের অবস্থান। ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট এমন এক সময়ে বাংলাদেশ সফরে আসছেন, যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ইসরাইলকে জোরালো সমর্থন দিচ্ছে। বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রশাসনেরও ইসরাইলের প্রতি সমর্থন ছিল। কিন্তু শেষ সময়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ফিলিস্তিনে ইসরাইলের অবৈধ বসতি স্থাপনের নিন্দা প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র বা ওবামা ভেটো দেয়নি। হোয়াইট হাউস থেকে জানানো হয়েছে, ইসরাইলের তেল আবিবে থাকা মার্কিন দূতাবাস সরিয়ে জেরুজালেমে নেয়ার বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অঙ্গীকারের বিষয়ে আলোচনা ‘শুরু’ হয়েছে।
সেগুনবাগিচা সূত্র জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের ঢাকা সফরে এসব বিষয় আলোচনায় আসতে পারে। এছাড়া মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি নিয়েও বাংলাদেশের নেতৃত্বের সঙ্গে তার আলোচনা হতে পারে। প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) প্রধান হিসাবে ইয়াসির আরাফাত কয়েকবার বাংলাদেশ সফর করেছিলেন।