আয়না ২৪ প্রতিনিধি
ঠিক মানের ওষুধ উৎপাদনে ব্যর্থ। সেই কারণে বাংলাদেশর ২০টি ওষুধ কোম্পানির লাইসেন্স বাতিল করল হাইকোর্ট। পাশাপাশি ১৪টি কোম্পানির ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক তৈরিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সোমবার বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগির হোসেন এবং বিচারপতি আতাউর রহমান খানের বেঞ্চ এই রায় শোনায়। একটি মানবাধিকার সংগঠনের করা আপিলের প্রেক্ষিতে ওই রায় শুনিয়েছেন বিচারপতিরা।
রায়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ওই সব কোম্পানি গোপনে ওষুধ তৈরি বা বিক্রি করছে কি না সরকারকে প্রতি চার মাস অন্তর আদালতে তার রিপোর্ট জমা দিতে হবে। পাশাপাশি কোম্পানিগুলোর সর্বশেষ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেও জানাতে হবে আদালতকে। আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘সোমবারের এই রায়ে উল্লেখিত ৩৪টি কোম্পানির মধ্যে সাত-আটটি কোম্পানির লাইসেন্স ইতিমধ্যেই বাতিল করেছে সরকার।’’ তিনি আরও জানান, যাদের লাইসেন্স বাতিল হয়নি সেই সব কোম্পানি ড্রাগ ম্যানুফ্যাকচারার্স প্রাকটিস নীতিমালা মেনে আবার উৎপাদনে ফিরতে চাইলে তা বিবেচনা করার জন্য পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছে আদালত।
যে ২০টি কোম্পানির লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে— মেডিকো ফার্মাসিউটিক্যাল, ন্যাশনাল ড্রাগ, নর্থ বেঙ্গল ফার্মাসিউটিক্যাল, রিমো কেমিক্যাল, রিড ফার্মাসিউটিক্যাল, স্কাইল্যাব ফার্মাসিউটিক্যাল, স্পার্ক ফার্মাসিউটিক্যাল, এক্সিম ফার্মাসিউটিক্যাল, এভার্ট ফার্মা, বিকল্প ফার্মাসিউটিক্যাল, ডলফিন ফার্মাসিউটিক্যাল, ড্রাগল্যান্ড, গ্লোব ল্যাবরেটরিজ, জলপা ল্যাবরেটরিজ, কাফমা ফার্মাসিউটিক্যাল, টুডে ফার্মাসিউটিক্যাল, ট্রপিক্যাল ফার্মাসিউটিক্যাল, ইউনিভার্সেল ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড, স্টার ফার্মাসিউটিক্যাল এবং সুনিপুণ ফার্মাসিউটিক্যাল।
অ্যান্টিবায়োটিক উৎপাদনে নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়া ১৪টি কোম্পানি হল— আদ-দ্বীন ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড, আলকাদ ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড, বেলসেন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, বেঙ্গল ড্রাগস অ্যান্ড কেমিক্যালস (ফার্মা) লিমিটেড, ব্রিস্টল ফার্মা লিমিটেড, ক্রিস্টাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, মিল্লাত ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, এমএসটি ফার্মা অ্যান্ড হেলথকেয়ার লিমিটেড, অরবিট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ফার্মিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড, ফিনিক্স কেমিকেল ল্যাবরেটরি লিমিটেড, রাসা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড এবং সেভ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৬-র ৫ জুন একটি মানবাধিকার সংগঠন ওই সব ওষুধ কোম্পানির লাইসেন্স বাতিলের নির্দেশ চেয়ে হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের করে। সেখানে বলা হয়, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো চিহ্নিত করতে ২০১৪-র ২০ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রক সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি পাঁচ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি দেশের ৮৪টি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সরেজমিনে দেখে যে প্রতিবেদন দাখিল করে, আদালতেও তা-ও জমা দেয়া হয়।