আয়না২৪ প্রতিবেদন
রাজধানীতে অপর্যাপ্ত খালের কারণে ভোগান্তির পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, পুরনো খাল সংরক্ষণের পাশাপাশি নতুন নতুন খাল খনন করা হচ্ছে। শহরে জলাধারগুলো সংরক্ষণেও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
শনিবার রাজধানীতে ২৭টি দেশের অংশগ্রহণে দুই দিনের ‘ঢাকা পানি সম্মেলন’ এর উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা জানান।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী নগরের পানি সরবরাহ ব্যবস্থা আমূল পাল্টে দেয়ার কথাও বলেন। তিনি জানান, চার বছরের মধ্যে মাটির নিচ থেকে পানি তুলে সরবরাহ বন্ধ করা হবে। ভূ উপরিস্থ পানিই ব্যবহার করা হবে শতভাগ।
রাজধানীতে পানি নিষ্কাশনে ২৬টি খাল থাকলেও এর মধ্যে ১৩টির কোনো অস্তিত্বই এখন নেই। সরকারি, বেসরকারি স্থাপনা তৈরি করে খালগুলো পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ফলে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হলেই তৈরি হয় জলজট। সম্প্রতি এই ভোগান্তির পর খালের বিষয়টি আবার সামনে এসেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাজধানী ঢাকায় নতুন খাল খনন করা হচ্ছে এবং পুরাতন খাল সংস্কার ও জলাধার সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শিল্পাঞ্চল, বড় বড় আবাসিক এলাকায় জলাধার তৈরি, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ, দূষিত পানি নিষ্কাশনেও ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘২০২১ সালের মধ্যে সব বিভাগীয় শহরে নিরাপদ পানি ভূ উপরিস্থ পানি থেকে নিশ্চিত করার কার্যক্রম আমরা হাতে নিয়েছি। নাব্যতা হ্রাস প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ নদীতে ড্রেজিং কার্যক্রম চলছে।’
এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে শহরাঞ্চলে সরবরাহ করা পানির বেশিরভাগই মাটির নীচ থেকে তোলা হচ্ছে। এতে পানির স্তর আশঙ্কাজনকভাবে নেমে যাচ্ছে। বৃষ্টির পানিতে এই ক্ষতি কিছুটা পূরণ হলেও বিশেষ করে শহরাঞ্চলে কংক্রিটের কারণে পানির নিচে পানি খুব বেশি যেতে পারে না। ফলে ঢাকায় মাটির নিচে ফাঁপা পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
এই পরিস্থিতিতে মাটির নিচ থেকে পানি তোলা বন্ধে নানা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে সরকার। বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যা নদী শিল্প বর্জ্যে দূষিত হয়ে যাওয়ায় দূষণ দূরীকরণের পাশাপাশি পদ্মা ও যমুনা নদী থেকে পানি এনে তা রাজধানীতে সরবরাহের কাজ এগিয়ে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ভূগর্ভস্থ পানির বদলে ভূ উপরস্থ পানি ব্যবহারের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি।’ পানির প্রাপ্যতা, ব্যবহার ও প্রতিবেশগত বিষয় নিয়ে একশ বছর মেয়াদী ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্লান-২১০০’ গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন শেখ হাসিনা।