আয়না২৪ প্রতিবেদন
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোরার প্রভাবে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় ঢাকার সদরঘাট থেকে দূরপাল্লার এবং বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার সকল অাভ্যন্তরীণ পথে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। ফলে আজ সোমবার দুপুর আড়াইটার পর সদরঘাট থেকে ৩৭টি পথের লঞ্চ চলাচল চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
একইসঙ্গে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের আভ্যন্তরীণ পথেও লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক জয়নাল আবেদিন বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে উপকূলীয় অঞ্চলে ৭ নম্বর সতর্কসংকেত জারি থাকায় যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ছোট-বড় সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে। তিনি জানান, ঢাকা-ভোলা, ঢাকা-বরিশাল, ঢাকা-পটুয়াখালীসহ সব রুটের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
একইভাবে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের সবগুলো জেলার আভ্যন্তরীণ পথে লঞ্চ ও সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপপরিচালক আজমল হুদা সরকার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে বরিশালের অভ্যন্তরীণ সব রুটের লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং মাঝ নদীতে থাকা লঞ্চগুলোকে বিশেষ সতর্কতার সঙ্গে নিরাপদ স্থানে নোঙর করে রাখতে বলা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এ নির্দেশ বলবৎ থাকবে বলে জানিয়েছে বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে বরিশাল, বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, ভোলা ও পটুয়াখালী জেলার সব পথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। একইসঙ্গে বন্ধ রাখা হয়েছে ফেরি চলাচল্।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি গত মধ্যরাতে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার সকালে এটি চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এ পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ও কক্সবাজার উপকূলকে ৭ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে ও তৎসংলগ্ন এলাকা থেকে কিছুটা উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার ছাড়াও উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং জেলাগুলোর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৭ নম্বর বিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে।
এ ছাড়া মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৫ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং জেলাগুলোর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৫ নম্বর বিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে। ঘূর্ণিঝড় মোরার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং জেলাগুলোর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে চার থেকে পাঁচ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ উপকূল অতিক্রমের সময় কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর এবং জেলাগুলোর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।