• Home  / 
  • জাতীয়  / 

‘তিনি কীভাবে বললেন বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নেই’- প্রধানমন্ত্রী

Spread the love

সংসদের পঞ্চদশ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা? আমি জানি না আমাদের চিফ জাস্টিস (প্রধান বিচারপতি) কীভাবে বললেন, আইনের শাসন নেই। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নেই?’

আজ সোমবার সন্ধ্যায় দেওয়া বক্তব্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চলমান মামলার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিচার বিভাগ যে স্বাধীন, মাননীয় স্পিকার, আমি একটু আগে বললাম একজন নেত্রীর বিরুদ্ধে মামলায় ১৪০ দিন সময় চায় আর সেটা দেওয়া হয়, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা আছে বলেই তো এই সময়টা দিতে পারছে। না হলে তো দিতে পারত না। আমাদের কোনো মানসিকতা থাকলে নিশ্চয় দিতে পারত না। আমরা তো সেটা করিনি। ইচ্ছামতো সময় দিয়ে গেছেন, দিয়েই যাচ্ছেন।’

বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কথায় কথায় রিট। একই মামলায় যদি ৪০-৫০ বার রিট হয় আর যদি সেই রিট নিষ্পন্ন হয় তাহলে স্বাধীনতা নেই কীভাবে? এই একটাই দৃষ্টান্ত যথেষ্ট। যাঁরা এর সুযোগ নিচ্ছেন তাঁরাও একসঙ্গে তাল মেলাচ্ছেন আইনের শাসন নেই।’

বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলার হাজিরা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এতিমের টাকা মেরে দেওয়া হয়েছে। সে জন্য মামলা হয়েছে। এখন সেই মামলায় কোর্টে যাওয়াই প্রায় বন্ধ করে দিয়েছেন। সাহস থাকলে মামলা মোকাবিলা করতে ভয় কিসের?

সংসদ নেতা বলেন, জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ বিশ্বব্যাপী সমস্যা। বাংলাদেশ সরকার এটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে। গোয়েন্দা সংস্থা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা তারা যথেষ্ট তৎপর। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া থেকে শুরু করে সব ব্যাপারে তারা মানুষের নিরাপত্তা দেয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আইনের শাসন আছে বলেই সেটা সম্ভব, নইলে সম্ভব নয়। এখন যদি জঙ্গিদের ধরা হয়, সেখানে কেউ মারা যায়, সেটা মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়। এই একটা মানুষের জন্য হয়তো শত শত মানুষকে মৃত্যুবরণ করতে হতো কিংবা পঙ্গুত্ব বরণ করতে হতো। তাদের সম্পদের ক্ষতি হতো। তাদের ধরলেই বা তারা নিজেরাই সুইসাইড করে বোমা ফেললেই…মরলেই আমাদের বিএনপির নেত্রীরও প্রাণ কাঁদে, অন্যদেরও প্রাণ কাঁদে। কেন? যোগসূত্রটা কী? গোপন যোগাযোগ আছে কি না?’

বাংলাদেশে বাকস্বাধীনতা নেই বলে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদন নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ‘দেখলাম অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে দেশে বাকস্বাধীনতা নেই। যারা এই রিপোর্ট করছে তাদের বলব, টেলিভিশনগুলোতে বসে বসে দিনরাত আমাদের বিরুদ্ধে সমানে কথা বলা হচ্ছে। টক শো, আলোচনা…একেবারে স্বাধীনভাবে। সরাসরি কথা বলা হচ্ছে। কই কেউ কি গিয়ে গলা টিপে ধরে। কেউ তো তা করে না। সংবাদপত্র লিখেই যাচ্ছে। হ্যাঁ, কেউ যদি হলুদ সাংবাদিকতা করে, মিথ্যা-অসত্য তথ্য দেয়। কারও যদি চরিত্র হনন করে তারও অধিকার আছে যে এখান থেকে কীভাবে সে প্রোটেকশন পাবে। সেটার অধিকার সবাই পাবে। স্বাধীনতা নেই, এটা যারা বলে, এই লোকগুলো একসময় মনে করত একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি হলে তাদের মূল্য বাড়ে। তারা কিছু হতে পারে। তাদের সাধ আছে ক্ষমতায় আসার। জনগণের কাছে ভোট চাওয়ার সাধ্য নেই। অনেকে চেষ্টাও করেছেন। মানুষের কাছ থেকে সাড়া পাননি। এরাই নানা কথা বলে বেড়ায়। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের বদনাম করাই তাদের চরিত্র। মনে হচ্ছে বদনাম করতে পারলেই কেউ নাগরদোলায় করে বসিয়ে দেবে ক্ষমতায়। সেই আশায় তারা থাকুক, সে আশার গুড়ে বালি। যাঁরা আমাদের বিরুদ্ধে বদনাম করেন, ইমার্জেন্সি সরকারের সময় বাকবাকুম বাকবাকুম করতে থাকেন। কে তাঁদের ছিটায়ে দেবে, ওটা খাবে সেই আশায়। এটা তাদের চরিত্র।’

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে সম্পূর্ণভাবে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা আছে, সাংবাদিকতার স্বাধীনতা আছে। সম্প্রচারমাধ্যমের স্বাধীনতা আছে। বাকস্বাধীনতা আছে, ব্যক্তিস্বাধীনতা আছে।