তুমুল বৃষ্টি আর আগত হাজারো ভক্তদের চোখের জলে সিক্ত হলেন প্রিয় শিল্পী লাকী আখান্দ। আজ দুপুরে তিনদফা জানাজা, শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন মুক্তিযোদ্ধা, সুরকার, সংগীত পরিচালক লাকী আখান্দ্। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ মাঠে আজ শনিবার বাদ জোহর শিল্পীর দ্বিতীয় জানাজা হয়। এরপর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে হয় তৃতীয় জানাজা। বেলা পৌনে তিনটার দিকে শিল্পীর দাফন সম্পন্ন হয়।
সকাল ১০টার একটু পরে পুরান ঢাকার আরমানিটোলা মসজিদের সামনের মাঠে শিল্পীর প্রথম জানাজা শেষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে লাকী আখান্দের মরদেহ রাখা হয়। সেখানে অশ্রুভেজা হাজারো ভক্ত-বন্ধু ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিশিষ্ট ব্যক্তিরা হৃদয় দিয়ে সশ্রদ্ধ ভালোবাসা জানান প্রিয় শিল্পীকে। শ্রদ্ধা জানাতে আসেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, শিল্পী, সাহিত্যিক, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক দল-সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ।পরে লাকী আখান্দ্কে গার্ড অব অনার দেওয়া হয় তাঁকে।
লাকী আখান্দের জন্ম ১৯৫৫ সালে, পুরান ঢাকায়। মাত্র ১৪ বছর বয়সে এইচএমভি পাকিস্তানের সুরকার এবং ১৬ বছর বয়সে এইচএমভি ভারতের সংগীত পরিচালক হিসেবে নিজের নাম যুক্ত করেন। ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রে যোগ দেন লাকী আখান্দ্। আরেক কিংবদন্তি ছোট ভাই হ্যাপী আখান্দের সঙ্গে তাঁর যুগলবন্দী অনেক বিখ্যাত গানের জন্ম দিয়েছিল। ১৯৮৭ সালে শিল্পী হ্যাপী আখান্দের অকালমৃত্যুর পরপর সংগীতাঙ্গন থেকে অনেকটাই স্বেচ্ছানির্বাসন নেন লাকী। পরে আবার ফিরে আসেন।
ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত এই শিল্পীর চিকিৎসা দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। সম্প্রতি হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় পুরান ঢাকার বাসায়। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি মারা যান। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬১ বছর।